Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২৭৬-২২৮৬)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
يَمْحَقُ ٱللَّهُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَيُرْبِى ٱلصَّدَقَـٰتِ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ ٢٧٦
আয়াত-২৭৬: আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে পছন্দ করেন না।
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ٢٧٧
আয়াত-২৭৭: নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, নেক কাজ করেছে, নামজ কায়েম করেছে এবং যাকাত দিয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের নেই কোন ভয় এবং তারা দুঃখিতও হবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَذَرُوا۟ مَا بَقِىَ مِنَ ٱلرِّبَوٰٓا۟ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ٢٧٨
আয়াত-২৭৮: হে মু’মিনগণ! যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা কিছু বকেয়া রয়ে গেছে তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হয়ে থাক।
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ ٢٧٩
আয়াত-২৭৯: তারপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তাহলে আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে তৈরি হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের জন্য তোমাদের মূলধন রয়ে যাবে। তোমরা কাউকে অত্যাচার করবে না আর না কেউ তোমাদের অত্যাচার করবে।
وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍۢ فَنَظِرَةٌ إِلَىٰ مَيْسَرَةٍۢ ۚ وَأَن تَصَدَّقُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ٢٨٠
আয়াত-২৮০: খাতক যদি অভাবগ্রস্ত হয় তবে তার স্বচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেয়া উচিত। আর যদি তোমরা ক্ষমা করে দাও, তা হবে তোমাদের জন্য অতি উত্তম কাজ, যদি তোমরা জানতে।
وَٱتَّقُوا۟ يَوْمًۭا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى ٱللَّهِ ۖ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍۢ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ ٢٨١
আয়াত-২৮১: আর সেদিনকে ভয় কর, যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। তারপর প্রত্যেককেই তার কর্মফল পুরোপুরি দেয়া হবে, আর তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِذَا تَدَايَنتُم بِدَيْنٍ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى فَٱكْتُبُوهُ ۚ وَلْيَكْتُب بَّيْنَكُمْ كَاتِبٌۢ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَلَا يَأْبَ كَاتِبٌ أَن يَكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ ٱللَّهُ ۚ فَلْيَكْتُبْ وَلْيُمْلِلِ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ وَلَا يَبْخَسْ مِنْهُ شَيْـًۭٔا ۚ فَإِن كَانَ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ سَفِيهًا أَوْ ضَعِيفًا أَوْ لَا يَسْتَطِيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَلْيُمْلِلْ وَلِيُّهُۥ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَٱسْتَشْهِدُوا۟ شَهِيدَيْنِ مِن رِّجَالِكُمْ ۖ فَإِن لَّمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌۭ وَٱمْرَأَتَانِ مِمَّن تَرْضَوْنَ مِنَ ٱلشُّهَدَآءِ أَن تَضِلَّ إِحْدَىٰهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَىٰهُمَا ٱلْأُخْرَىٰ ۚ وَلَا يَأْبَ ٱلشُّهَدَآءُ إِذَا مَا دُعُوا۟ ۚ وَلَا تَسْـَٔمُوٓا۟ أَن تَكْتُبُوهُ صَغِيرًا أَوْ كَبِيرًا إِلَىٰٓ أَجَلِهِۦ ۚ ذَٰلِكُمْ أَقْسَطُ عِندَ ٱللَّهِ وَأَقْوَمُ لِلشَّهَـٰدَةِ وَأَدْنَىٰٓ أَلَّا تَرْتَابُوٓا۟ ۖ إِلَّآ أَن تَكُونَ تِجَـٰرَةً حَاضِرَةًۭ تُدِيرُونَهَا بَيْنَكُمْ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَلَّا تَكْتُبُوهَا ۗ وَأَشْهِدُوٓا۟ إِذَا تَبَايَعْتُمْ ۚ وَلَا يُضَآرَّ كَاتِبٌۭ وَلَا شَهِيدٌۭ ۚ وَإِن تَفْعَلُوا۟ فَإِنَّهُۥ فُسُوقٌۢ بِكُمْ ۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۖ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱللَّهُ ۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ٢٨٢
আয়াত-২৮২: হে মু’মিনগণ যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের লেন-দেন কর তখন তা লিখে রেখ। তোমাদের মধ্যে কোন লোক যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেয়। লেখক যেন লিখতে অস্বীকার না করে যেহেতু আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সুতরাং সে যেন লিখে দেয়। আর ঋণগ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয়। এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে ও এতে যেন বিন্দুমাত্র কম না করে। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি নিবোধ হয় কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে তবে যেন তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয়। দু’জন সাক্ষী রাখবে তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে। দু’জন পুরুষ যদি না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা–ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা পছন্দ কর-তাদের একজন ভুল করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেবে। যখন সাক্ষীদের ডাকা হবে তখন যেন তারা অস্বীকার না করে। ঋণ ছোট হোক কিংবা বড় হোক, মেয়াদসহ তা লিখে রাখতে অলসতা করবে না। তোমাদের এ লিখে রাখার কাজ আল্লাহর কাছে ন্যায্যতর এবং সাক্ষ্যের জন্য দৃঢ়তর আর তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার ব্যাপারে নিকটতর। কিন্তু কারবার যদি নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান করা হয়, তবে তা যদি তোমরা না লিখে রাখ তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। যখন তোমরা বেচা-কেনা করবে তখন সাক্ষী রাখবে। কোন লেখক ও সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি তোমরা এরূপ কর তবে অবশ্যই তা হবে তোমাদের জন্য পাপের বিষয়। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
وَإِن كُنتُمْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ وَلَمْ تَجِدُوا۟ كَاتِبًۭا فَرِهَـٰنٌۭ مَّقْبُوضَةٌۭ ۖ فَإِنْ أَمِنَ بَعْضُكُم بَعْضًۭا فَلْيُؤَدِّ ٱلَّذِى ٱؤْتُمِنَ أَمَـٰنَتَهُۥ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ ۗ وَلَا تَكْتُمُوا۟ ٱلشَّهَـٰدَةَ ۚ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُۥٓ ءَاثِمٌۭ قَلْبُهُۥ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌۭ ٢٨٣
আয়াত-২৮৩: আর যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধকী বস্তু হস্তগত রাখা বিধেয়। যদি তোমাদের একে অপরকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, সে যেন আমানত ফিরিয়ে দেয় এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করবে না। যে কেউ তা গোপন করবে, অবশ্যই তার অন্তর হবে পাপপূৰ্ণ। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।
لِّلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ وَإِن تُبْدُوا۟ مَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ ٱللَّهُ ۖ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ٢٨٤
আয়াত-২৮৪: যা কিছু আছে আসমানে এবং যা কিছু আছে জমিনে সবকিছুই আল্লাহর। তোমাদের মনে যা আছে তা তোমরা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍۢ مِّن رُّسُلِهِۦ ۚ وَقَالُوا۟ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ ٱلْمَصِيرُ ٢٨٥
আয়াত-২৮৫: রাসূল ঈমান এনেছেন ঐসব বিষয়ের উপর যা তাঁর প্রতি নাযিল করা হয়েছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে এবং মু’মিনরাও ঈমান এনেছে। তারা সবাই ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি এবং তার রাসূলদের প্রতি। তারা বলে; আমরা তার রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। তারা আরো বলে; আমরা শুনেছি এবং মান্য করেছি। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। আর প্রত্যাবর্তন তো তোমারই কাছে করতে হবে।
لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا ٱكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَآ إِن نَّسِينَآ أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَآ إِصْرًۭا كَمَا حَمَلْتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦ ۖ وَٱعْفُ عَنَّا وَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَآ ۚ أَنتَ مَوْلَىٰنَا فَٱنصُرْنَا عَلَى ٱلْقَوْمِ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٢٨٦
আয়াত-২৮৬: আল্লাহ অৰ্পণ করেন না কারো উপর এমন কোন দায়িত্ব যা বহন করার সাধ্য তার নেই। যা কিছু ভাল সে কামাই করে তা তারই এবং যা কিছু মন্দ সে উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদের পাকড়াও কর না।
হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আর অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন গুরুদায়িত্ব যেমন অর্পণ করেছিলে আমাদের পূর্ববতীদের উপর। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন বোঝার ভার, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। তুমি আমাদের পাপমোচন করে দাও, আমাদের ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের বন্ধু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় তুমি আমাদের বিজয়ী কর।
Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২৫১-২৭৫)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
فَهَزَمُوهُم بِإِذْنِ ٱللَّهِ وَقَتَلَ دَاوُۥدُ جَالُوتَ وَءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلْمُلْكَ وَٱلْحِكْمَةَ وَعَلَّمَهُۥ مِمَّا يَشَآءُ ۗ وَلَوْلَا دَفْعُ ٱللَّهِ ٱلنَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍۢ لَّفَسَدَتِ ٱلْأَرْضُ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلْعَـٰلَمِينَ ٢٥١
আয়াত-২৫১: তারপর তারা আল্লাহর হুকুমে জালুতের বাহিনীকে পরাজিত করল এবং দাউদ জালুতকে হত্যা করল। আর আল্লাহ দাউদকে রাজ্য ও হেকমত দান করলেন এবং তাকে শিখালেন যা তিনি চাইলেন। মানব জাতির কতককে যদি কতকের দ্বারা আল্লাহ প্রতিহত না করতেন তাহলে গোটা পৃথিবী বিপর্যন্ত হয়ে যেত। কিন্তু বিশ্ববাসীর প্রতি আল্লাহ হলেন পরম করুণাময়।
تِلْكَ ءَايَـٰتُ ٱللَّهِ نَتْلُوهَا عَلَيْكَ بِٱلْحَقِّ ۚ وَإِنَّكَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ ٢٥٢
আয়াত- ২৫২: এসব আল্লাহর আয়াত। আমি তোমার কাছে তা যথাযথভাবে আবৃত্তি করছি। আর তুমি তো নিশ্চিতভাবে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
تِلْكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۢ ۘ مِّنْهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُ ۖ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجَـٰتٍۢ ۚ وَءَاتَيْنَا عِيسَى ٱبْنَ مَرْيَمَ ٱلْبَيِّنَـٰتِ وَأَيَّدْنَـٰهُ بِرُوحِ ٱلْقُدُسِ ۗ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلَ ٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِم مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَـٰتُ وَلَـٰكِنِ ٱخْتَلَفُوا۟ فَمِنْهُم مَّنْ ءَامَنَ وَمِنْهُم مَّن كَفَرَ ۚ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلُوا۟ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ ٢٥٣
আয়াত-২৫৩: এই রাসূলগণ, এদের কতককে আমি কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কাউকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন। আমি মরিয়মের পুত্র ঈসাকে স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান করেছি এবং জিবরাঈলের মাধ্যমে তাকে শক্তি দান করেছি। আর যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেন তাহলে তাদের পরবর্তীরা তাদের কাছে পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হত না। কিন্তু তাদের মধ্যে মতবিরোধ ঘটল, ফলে তাদের কতক ঈমান আনল এবং কতক কুফরী করল। আল্লাহ ইচ্ছে করলে তারা যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হত না। কিন্তু আল্লাহ তো তাই করেন যা তিনি ইচ্ছে করেন।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَنفِقُوا۟ مِمَّا رَزَقْنَـٰكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌۭ لَّا بَيْعٌۭ فِيهِ وَلَا خُلَّةٌۭ وَلَا شَفَـٰعَةٌۭ ۗ وَٱلْكَـٰفِرُونَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٢٥٤
আয়াত-২৫৪: হে মু’মিনগণ! যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ব্যয় কর তা থেকে যা আমি তোমাদের দিয়েছি সেদিন আসার পূর্বে যেদিন থাকবে না ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব আর না সুপারিশ। আর কাফেররাই প্রকৃত জালিম।
ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُۥ سِنَةٌۭ وَلَا نَوْمٌۭ ۚ لَّهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ مَن ذَا ٱلَّذِى يَشْفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذْنِهِۦ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَىْءٍۢ مِّنْ عِلْمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ ۖ وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ ٢٥٥
আয়াত-২৫৫: আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সব কিছুর ধারক। তাকে স্পর্শ করতে পারে না তন্দ্রা আর না নিদ্রা। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা সবই তার। এমন কে আছে, যে তার কাছে সুপারিশ করবে তার অনুমতি ছাড়া? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু রয়েছে তা সবই তিনি জানেন। যা তিনি ইচ্ছে করেন তাছাড়া তার জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর সিংহাসন আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর এদের রক্ষণাবেক্ষণ তাকে ক্লান্ত-শ্রান্ত করে না। তিনি মহান, শ্রেষ্ঠ।
لَآ إِكْرَاهَ فِى ٱلدِّينِ ۖ قَد تَّبَيَّنَ ٱلرُّشْدُ مِنَ ٱلْغَىِّ ۚ فَمَن يَكْفُرْ بِٱلطَّـٰغُوتِ وَيُؤْمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسْتَمْسَكَ بِٱلْعُرْوَةِ ٱلْوُثْقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَا ۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ٢٥٦
আয়াত-২৫৬: দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি নেই। নিশ্চয়ই সুস্পষ্ট হয়ে গেছে সৎপথ ভ্রান্ত পথ থেকে। যে অস্বীকার করবে তাগুতকে এবং ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি সে এমন এক দৃঢ় হাতল ধারণ করবে যা কখনও ভাঙ্গাবার নয়। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, মহাবিজ্ঞ।
ٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ يُخْرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَـٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ ۖ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ أَوْلِيَآؤُهُمُ ٱلطَّـٰغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ ٱلنُّورِ إِلَى ٱلظُّلُمَـٰتِ ۗ أُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَـٰلِدُونَ ٢٥٧
আয়াত-২৫৭: যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদের বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোতে। আর যারা কুফরী করে তাগুত তাদের অভিভাবক, তারা তাদের আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। এরাই দোযখের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِى حَآجَّ إِبْرَٰهِـۧمَ فِى رَبِّهِۦٓ أَنْ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلْمُلْكَ إِذْ قَالَ إِبْرَٰهِـۧمُ رَبِّىَ ٱلَّذِى يُحْىِۦ وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا۠ أُحْىِۦ وَأُمِيتُ ۖ قَالَ إِبْرَٰهِـۧمُ فَإِنَّ ٱللَّهَ يَأْتِى بِٱلشَّمْسِ مِنَ ٱلْمَشْرِقِ فَأْتِ بِهَا مِنَ ٱلْمَغْرِبِ فَبُهِتَ ٱلَّذِى كَفَرَ ۗ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ ٢٥٨
আয়াত-২৫৮: তুমি কি দেখনি সে লোকটিকে, যে ইব̖রাহীমের সাথে তার পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল, এ কারণে যে, আল্লাহ তাকে কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন? যখন ইব̖রাহীম বলল; আমার পালনকর্তা তিনি যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তখন সে বললঃ আমিও তো জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইবরাহীম বললঃ আল্লাহ তো সূর্যকে পূর্ব দিক থেকে উদিত করেন, পারলে তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল। আল্লাহ সীমালংঘনকারী লোকদের সৎপথে পরিচালিত করেন না।
أَوْ كَٱلَّذِى مَرَّ عَلَىٰ قَرْيَةٍۢ وَهِىَ خَاوِيَةٌ عَلَىٰ عُرُوشِهَا قَالَ أَنَّىٰ يُحْىِۦ هَـٰذِهِ ٱللَّهُ بَعْدَ مَوْتِهَا ۖ فَأَمَاتَهُ ٱللَّهُ مِا۟ئَةَ عَامٍۢ ثُمَّ بَعَثَهُۥ ۖ قَالَ كَمْ لَبِثْتَ ۖ قَالَ لَبِثْتُ يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍۢ ۖ قَالَ بَل لَّبِثْتَ مِا۟ئَةَ عَامٍۢ فَٱنظُرْ إِلَىٰ طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمْ يَتَسَنَّهْ ۖ وَٱنظُرْ إِلَىٰ حِمَارِكَ وَلِنَجْعَلَكَ ءَايَةًۭ لِّلنَّاسِ ۖ وَٱنظُرْ إِلَى ٱلْعِظَامِ كَيْفَ نُنشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوهَا لَحْمًۭا ۚ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُۥ قَالَ أَعْلَمُ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌۭ ٢٥٩
আয়াত-২৫৯: অথবা তুমি কি দেখনি সে ব্যক্তিকে যে এমন এক জনপদ দিয়ে অতিক্রম করছিল যার ঘর-বাড়িগুলো ভেঙ্গে ছাদের উপর পড়েছিল? সে বললঃ কেমন করে আল্লাহ মৃত্যুর পর একে জীবিত করবেন? তারপর আল্লাহ তাকে একশ বছর মৃত অবস্থায় রাখলেন, তারপর তাকে পুনরুজ্জীবিত করলেন, বললেনঃ তুমি কতকাল এভাবে ছিলে? সে বললঃ একদিন কিংবা একদিনেরও কম সময় এভাবে ছিলাম। তিনি বললেনঃ না, বরং তুমি তো একশ’ বছর অবস্থান করেছ। তুমি চেয়ে দেখ তোমার খাবার ও পানীয়ের দিকে, তা পচে যায়নি এবং লক্ষ্য কর তোমার গাধাটির প্রতি। আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চাই। আর হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ যে, কিভাবে আমি এগুলোকে সংযোজিত করি, তারপর তাতে মাংসের আবরণ পরাই। যখন তার কাছে এ অবস্থা সুস্পষ্ট হল তখন সে বলে উঠল, আমি জানি নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
وَإِذْ قَالَ إِبْرَٰهِـۧمُ رَبِّ أَرِنِى كَيْفَ تُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰ ۖ قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِن ۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَـٰكِن لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِى ۖ قَالَ فَخُذْ أَرْبَعَةًۭ مِّنَ ٱلطَّيْرِ فَصُرْهُنَّ إِلَيْكَ ثُمَّ ٱجْعَلْ عَلَىٰ كُلِّ جَبَلٍۢ مِّنْهُنَّ جُزْءًۭا ثُمَّ ٱدْعُهُنَّ يَأْتِينَكَ سَعْيًۭا ۚ وَٱعْلَمْ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ ٢٦٠
আয়াত-২৬০: আর স্মরণ কর যখন ইব̖রাহীম বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে দেখাও কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর। তিনি বললেন; তবে কি তুমি বিশ্বাস কর না? সে বললঃ অবশ্যই বিশ্বাস করি, তবে দেখতে চাই এজন্য যাতে আমার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। তিনি বললেনঃ তাহলে চারটি পাখি ধরে নাও এবং সেগুলোকে তোমার বশীভূত কর। তারপর সেগুলোর দেহের এক এক অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর তাদের ডাক দাও, তারা তোমার কাছে দৌড়ে চলে আসবে। জেনে রেখ, নিশ্চয় আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।
مَّثَلُ ٱلَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَٰلَهُمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنۢبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِى كُلِّ سُنۢبُلَةٍۢ مِّا۟ئَةُ حَبَّةٍۢ ۗ وَٱللَّهُ يُضَـٰعِفُ لِمَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌ ٢٦١
আয়াত-২৬১: যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি শস্য-বীজের মত, যা সাতটি শীষ উৎপাদন করে, প্রতিটি শীষে একশ করে শস্যকণা। আল্লাহ যাকে চান বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
ٱلَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَٰلَهُمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَآ أَنفَقُوا۟ مَنًّۭا وَلَآ أَذًۭى ۙ لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ٢٦٢
আয়াত-২৬২: যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং যা ব্যয় করে তার কথা বলে বেড়ায় না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্য রয়েছে পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে তাদের কোন ভয় নেই, আর তারা দুঃখিতও হবে না।
قَوْلٌۭ مَّعْرُوفٌۭ وَمَغْفِرَةٌ خَيْرٌۭ مِّن صَدَقَةٍۢ يَتْبَعُهَآ أَذًۭى ۗ وَٱللَّهُ غَنِىٌّ حَلِيمٌۭ ٢٦٣
আয়াত-২৬৩: ভাল কথা বলে দেয়া এবং ক্ষমা চাওয়া ঐ দানের চেয়ে উত্তম যার পরে কষ্ট দেয়া হয়। আল্লাহ অভাবমুক্ত, পরম সহনশীল।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تُبْطِلُوا۟ صَدَقَـٰتِكُم بِٱلْمَنِّ وَٱلْأَذَىٰ كَٱلَّذِى يُنفِقُ مَالَهُۥ رِئَآءَ ٱلنَّاسِ وَلَا يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ ۖ فَمَثَلُهُۥ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌۭ فَأَصَابَهُۥ وَابِلٌۭ فَتَرَكَهُۥ صَلْدًۭا ۖ لَّا يَقْدِرُونَ عَلَىٰ شَىْءٍۢ مِّمَّا كَسَبُوا۟ ۗ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٢٦٤
আয়াত-২৬৪: হে মু’মিনগণ! যারা ঈমান এনেছ! তোমরা দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে ঐ ব্যক্তির মত বরবাদ কর না যে নিজের সম্পদ লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে থাকে এবং আল্লাহর প্রতি ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে না। ঐ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি ছিল, তারপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হল, ফলে তাকে পরিষ্কার করে রেখে দিল। যা তারা উপার্জন করেছিল তার কিছুই তারা কাজে লাগাতে পারবে না। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
وَمَثَلُ ٱلَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَٰلَهُمُ ٱبْتِغَآءَ مَرْضَاتِ ٱللَّهِ وَتَثْبِيتًۭا مِّنْ أَنفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍۭ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌۭ فَـَٔاتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ فَإِن لَّمْ يُصِبْهَا وَابِلٌۭ فَطَلٌّۭ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ٢٦٥
আয়াত-২৬৫: যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং নিজেদের চিত্ত সুদৃঢ় করার জন্য স্বীয় সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ কোন উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত বাগানের মত, যাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়, ফলে সেথায় ফলমূল দ্বিগুণ জন্মে। আর যদি প্রবল বৃষ্টিপাত না-ও হয় তবুও হালকা বর্ষণই যথেষ্ট। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্যক প্রত্যক্ষ করেন।
أَيَوَدُّ أَحَدُكُمْ أَن تَكُونَ لَهُۥ جَنَّةٌۭ مِّن نَّخِيلٍۢ وَأَعْنَابٍۢ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ لَهُۥ فِيهَا مِن كُلِّ ٱلثَّمَرَٰتِ وَأَصَابَهُ ٱلْكِبَرُ وَلَهُۥ ذُرِّيَّةٌۭ ضُعَفَآءُ فَأَصَابَهَآ إِعْصَارٌۭ فِيهِ نَارٌۭ فَٱحْتَرَقَتْ ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْـَٔايَـٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ ٢٦٦
আয়াত-২৬৬: তোমাদের কেউ কি চায় যে, তার একটি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান থাকবে, যার পাদদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে এবং যাতে সব ধরনের ফলমূল থাকবে, যখন সে বার্ধক্যে উপনীত হবে আর তার থাকবে দুর্বল সন্তান-সন্ততি, তারপর বয়ে যাবে ঐ বাগানের উপর দিয়ে এক অগ্নিগর্ভ প্রবল ঘূর্ণিঝড়, ফলে বাগানটি ভস্মীভূত হয়ে যাবে? এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তার নিদর্শনাবলী স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা করতে পার।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَنفِقُوا۟ مِن طَيِّبَـٰتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّآ أَخْرَجْنَا لَكُم مِّنَ ٱلْأَرْضِ ۖ وَلَا تَيَمَّمُوا۟ ٱلْخَبِيثَ مِنْهُ تُنفِقُونَ وَلَسْتُم بِـَٔاخِذِيهِ إِلَّآ أَن تُغْمِضُوا۟ فِيهِ ۚ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ غَنِىٌّ حَمِيدٌ ٢٦٧
আয়াত-২৬৭: হে মু’মিনগণ যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা তোমাদের জন্য ভূমি থেকে উৎপন্ন করি তার মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর, আর তার নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে যেও না, অথচ তোমরা তা কখনও গ্রহণ করার নও যদি না চক্ষু বন্ধ করে থাক। জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
ٱلشَّيْطَـٰنُ يَعِدُكُمُ ٱلْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُم بِٱلْفَحْشَآءِ ۖ وَٱللَّهُ يَعِدُكُم مَّغْفِرَةًۭ مِّنْهُ وَفَضْلًۭا ۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌۭ ٢٦٨
আয়াত-২৬৮: শয়তান তোমাদের অভাব-অনটনের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার হুকুম দেয়। আর আল্লাহ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেন তার ক্ষমার এবং অনুগ্রহের। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
يُؤْتِى ٱلْحِكْمَةَ مَن يَشَآءُ ۚ وَمَن يُؤْتَ ٱلْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِىَ خَيْرًۭا كَثِيرًۭا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُو۟لُوا۟ ٱلْأَلْبَـٰبِ ٢٦٩
আয়াত-২৬৯: তিনি যাকে ইচ্ছে হেকমত দান করেন এবং যাকে হেকমত প্রদান করা হয় সে তো প্রচুর কল্যাণ প্রাপ্ত হয়। জ্ঞানবানরা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না!
وَمَآ أَنفَقْتُم مِّن نَّفَقَةٍ أَوْ نَذَرْتُم مِّن نَّذْرٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُهُۥ ۗ وَمَا لِلظَّـٰلِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ ٢٧٠
আয়াত-২৭০: তোমরা যা কিছু ব্যয় কর কিংবা যা কিছু মানত কর, সেসব কিছুই আল্লাহ জানেন। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।
إِن تُبْدُوا۟ ٱلصَّدَقَـٰتِ فَنِعِمَّا هِىَ ۖ وَإِن تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا ٱلْفُقَرَآءَ فَهُوَ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۚ وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَيِّـَٔاتِكُمْ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌۭ ٢٧١
আয়াত-২৭১: তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর তবে তা কতই না উত্তম; আর যদি তা গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের তা দিয়ে দাও তবে তোমাদের জন্য তা আরও ভাল। আল্লাহ তোমাদের কিছু কিছু পাপ বিদূরিত করে দিবেন। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।
لَّيْسَ عَلَيْكَ هُدَىٰهُمْ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ يَهْدِى مَن يَشَآءُ ۗ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ فَلِأَنفُسِكُمْ ۚ وَمَا تُنفِقُونَ إِلَّا ٱبْتِغَآءَ وَجْهِ ٱللَّهِ ۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ ٢٧٢
আয়াত-২৭২: তাদের সৎপথে আনার দায় তোমার নয়, বরং আল্লাহ যাকে চান সৎপথে পরিচালিত করেন। তোমরা যে সম্পদ ব্যয় কর তা তো তোমাদের নিজেদের উপকারার্থেই কর। তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই ব্যয় করে থাক। আর যে সম্পদ তোমরা ব্যয় করবে তার পুরস্কার পুরোপুরি তোমাদের দেয়া হবে এবং তোমাদের উপর জুলুম করা হবে না।
لِلْفُقَرَآءِ ٱلَّذِينَ أُحْصِرُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ لَا يَسْتَطِيعُونَ ضَرْبًۭا فِى ٱلْأَرْضِ يَحْسَبُهُمُ ٱلْجَاهِلُ أَغْنِيَآءَ مِنَ ٱلتَّعَفُّفِ تَعْرِفُهُم بِسِيمَـٰهُمْ لَا يَسْـَٔلُونَ ٱلنَّاسَ إِلْحَافًۭا ۗ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌ ٢٧٣
আয়াত-২৭৩: এ ব্যয় ঐ সকল অভাবগ্রস্ত লোকদের জন্য যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত হয়ে পড়েছে যে, তারা জীবিকার সন্ধানে জমিনে ঘোরাফেরা করতে পারে না। ভিক্ষা না করার দরুন অজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবমুক্ত বলে মনে করে। তাদের লক্ষণ দেখলেই তুমি তাদের চিনতে পারবে। কাকুতি-মিনতি করে তারা মানুষের কাছে ভিক্ষা চায় না। আর যে সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।
ٱلَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَٰلَهُم بِٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ سِرًّۭا وَعَلَانِيَةًۭ فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ٢٧٤
আয়াত-২৭৪: যারা ব্যয় করে নিজেদের ধন-সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে তাদের জন্য রয়েছে তাদের পুণ্য-ফল তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের নেই কোন-ভয় আর তারা দুঃখিতও হবে না।
ٱلَّذِينَ يَأْكُلُونَ ٱلرِّبَوٰا۟ لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ ٱلَّذِى يَتَخَبَّطُهُ ٱلشَّيْطَـٰنُ مِنَ ٱلْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوٓا۟ إِنَّمَا ٱلْبَيْعُ مِثْلُ ٱلرِّبَوٰا۟ ۗ وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلْبَيْعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰا۟ ۚ فَمَن جَآءَهُۥ مَوْعِظَةٌۭ مِّن رَّبِّهِۦ فَٱنتَهَىٰ فَلَهُۥ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَـٰلِدُونَ ٢٧٥
আয়াত-২৭৫: যারা সুদ খায় তারা দাঁড়াবে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে শয়তান স্পর্শ করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। এ অবস্থা তাদের এজন্য যে, তারা বলে, ‘বেচা-কেনা তো সুদেরই মত’। অথচ আল্লাহ বেচা-কেনাকে বৈধ এবং সুদকে অবৈধ করেছেন। যার কাছে তার পালনকর্তার তরফ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে নিবৃত্ত হয়েছে, তবে পূর্বে যা হয়ে গেছে তা তার, আর তার ব্যাপার আল্লাহর কাছে সোপর্দ। কিন্তু যারা পুনরায় সুদ নিবে, তারাই দোযখবাসী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।
Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২২৬-২৫০)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَآئِهِمْ تَرَبُّصُ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍۢ ۖ فَإِن فَآءُو فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ٢٢٦
আয়াত-২২৬ঃ যারা স্ত্রীগমন না করার শপথ করে তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। তারপর যদি তারা আপোসে মিটমাট করে নেয় তবে তো আল্লাহ̖ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَإِنْ عَزَمُوا۟ ٱلطَّلَـٰقَ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ٢٢٧
আয়াত-২২৭ঃ আর যদি তারা তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তো আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
وَٱلْمُطَلَّقَـٰتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَـٰثَةَ قُرُوٓءٍۢ ۚ وَلَا يَحِلُّ لَهُنَّ أَن يَكْتُمْنَ مَا خَلَقَ ٱللَّهُ فِىٓ أَرْحَامِهِنَّ إِن كُنَّ يُؤْمِنَّ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ ۚ وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِى ذَٰلِكَ إِنْ أَرَادُوٓا۟ إِصْلَـٰحًۭا ۚ وَلَهُنَّ مِثْلُ ٱلَّذِى عَلَيْهِنَّ بِٱلْمَعْرُوفِ ۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌۭ ۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ ٢٢٨
আয়াত–২২৮ঃ আর তালাকপ্রাপ্তা নারী তিন হায়েয পর্যন্ত নিজেকে প্রতীক্ষায় রাখবে তাদের পক্ষে বৈধ নয় গোপন রাখা যা আল্লাহ্ তাদের জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন, যদি তারা আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী হয়। আর যদি তারা আপোস-মীমাংসা করতে চায় তবে ঐ সময়ে তাদের ফিরিয়ে নিতে তাদের স্বামীরা অধিক হকদার। নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের আছে তাদের উপর। আর নারীদের উপর রয়েছে পুরুষদের মর্যাদা। আল্লাহ পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।
ٱلطَّلَـٰقُ مَرَّتَانِ ۖ فَإِمْسَاكٌۢ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌۢ بِإِحْسَـٰنٍۢ ۗ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا۟ مِمَّآ ءَاتَيْتُمُوهُنَّ شَيْـًٔا إِلَّآ أَن يَخَافَآ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ ٱللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ ٱللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا ٱفْتَدَتْ بِهِۦ ۗ تِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا ۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ ٱللَّهِ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٢٢٩
আয়াত-২২৯ঃ এ তালাক দু’বার পর্যন্ত, তারপর হয় বিধিমত স্ত্রীকে রাখবে, না হয় সদয়ভাবে মুক্ত করে দেবে। তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের যা কিছু দিয়েছ তা থেকে কোন কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়; কিন্তু স্বামী এবং স্ত্রী উভয় যদি আশংকা করে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তারপর তোমরা যদি ভয় কর যে, তারা উভয় আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে নিস্কৃতি পেতে চায়, তাতে তাদের কারো কোন পাপ নেই। এ হল আল্লাহর নিধারিত সীমারেখা। সুতরাং তা লংঘন কর না। যারা আল্লাহর সীমারেখা লঙ্ঘন করবে তারাই জালিম।
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُۥ مِنۢ بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُۥ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَآ أَن يَتَرَاجَعَآ إِن ظَنَّآ أَن يُقِيمَا حُدُودَ ٱللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍۢ يَعْلَمُونَ ٢٣٠
আয়াত-২৩০ঃ তারপর যদি স্বামী স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়, তবে সে তার জন্য বৈধ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে ছাড়া অন্য স্বামীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তারপর দ্বিতীয় স্বামী যদি তাকে তালাক দেয় এবং তারা উভয়ে যদি মনে করে যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে, তাহলে তাদের পুনরায় বিয়ে করাতে কারো কোন পাপ নেই। এই হল আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা। জ্ঞানীদের জন্য তিনি এসব স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন।
وَإِذَا طَلَّقْتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ سَرِّحُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍۢ ۚ وَلَا تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَارًۭا لِّتَعْتَدُوا۟ ۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُۥ ۚ وَلَا تَتَّخِذُوٓا۟ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ هُزُوًۭا ۚ وَٱذْكُرُوا۟ نِعْمَتَ ٱللَّهِ عَلَيْكُمْ وَمَآ أَنزَلَ عَلَيْكُم مِّنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَٱلْحِكْمَةِ يَعِظُكُم بِهِۦ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ٢٣١
আয়াত-২৩১ঃ আর যখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়ে দাও এবং তারা তাদের ইদ্দত পুর্তির কাছাকাছি হয়, তখন তোমরা তাদের হয় বিধিমত রেখে দেবে অথবা যথাবিধি মুক্ত করে দেবে; কিন্তু জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে তাদের আটকে রেখ না। আর যে এরূপ করে সে তো নিজের প্রতি জুলুম করে। আল্লাহর নির্দেশাবলীকে তোমরা হাসি-তামাশার বস্তু কর না। আর স্মরণ কর আল্লাহর অনুগ্রহের কথা যা তোমাদের উপর রয়েছে এবং স্মরণ কর কিতাব ও হেকমতের কথা যা তোমাদের প্রতি তিনি নাযিল করেছেন এবং যা দিয়ে তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন। তোমরা ভয় কর আল্লাহকে এবং জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
وَإِذَا طَلَّقْتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا تَعْضُلُوهُنَّ أَن يَنكِحْنَ أَزْوَٰجَهُنَّ إِذَا تَرَٰضَوْا۟ بَيْنَهُم بِٱلْمَعْرُوفِ ۗ ذَٰلِكَ يُوعَظُ بِهِۦ مَن كَانَ مِنكُمْ يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ ۗ ذَٰلِكُمْ أَزْكَىٰ لَكُمْ وَأَطْهَرُ ۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ٢٣٢
আয়াত-২৩২ঃ আর যখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়ে দাও এবং তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করতে থাকে, তখন যদি তারা পরস্পর সম্মত হয়ে নিজেদের স্বামীদের বিধিমত বিয়ে করতে চায় তাহলে তোমরা তাদের বাধা দেবে না। এ উপদেশ তাকেই দেয়া হচ্ছে, যে ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি। এতে রয়েছে তোমাদের জন্য একান্ত পরিশুদ্ধতা এবং পরম পবিত্রত। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান ন।
وَٱلْوَٰلِدَٰتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَـٰدَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ ۖ لِمَنْ أَرَادَ أَن يُتِمَّ ٱلرَّضَاعَةَ ۚ وَعَلَى ٱلْمَوْلُودِ لَهُۥ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِٱلْمَعْرُوفِ ۚ لَا تُكَلَّفُ نَفْسٌ إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَا تُضَآرَّ وَٰلِدَةٌۢ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوْلُودٌۭ لَّهُۥ بِوَلَدِهِۦ ۚ وَعَلَى ٱلْوَارِثِ مِثْلُ ذَٰلِكَ ۗ فَإِنْ أَرَادَا فِصَالًا عَن تَرَاضٍۢ مِّنْهُمَا وَتَشَاوُرٍۢ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا ۗ وَإِنْ أَرَدتُّمْ أَن تَسْتَرْضِعُوٓا۟ أَوْلَـٰدَكُمْ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِذَا سَلَّمْتُم مَّآ ءَاتَيْتُم بِٱلْمَعْرُوفِ ۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌۭ ٢٣٣
আয়াত-২৩৩ঃ মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু’বছর দুধ পান করাবে, যদি দুধ পান করানোর পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। আর পিতার কর্তব্য হল তাদের যথাবিধি ভরণপোষণ করা। কাউকে তার সামর্থ্যের অধিক দায়িত্বভার দেয়া হয় না। কোন মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না এবং কোন পিতাকেও তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। আর উত্তরাধিকারীদের উপরও অনুরূপ কর্তব্য আর মাতা-পিতা পরস্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে যদি দুধ পান বন্ধ রাখতে চায়, তবে তাতে তাদের কারো কোন পাপ নেই। বিধিমত সাব্যস্তকৃত বিনিময় প্রদান করে কোন ধাত্রী দিয়ে যদি তোমরা নিজেদের সন্তানদের দুধ পান করাতে চাও তাতেও কোন পাপ নেই। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
وَٱلَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَٰجًۭا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍۢ وَعَشْرًۭا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِىٓ أَنفُسِهِنَّ بِٱلْمَعْرُوفِ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌۭ ٢٣٤
আয়াত-২৩৪ঃ তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশদিন প্রতীক্ষা করবে। তারপর যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করে নেবে, তখন বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।
وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا عَرَّضْتُم بِهِۦ مِنْ خِطْبَةِ ٱلنِّسَآءِ أَوْ أَكْنَنتُمْ فِىٓ أَنفُسِكُمْ ۚ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمْ سَتَذْكُرُونَهُنَّ وَلَـٰكِن لَّا تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا إِلَّآ أَن تَقُولُوا۟ قَوْلًۭا مَّعْرُوفًۭا ۚ وَلَا تَعْزِمُوا۟ عُقْدَةَ ٱلنِّكَاحِ حَتَّىٰ يَبْلُغَ ٱلْكِتَـٰبُ أَجَلَهُۥ ۚ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ فَٱحْذَرُوهُ ۚ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌ حَلِيمٌۭ ٢٣٥
আয়াত-২৩৫ঃ আর যদি তোমরা সে নারীর কাছে ইংগিতে বিয়ের পয়গাম পাঠাও কিংবা নিজেদের অন্তরে গোপন রাখ, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। আল্লাহ জানেন যে, অবশ্যই সে নারীদের কথা তোমরা বলবে। কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ছাড়া তাদের সাথে বিয়ে করার গোপন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখ না এবং নির্ধারিত ইদ্দতকাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার দৃঢ় সংকল্প কর না। আর জেনে রেখ যে, তোমাদের মনে যা আছে আল্লাহ তা জানেন, সুতরাং তোমরা তাকে ভয় কর। আরো জেনে রেখ যে, আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম সহনশীল।
لَّا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن طَلَّقْتُمُ ٱلنِّسَآءَ مَا لَمْ تَمَسُّوهُنَّ أَوْ تَفْرِضُوا۟ لَهُنَّ فَرِيضَةًۭ ۚ وَمَتِّعُوهُنَّ عَلَى ٱلْمُوسِعِ قَدَرُهُۥ وَعَلَى ٱلْمُقْتِرِ قَدَرُهُۥ مَتَـٰعًۢا بِٱلْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى ٱلْمُحْسِنِينَ ٢٣٦
আয়াত-২৩৬ঃ তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের স্পর্শ করার পূর্বে এবং তাদের জন্য মহর ধার্য করার পূর্বে যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা তাদের কিছু খরচ দেবে, বিত্তবান তার সাধ্যমত দেবে এবং বিত্তহীন তার সাধ্য অনুযায়ী দেবে। বিধিমত খরচ প্রদান সৎকর্মশীলদের উপর কর্তব্য।
وَإِن طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِيضَةًۭ فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ إِلَّآ أَن يَعْفُونَ أَوْ يَعْفُوَا۟ ٱلَّذِى بِيَدِهِۦ عُقْدَةُ ٱلنِّكَاحِ ۚ وَأَن تَعْفُوٓا۟ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَىٰ ۚ وَلَا تَنسَوُا۟ ٱلْفَضْلَ بَيْنَكُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ٢٣٧
আয়াত-২৩৭ঃ আর যদি তোমরা তাদের মহর ধার্য করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দাও, তবে যে মহর তোমরা ধার্য করেছ তার অর্ধেক দিতে হবে। অবশ্য যদি স্ত্রীরা ক্ষমা করে দেয় অথবা যার হাতে বিয়ের বন্ধন রয়েছে সে যদি ক্ষমা করে দেয় তবে স্বতন্ত্র। আর তোমরা যদি ক্ষমা করে দাও তবে তা হবে তাকওয়ার নিকটবর্তী। তোমরা নিজেদের মধ্যে সহানুভূতির কথা ভুলে যেও না। তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ্ সে ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা।
حَـٰفِظُوا۟ عَلَى ٱلصَّلَوَٰتِ وَٱلصَّلَوٰةِ ٱلْوُسْطَىٰ وَقُومُوا۟ لِلَّهِ قَـٰنِتِينَ ٢٣٨
আয়াত-২৩৮ঃ তোমরা সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হবে, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের প্রতি এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে একান্ত বিনীতভাবে দাড়াবে।
فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًۭا ۖ فَإِذَآ أَمِنتُمْ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا۟ تَعْلَمُونَ ٢٣٩
আয়াত-২৩৯ঃ তবে যদি তোমরা আশংকা কর, তাহলে পদচারী অবস্থায় অথবা আরোহী অবস্থায়; তারপর যখন তোমরা নিরাপদ বোধ করবে তখন আল্লাহকে স্মরণ করবে, যেভাবে তিনি তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, যা তোমরা জানতে না।
وَٱلَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَٰجًۭا وَصِيَّةًۭ لِّأَزْوَٰجِهِم مَّتَـٰعًا إِلَى ٱلْحَوْلِ غَيْرَ إِخْرَاجٍۢ ۚ فَإِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِى مَا فَعَلْنَ فِىٓ أَنفُسِهِنَّ مِن مَّعْرُوفٍۢ ۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ ٢٤٠
আয়াত-২৪০ঃ আর তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হবে, তারা (মৃত্যুর পূর্বে) স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে দিয়ে তাদের জন্য এক বছরের ভরণপোষণের অসিয়ত করে যাবে। কিন্তু যদি তারা নিজেরা বেরিয়ে যায় তবে বিধিমত তারা নিজেদের ব্যাপারে যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ হবে না। আর আল্লাহ হলেন পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।
وَلِلْمُطَلَّقَـٰتِ مَتَـٰعٌۢ بِٱلْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى ٱلْمُتَّقِينَ ٢٤١
আয়াত-২৪১ঃ আর তালাকপ্রাপ্ত নারীদের জন্য বিধিমত ভরণপোষণ দেয়া মোক্তাকীদের উপর কর্তব্য।
كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمْ ءَايَـٰتِهِۦ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ ٢٤٢
আয়াত-২৪২ঃ এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তার নিদর্শনাবলী বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ خَرَجُوا۟ مِن دِيَـٰرِهِمْ وَهُمْ أُلُوفٌ حَذَرَ ٱلْمَوْتِ فَقَالَ لَهُمُ ٱللَّهُ مُوتُوا۟ ثُمَّ أَحْيَـٰهُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ ٢٤٣
আয়াত-২৪৩ঃ তুমি কি তাদের দেখনি যারা মৃত্যুভয়ে নিজেদের আবাসভূমি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল? তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদের বললেনঃ মরে যাও। পরে তাদের তিনি জীবিত করলেন। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না।
وَقَـٰتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ٢٤٤
আয়াত-২৪৪ঃ আর তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই কর এবং জেনে রেখ, আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
مَّن ذَا ٱلَّذِى يُقْرِضُ ٱللَّهَ قَرْضًا حَسَنًۭا فَيُضَـٰعِفَهُۥ لَهُۥٓ أَضْعَافًۭا كَثِيرَةًۭ ۚ وَٱللَّهُ يَقْبِضُ وَيَبْصُۜطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ ٢٤٥
আয়াত-২৪৫ঃ এমন ব্যক্তি কে আছে যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে? তারপর তিনি তার জন্য তা বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেবেন। আল্লাহই সংকুচিত করেন এবং তিনিই বিস্তৃত করেন এবং তারই কাছে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلْمَلَإِ مِنۢ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ مِنۢ بَعْدِ مُوسَىٰٓ إِذْ قَالُوا۟ لِنَبِىٍّۢ لَّهُمُ ٱبْعَثْ لَنَا مَلِكًۭا نُّقَـٰتِلْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۖ قَالَ هَلْ عَسَيْتُمْ إِن كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلْقِتَالُ أَلَّا تُقَـٰتِلُوا۟ ۖ قَالُوا۟ وَمَا لَنَآ أَلَّا نُقَـٰتِلَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَقَدْ أُخْرِجْنَا مِن دِيَـٰرِنَا وَأَبْنَآئِنَا ۖ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَيْهِمُ ٱلْقِتَالُ تَوَلَّوْا۟ إِلَّا قَلِيلًۭا مِّنْهُمْ ۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِٱلظَّـٰلِمِينَ ٢٤٦
আয়াত-২৪৬ঃ তুমি কি মূসার পরে বনী ইসরাঈলের নেতাদের দেখনি? যখন তারা তাদের নবীকে বলেছিলঃ আমাদের জন্য একজন শাসক নির্ধারিত করে দিন যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি; তখন নবী বললঃ এমনতো হবে না যে, যদি তোমাদের প্রতি যুদ্ধের বিধান দেয়া হয় তখন আর তোমরা যুদ্ধ করবে না? তারা বললঃ আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করব না, অথচ আমরা বিতাড়িত হয়েছি আমাদের আবাসভূমি ও সন্তান-সন্ততি থেকে? তারপর যখন তাদের যুদ্ধের বিধান দেয়া হল তখন অল্প সংখ্যক ছাড়া তাদের সবাই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল। আল্লাহ জালিমদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ ٱللَّهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوتَ مَلِكًۭا ۚ قَالُوٓا۟ أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُ ٱلْمُلْكُ عَلَيْنَا وَنَحْنُ أَحَقُّ بِٱلْمُلْكِ مِنْهُ وَلَمْ يُؤْتَ سَعَةًۭ مِّنَ ٱلْمَالِ ۚ قَالَ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصْطَفَىٰهُ عَلَيْكُمْ وَزَادَهُۥ بَسْطَةًۭ فِى ٱلْعِلْمِ وَٱلْجِسْمِ ۖ وَٱللَّهُ يُؤْتِى مُلْكَهُۥ مَن يَشَآءُ ۚ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌۭ ٢٤٧
আয়াত-২৪৭ঃ আর তাদের নবী তাদের বলেছিল? নিশ্চয় আল্লাহ তালুতকে তোমাদের জন্য শাসক করে দিয়েছেন। তারা বলেছিলঃ তা কেমন করে হয় যে, তার কর্তৃত্ব চলবে আমাদের উপর? অথচ তার চেয়ে আমরা কর্তৃত্বের অধিক হকদার এবং সম্পদের দিক দিয়েও সে ততটা সচ্ছল নয়। নবী বললঃ আল্লাহই তাকে তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং জ্ঞানে ও দেহে প্রাচুর্য দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন স্বীয় কর্তৃত্ব প্রদান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ ءَايَةَ مُلْكِهِۦٓ أَن يَأْتِيَكُمُ ٱلتَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌۭ مِّن رَّبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌۭ مِّمَّا تَرَكَ ءَالُ مُوسَىٰ وَءَالُ هَـٰرُونَ تَحْمِلُهُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةًۭ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ٢٤٨
আয়াত-২৪৮ঃ আর তাদের নবী তাদের আরো বলল, তালুতের কর্তত্বের আলামত হলঃ তোমাদের কাছে তোমাদের প্রভুর তরফ থেকে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের চিত্ত প্রশান্তির জন্য, তাতে থাকবে মূসা ও হারূনের বংশধরদের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী, যা ফেরেশতারা বয়ে আনবে। অবশ্যই এতে রয়েছে তোমাদের জন্য নিশ্চিত নিদর্শন, যদি তোমরা প্রকৃত মু’মিন হও।
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوتُ بِٱلْجُنُودِ قَالَ إِنَّ ٱللَّهَ مُبْتَلِيكُم بِنَهَرٍۢ فَمَن شَرِبَ مِنْهُ فَلَيْسَ مِنِّى وَمَن لَّمْ يَطْعَمْهُ فَإِنَّهُۥ مِنِّىٓ إِلَّا مَنِ ٱغْتَرَفَ غُرْفَةًۢ بِيَدِهِۦ ۚ فَشَرِبُوا۟ مِنْهُ إِلَّا قَلِيلًۭا مِّنْهُمْ ۚ فَلَمَّا جَاوَزَهُۥ هُوَ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ قَالُوا۟ لَا طَاقَةَ لَنَا ٱلْيَوْمَ بِجَالُوتَ وَجُنُودِهِۦ ۚ قَالَ ٱلَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلَـٰقُوا۟ ٱللَّهِ كَم مِّن فِئَةٍۢ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةًۭ كَثِيرَةًۢ بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِينَ ٢٤٩
আয়াত-২৪৯ঃ তারপর তালুত যখন সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বের হল তখন সে বললঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের পরীক্ষা করবেন একটি নদী দিয়ে। যে কেউ সে নদীর পানি পান করবে সে আমার নয়, আর যে কেউ তার স্বাদ গ্রহণ করবে না সে অবশ্যই আমার। কিন্তু কেউ তার হাতের আজঁলা ভরে সামান্য পান করলে তার তেমন কোন দোষ হবে না। অতঃপর অল্প সংখ্যক ছাড়া তাদের সবাই সে পানি পান করল। পরে যখন তালুত ও তার সঙ্গী ঈমানদাররা তা অতিক্রম করল, তখন তারা বললঃ আজ আমাদের জালুত ও তার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার মত শক্তি নেই। কিন্তু যারা দৃঢ়ভাবে ধারণা রাখত যে, আল্লাহর সাথে তাদের সাক্ষাত ঘটবেই তারা বললঃ আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল বিজয়ী হয়েছে কত বৃহৎ দলের মোকাবেলায়। আর আল্লাহ তো রয়েছেন ধৈর্যশীলদের সাথে।
وَلَمَّا بَرَزُوا۟ لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِۦ قَالُوا۟ رَبَّنَآ أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًۭا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَٱنصُرْنَا عَلَى ٱلْقَوْمِ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٢٥٠
আয়াত-২৫০ঃ তালুত ও তার সেনাবাহিনী যখন জালুত ও তার সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হল তখন তারা বলল, হে আমাদের প্রভু! ধৈর্য দাও আমাদের মনে, দৃঢ়পদ রাখ আমাদের, আর সাহায্য কর আমাদের কাফের জাতির বিরুদ্ধে।
Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২০১-২২৫)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
وَمِنْهُم مَّن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِى ٱلدُّنْيَا حَسَنَةًۭ وَفِى ٱلْـَٔاخِرَةِ حَسَنَةًۭ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ٢٠١
আয়াত-২০১: এবং তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যে বলেঃ হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেও আমাদের কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং দোযখের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা কর।
أُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ نَصِيبٌۭ مِّمَّا كَسَبُوا۟ ۚ وَٱللَّهُ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ ٢٠٢
আয়াত-২০২: এদেরই জন্য অংশ রয়েছে এরা যা অর্জন করেছে তাতে আর আল্লাহ অতি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
وَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ فِىٓ أَيَّامٍۢ مَّعْدُودَٰتٍۢ ۚ فَمَن تَعَجَّلَ فِى يَوْمَيْنِ فَلَآ إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَن تَأَخَّرَ فَلَآ إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ لِمَنِ ٱتَّقَىٰ ۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّكُمْ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ ٢٠٣
আয়াত-২০৩: আর স্মরণ করবে আল্লাহকে নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনে। তবে যদি কেউ তাড়াহুড়া করে দু’দিনের মধ্যে চলে আসে তবে তার কোন পাপ নেই, আর যদি কেউ বিলম্ব করে তাহলে তারও কোন পাপ নেই। এ হল তার জন্য যে তাকওয়া অবলম্বন করে। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, তার কাছে তোমাদের একত্র করা হবে।
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُۥ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَيُشْهِدُ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا فِى قَلْبِهِۦ وَهُوَ أَلَدُّ ٱلْخِصَامِ ٢٠٤
আয়াত-২০৪: আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যার পার্থিব জীবন সম্বন্ধের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে এবং সে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে তার মনে যা আছে সে ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে সে ঘোর ঝগড়াটে লোক।
وَإِذَا تَوَلَّىٰ سَعَىٰ فِى ٱلْأَرْضِ لِيُفْسِدَ فِيهَا وَيُهْلِكَ ٱلْحَرْثَ وَٱلنَّسْلَ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ ٱلْفَسَادَ ٢٠٥
আয়াত-২০৫: আর যখন সে ফিরে যায় তখন সে চেষ্টা করে যাতে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও জীব-জন্তুর বংশ বিনাশ করতে পারে। আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন ন।
وَإِذَا قِيلَ لَهُ ٱتَّقِ ٱللَّهَ أَخَذَتْهُ ٱلْعِزَّةُ بِٱلْإِثْمِ ۚ فَحَسْبُهُۥ جَهَنَّمُ ۚ وَلَبِئْسَ ٱلْمِهَادُ ٢٠٦
আয়াত-২০৬: আর যখন তাকে বলা হয়ঃ আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার আত্মাভিমান তাকে পাপে উদ্বুদ্ধ করে। সুতরাং দোজখই তার জন্য যথাযোগ্য স্থান। নিশ্চয়ই তা হল নিকৃষ্ট আবাস।
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشْرِى نَفْسَهُ ٱبْتِغَآءَ مَرْضَاتِ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ رَءُوفٌۢ بِٱلْعِبَادِ ٢٠٧
আয়াত-২০৭: মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিজেকে বিকিয়ে দেয়। আর আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱدْخُلُوا۟ فِى ٱلسِّلْمِ كَآفَّةًۭ وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَـٰنِ ۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّۭ مُّبِينٌۭ ٢٠٨
আয়াত-২০৮: হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
فَإِن زَلَلْتُم مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْكُمُ ٱلْبَيِّنَـٰتُ فَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ ٢٠٩
আয়াত-২০৯: তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে, তবে জেনে রেখ যে আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
هَلْ يَنظُرُونَ إِلَّآ أَن يَأْتِيَهُمُ ٱللَّهُ فِى ظُلَلٍۢ مِّنَ ٱلْغَمَامِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ وَقُضِىَ ٱلْأَمْرُ ۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرْجَعُ ٱلْأُمُورُ ٢١٠
আয়াত-২১০: তারা কি শুধু এর প্রতীক্ষায় রয়েছে যে, আল্লাহ ও ফেরেশতারা মেঘের আড়ালে তাদের কাছে আসবেন, তারপর সব কিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে? সমস্ত বিষয়ই আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
سَلْ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ كَمْ ءَاتَيْنَـٰهُم مِّنْ ءَايَةٍۭ بَيِّنَةٍۢ ۗ وَمَن يُبَدِّلْ نِعْمَةَ ٱللَّهِ مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ٢١١
আয়াত-২১১: বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস কর, আমি তাদের কত স্পষ্ট নিদর্শনাবলী দান করেছি। আর আল্লাহর অনুগ্রহ পৌছে যাওয়ার পর কেউ তার পরিবর্তন করলে আল্লাহর শাস্তি অতি কঠিন।
زُيِّنَ لِلَّذِينَ كَفَرُوا۟ ٱلْحَيَوٰةُ ٱلدُّنْيَا وَيَسْخَرُونَ مِنَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ۘ وَٱلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ فَوْقَهُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۗ وَٱللَّهُ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍۢ ٢١٢
আয়াত-২১২: পার্থিব জীবনকে কাফেরদের জন্য সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। তারা মু’মিনদের উপহাস করে। পক্ষান্তরে যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা সে কাফেরদের চেয়ে কেয়ামতের দিন উচ্চ মর্যাদায় থাকবে। আর যাকে ইচ্ছে আল্লাহ সীমাহীন জীবিকা দান করেন।
كَانَ ٱلنَّاسُ أُمَّةًۭ وَٰحِدَةًۭ فَبَعَثَ ٱللَّهُ ٱلنَّبِيِّـۧنَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ ٱلنَّاسِ فِيمَا ٱخْتَلَفُوا۟ فِيهِ ۚ وَمَا ٱخْتَلَفَ فِيهِ إِلَّا ٱلَّذِينَ أُوتُوهُ مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَـٰتُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْ ۖ فَهَدَى ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لِمَا ٱخْتَلَفُوا۟ فِيهِ مِنَ ٱلْحَقِّ بِإِذْنِهِۦ ۗ وَٱللَّهُ يَهْدِى مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٍۢ مُّسْتَقِيمٍ ٢١٣
আয়াত-২১৩: সকল মানুষ একই উম্মত ছিল। তারপর আল্লাহ নবীদের পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। আর তাদের সাথে সত্যসহ কিতাব নাযিল করলেন যাতে মানুষের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছিল তার মীমাংসা করতে পারেন। বস্তুত কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি, বরং স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারাই করেছে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল। মু’মিনরা যে সত্য সম্বন্ধে মতভেদ করত, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সে ব্যাপারে হেদায়াত প্রদান করেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন।
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا۟ ٱلْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ ٱلَّذِينَ خَلَوْا۟ مِن قَبْلِكُم ۖ مَّسَّتْهُمُ ٱلْبَأْسَآءُ وَٱلضَّرَّآءُ وَزُلْزِلُوا۟ حَتَّىٰ يَقُولَ ٱلرَّسُولُ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ مَعَهُۥ مَتَىٰ نَصْرُ ٱللَّهِ ۗ أَلَآ إِنَّ نَصْرَ ٱللَّهِ قَرِيبٌۭ ٢١٤
আয়াত-২১৪: তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা বেহেশতে চলে যাবে, যদিও এখনও তোমরা তাদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে? তাদের উপর পতিত হয়েছিল অর্থ-সংকট ও দুঃখ-ক্লেশ। তারা এমনভাবে ভীত-শিহরিত হয়েছিল। যে, রাসূল এবং তার সাথে যারা ঈমান এনেছিল তাদের বলতে হয়েছিলঃ কখন আসবে। আল্লাহর সাহায্য? হাঁ, আল্লাহর সাহায্য একান্তই কাছে।
يَسْـَٔلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ ۖ قُلْ مَآ أَنفَقْتُم مِّنْ خَيْرٍۢ فَلِلْوَٰلِدَيْنِ وَٱلْأَقْرَبِينَ وَٱلْيَتَـٰمَىٰ وَٱلْمَسَـٰكِينِ وَٱبْنِ ٱلسَّبِيلِ ۗ وَمَا تَفْعَلُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌۭ ٢١٥
আয়াত-২১৫: তারা তোমার কাছে জিজ্ঞেস করেঃ কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাওঃ যা কিছুই তোমরা ব্যয় করবে তা হবে পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরদের জন্য। আর তোমরা যা কিছু উত্তম কাজ কর না কেন, আল্লাহ তা সম্যক অবহিত।
كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌۭ لَّكُمْ ۖ وَعَسَىٰٓ أَن تَكْرَهُوا۟ شَيْـًۭٔا وَهُوَ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ وَعَسَىٰٓ أَن تُحِبُّوا۟ شَيْـًۭٔا وَهُوَ شَرٌّۭ لَّكُمْ ۗ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ٢١٦
আয়াত-২১৬: তোমাদের উপর যুদ্ধ অবধারিত করা হল, যদিও তা তোমাদের কাছে অপ্রিয়। আর হয়ত কোন একটা বিষয় তোমাদের কাছে অপ্রিয় মনে হয়, অথচ আসলে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং হয়তবা কোন বিষয় তোমাদের কাছে প্রিয় মনে হয়, আসলে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلشَّهْرِ ٱلْحَرَامِ قِتَالٍۢ فِيهِ ۖ قُلْ قِتَالٌۭ فِيهِ كَبِيرٌۭ ۖ وَصَدٌّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَكُفْرٌۢ بِهِۦ وَٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ وَإِخْرَاجُ أَهْلِهِۦ مِنْهُ أَكْبَرُ عِندَ ٱللَّهِ ۚ وَٱلْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ ٱلْقَتْلِ ۗ وَلَا يَزَالُونَ يُقَـٰتِلُونَكُمْ حَتَّىٰ يَرُدُّوكُمْ عَن دِينِكُمْ إِنِ ٱسْتَطَـٰعُوا۟ ۚ وَمَن يَرْتَدِدْ مِنكُمْ عَن دِينِهِۦ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌۭ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَـٰلُهُمْ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَـٰبُ ٱلنَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَـٰلِدُونَ ٢١٧
আয়াত-২১৭: তারা আপনাকে পবিত্র মাসে যুদ্ধ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, আপনি বলে দিনঃ তাতে যুদ্ধ করা ভীষণ পাপ। আর আল্লাহর পথে বাধা দেয়া, কুফরী করা, মাসজিদুল হারামে প্রবেশে বাধা দেয়া এবং সেখানকার বাসিন্দাদের সেখান থেকে বের করে দেয়া আল্লাহর কাছে তার চেয়ে বড় পাপ আর কিছু হতে পারে না। আর ফিতনা হত্যার চেয়ে মহাপাপ। তারা সর্বদা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে যাতে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে, যদি তারা তাতে সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দ্বীন থেকে ফিরে যাবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের যাবতীয় কর্ম বিনষ্ট হয়ে যাবে। এরাই দোযখের বাসিন্দা, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَٱلَّذِينَ هَاجَرُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ أُو۟لَـٰٓئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ ٱللَّهِ ۚ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ٢١٨
আয়াত-২১৮: নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং যারা হিজরত করেছে এবং যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে তারাই আল্লাহর রহমত প্রত্যাশা করে। আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْخَمْرِ وَٱلْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَآ إِثْمٌۭ كَبِيرٌۭ وَمَنَـٰفِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَآ أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا ۗ وَيَسْـَٔلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلِ ٱلْعَفْوَ ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمُ ٱلْـَٔايَـٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ ٢١٩
আয়াত-২১৯: তারা আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুনঃ এ দুয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ, তবে মানুষের জন্য উপকারও আছে, কিন্তু এগুলোর পাপ উপকারের চেয়ে অনেক বড়। তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? আপনি বলুনঃ প্রয়োজন পূরণের পর যা বাচে তা। এভাবে আল্লাহ তার নির্দেশসমূহ সুস্পষ্টরূপে তোমাদের জন্য বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার__
فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ ۗ وَيَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْيَتَـٰمَىٰ ۖ قُلْ إِصْلَاحٌۭ لَّهُمْ خَيْرٌۭ ۖ وَإِن تُخَالِطُوهُمْ فَإِخْوَٰنُكُمْ ۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ ٱلْمُفْسِدَ مِنَ ٱلْمُصْلِحِ ۚ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ لَأَعْنَتَكُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌۭ ٢٢٠
আয়াত-২২০: দুনিয়া ও আখেরাত সম্বন্ধে। তারা আপনাকে এতিমদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুন: তাদের সুব্যবস্থা করা উত্তম। তবে যদি তোমরা তাদের সাথে মিলেমিশে একত্রে থাক তাহলে মনে করবে তারা তো তোমাদের ভাই। আর আল্লাহ জানেন কে ফাসাদ সৃষ্টিকারী এবং কে মঙ্গলকামী। আর আল্লাহ ইচ্ছে করলে তোমাদের কষ্টে ফেলতে পারতেন। নিশ্চয় আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী, মহাপ্রাজ্ঞ।
وَلَا تَنكِحُوا۟ ٱلْمُشْرِكَـٰتِ حَتَّىٰ يُؤْمِنَّ ۚ وَلَأَمَةٌۭ مُّؤْمِنَةٌ خَيْرٌۭ مِّن مُّشْرِكَةٍۢ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ ۗ وَلَا تُنكِحُوا۟ ٱلْمُشْرِكِينَ حَتَّىٰ يُؤْمِنُوا۟ ۚ وَلَعَبْدٌۭ مُّؤْمِنٌ خَيْرٌۭ مِّن مُّشْرِكٍۢ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ ۗ أُو۟لَـٰٓئِكَ يَدْعُونَ إِلَى ٱلنَّارِ ۖ وَٱللَّهُ يَدْعُوٓا۟ إِلَى ٱلْجَنَّةِ وَٱلْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِۦ ۖ وَيُبَيِّنُ ءَايَـٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ ٢٢١
আয়াত-২২১: তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে কর না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। মু’মিন ক্রীতদাসী মুশরিক নারীর চেয়ে উত্তম যদিও মুশরিক নারী তোমাদের ভাল লাগে। তোমরা বিয়ে দিও না তোমাদের নারীদের মুশরিক পুরুষদের সাথে যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। একজন মু’মিন ক্রীতদাস একজন মুশরিকের চেয়ে অবশ্যই উত্তম যদিও সে তোমাদের মোহিত করে। তারা দোযখের দিকে ডাকে এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। আর তিনি মানুষের জন্য স্বীয় বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَيَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًۭى فَٱعْتَزِلُوا۟ ٱلنِّسَآءَ فِى ٱلْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلْمُتَطَهِّرِينَ ٢٢٢
আয়াত-২২২: তারা আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে রক্তস্রাব সম্বন্ধে। আপনি বলুনঃ তা অশুচি। কাজেই রক্তস্রাব অবস্থায় তোমরা স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাকবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না। সুতরাং যখন তারা উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হবে তখন তোমরা তাদের কাছে ঠিক সেভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ তোমাদের আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন।
نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌۭ لَّكُمْ فَأْتُوا۟ حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ ۖ وَقَدِّمُوا۟ لِأَنفُسِكُمْ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّكُم مُّلَـٰقُوهُ ۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ ٢٢٣
আয়াত-২২৩: তোমাদের স্ত্রীরা হল তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেভাবে ইচ্ছে তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে গমন করতে পার। তবে তোমরা নিজেদের জন্য কিছু অগ্রিম ব্যবস্থা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদের সাক্ষাত হবেই এবং মুমিনদের সুসংবাদ দাও।
وَلَا تَجْعَلُوا۟ ٱللَّهَ عُرْضَةًۭ لِّأَيْمَـٰنِكُمْ أَن تَبَرُّوا۟ وَتَتَّقُوا۟ وَتُصْلِحُوا۟ بَيْنَ ٱلنَّاسِ ۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ٢٢٤
আয়াত-২২৪: তোমরা নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না সৎকাজ থেকে, আত্মসংযম থেকে এবং মানুষের মাঝে মীমাংসা করে দেয়া থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
لَّا يُؤَاخِذُكُمُ ٱللَّهُ بِٱللَّغْوِ فِىٓ أَيْمَـٰنِكُمْ وَلَـٰكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا كَسَبَتْ قُلُوبُكُمْ ۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ حَلِيمٌۭ ٢٢٥
আয়াত-২২৫: তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদের ধরবেন না; তিনি তোমাদের পাকড়াও করবেন তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ১৭৬-২০০)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ نَزَّلَ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ ۗ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ ٱخْتَلَفُوا۟ فِى ٱلْكِتَـٰبِ لَفِى شِقَاقٍۭ بَعِيدٍۢ ١٧٦
আয়াত-১৭৬: আর এটা এ কারণে যে, আল্লাহ সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছেন। আর যারা কিতাবে মতভেদ সৃষ্টি করেছে নিশ্চয় তারা সুদূরপ্রসারী মতবিরোধের মধ্যে নিপতিত রয়েছে।
لَّيْسَ ٱلْبِرَّ أَن تُوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ ٱلْمَشْرِقِ وَٱلْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ ٱلْبِرَّ مَنْ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةِ وَٱلْكِتَـٰبِ وَٱلنَّبِيِّـۧنَ وَءَاتَى ٱلْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ ذَوِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَـٰمَىٰ وَٱلْمَسَـٰكِينَ وَٱبْنَ ٱلسَّبِيلِ وَٱلسَّآئِلِينَ وَفِى ٱلرِّقَابِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَـٰهَدُوا۟ ۖ وَٱلصَّـٰبِرِينَ فِى ٱلْبَأْسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ وَحِينَ ٱلْبَأْسِ ۗ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ صَدَقُوا۟ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُتَّقُونَ ١٧٧
আয়াত-১৭৭: কোন পুণ্য নেই পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে; কিন্তু পুণ্য আছে কেউ ঈমান আনলে আল্লাহর উপর, আখেরাতের উপর, ফেরেশতাগণের উপর, সকল কিতাবের উপর, আর সকল নবী-রাসূলগণের উপর, এবং অর্থ দান করলে আল্লাহুপ্রেমে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকীন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী এবং দাস মুক্তির জন্য; সালাত কায়েম করলে, যাকাত দিলে, কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলে আর অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধ-বিভ্রাটে ধৈর্যধারণ করলে। এরাই হল প্রকৃত সত্যপরায়ণ, আর এরাই মোত্তাকী।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلْقِصَاصُ فِى ٱلْقَتْلَى ۖ ٱلْحُرُّ بِٱلْحُرِّ وَٱلْعَبْدُ بِٱلْعَبْدِ وَٱلْأُنثَىٰ بِٱلْأُنثَىٰ ۚ فَمَنْ عُفِىَ لَهُۥ مِنْ أَخِيهِ شَىْءٌۭ فَٱتِّبَاعٌۢ بِٱلْمَعْرُوفِ وَأَدَآءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَـٰنٍۢ ۗ ذَٰلِكَ تَخْفِيفٌۭ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌۭ ۗ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ١٧٨
আয়াত–১৭৮: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য নিহতদের ব্যাপারে কিসাসের বিধান দেয়া হল, স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের তরফ থেকে কাউকে কিছু মাফ করে দেয়া হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করতে হবে এবং সততার সাথে তা তাকে প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে ভার লাঘব ও বিশেষ রহমত। এরপরও যে কেউ বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَلَكُمْ فِى ٱلْقِصَاصِ حَيَوٰةٌۭ يَـٰٓأُو۟لِى ٱلْأَلْبَـٰبِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ١٧٩
আয়াত–১৭৯: হে বুদ্ধিমানগণ! তোমাদের জন্য কিসাসের মধ্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।
كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلْمَوْتُ إِن تَرَكَ خَيْرًا ٱلْوَصِيَّةُ لِلْوَٰلِدَيْنِ وَٱلْأَقْرَبِينَ بِٱلْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى ٱلْمُتَّقِينَ ١٨٠
আয়াত-১৮০: যখন তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয় সে যদি কিছু ধন-সম্পত্তি রেখে যায়, তবে তার জন্য ইনসাফের সাথে পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়দের জন্য অসিয়ত করা বিধিবদ্ধ করা হল। মোত্তাকীদের জন্য এটি একটি কর্তব্য।
فَمَنۢ بَدَّلَهُۥ بَعْدَ مَا سَمِعَهُۥ فَإِنَّمَآ إِثْمُهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ يُبَدِّلُونَهُۥٓ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ١٨١
আয়াত-১৮১: যদি তা শোনার পর কেউ তাতে কোন রকম পরিবর্তন করে, তবে যারা পরিবর্তন করবে তাদের উপর এর পাপ বর্তাবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
فَمَنْ خَافَ مِن مُّوصٍۢ جَنَفًا أَوْ إِثْمًۭا فَأَصْلَحَ بَيْنَهُمْ فَلَآ إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٨٢
আয়াত – ১৮২: হাঁ, কেউ যদি আসিয়তকারীর পক্ষ থেকে কোন রকমের পক্ষপাতিত্বের কিংবা কোন অপরাধমূলক সিদ্ধান্তের আশংকা করে এবং তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তবে তার উপর কোন পাপ বর্তাবে না। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ١٨٣
আয়াত –১৮৩: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হল যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববতী লোকদের উপর, যেন তোমরা মোত্তাকী হতে পার__
أَيَّامًۭا مَّعْدُودَٰتٍۢ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ فَعِدَّةٌۭ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدْيَةٌۭ طَعَامُ مِسْكِينٍۢ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًۭا فَهُوَ خَيْرٌۭ لَّهُۥ ۚ وَأَن تَصُومُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ١٨٤
আয়াত-১৮৪: নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে রোজার সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর রোজা যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক, তারা এর পরিবর্তে ফিদয়া দেবে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করে। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। যদি তোমরা রোজা রাখ; তবে তা হবে তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে।
شَهْرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلْقُرْءَانُ هُدًۭى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَـٰتٍۢ مِّنَ ٱلْهُدَىٰ وَٱلْفُرْقَانِ ۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ فَعِدَّةٌۭ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا۟ ٱلْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا۟ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ١٨٥
আয়াত-১৮৫: রমজান মাস, এ মাসেই কোরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়াত, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোজা রাখে। তবে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে রোজার সংখ্যা পূরণ করে দেবে। আল্লাহ চান তোমাদের জন্য সহজ করতে, তিনি এমন কিছু চান না যা তোমাদের জন্য কষ্টকর। যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার দরুন আল্লাহর মহিমা বর্ণনা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِى عَنِّى فَإِنِّى قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ ٱلدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا۟ لِى وَلْيُؤْمِنُوا۟ بِى لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ ١٨٦
আয়াত-১৮৬: আর আমার বান্দারা যখন আমার ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি তো আছি নিকটেই। আমি সাড়া দেই প্রার্থনাকারীর ডাকে যখন সে আমার কাছে প্রার্থনা করে। সুতরাং তারাও আমার হুকুম মান্য করুক এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌۭ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌۭ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَٱلْـَٔـٰنَ بَـٰشِرُوهُنَّ وَٱبْتَغُوا۟ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلْخَيْطُ ٱلْأَبْيَضُ مِنَ ٱلْخَيْطِ ٱلْأَسْوَدِ مِنَ ٱلْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا۟ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَـٰشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَـٰكِفُونَ فِى ٱلْمَسَـٰجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ ءَايَـٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ ١٨٧
আয়াত–১৮৭: তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সাথে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদের ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। তারপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর তোমরা যখন মসজিদে ইতিকাফ করবে তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করবে না। এগুলো আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সুতরাং এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে আল্লাহ তার নিদর্শনাবলী মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।
وَلَا تَأْكُلُوٓا۟ أَمْوَٰلَكُم بَيْنَكُم بِٱلْبَـٰطِلِ وَتُدْلُوا۟ بِهَآ إِلَى ٱلْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا۟ فَرِيقًۭا مِّنْ أَمْوَٰلِ ٱلنَّاسِ بِٱلْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ ١٨٨
আয়াত –১৮৮: তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের অর্থ-সম্পদ গ্রাস কর না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পথে গ্রাস করার জন্য বিচারকদের কাছে পেশ কর না।
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْأَهِلَّةِ ۖ قُلْ هِىَ مَوَٰقِيتُ لِلنَّاسِ وَٱلْحَجِّ ۗ وَلَيْسَ ٱلْبِرُّ بِأَن تَأْتُوا۟ ٱلْبُيُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَـٰكِنَّ ٱلْبِرَّ مَنِ ٱتَّقَىٰ ۗ وَأْتُوا۟ ٱلْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَٰبِهَا ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ١٨٩
আয়াত-১৮৯: তারা তোমার কাছে নতুন চাঁদের বিষয়ে জানতে চায়। বলে দাও; এটি মানুষের জন্য এবং হজ্জের জন্য সময় নির্ধারণ করার মাধ্যম। আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই, অবশ্য পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা কৃতকার্য হতে পার।
وَقَـٰتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يُقَـٰتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوٓا۟ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْمُعْتَدِينَ ١٩٠
আয়াত-১৯০: আর তোমরা যুদ্ধ কর আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে; অবশ্য বাড়াবাড়ি কর না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালবাসেন না।
وَٱقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ ۚ وَٱلْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ ٱلْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَـٰتِلُوهُمْ عِندَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَـٰتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِن قَـٰتَلُوكُمْ فَٱقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَآءُ ٱلْكَـٰفِرِينَ ١٩١
আয়াত-১৯১: আর যেখানে তাদের পাবে হত্যা করবে এবং যেখান থেকে তারা তোমাদের বের করেছে, তোমরা তাদের সেখান থেকে বের করবে। ফিত্না-ফাসাদ হল হত্যার চেয়েও গুরুতর। আর তোমরা তাদের সাথে মাসজিদুল হারামের কাছে যুদ্ধ করবে না যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে যুদ্ধ করে। তবে তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরা তাদের হত্যা করবে। এ হল কাফেরদের পরিণাম।
فَإِنِ ٱنتَهَوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٩٢
আয়াত-১৯২: আর তারা যদি বিরত থাকে, তবে আল্লাহ তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَقَـٰتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌۭ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ لِلَّهِ ۖ فَإِنِ ٱنتَهَوْا۟ فَلَا عُدْوَٰنَ إِلَّا عَلَى ٱلظَّـٰلِمِينَ ١٩٣
আয়াত-১৯৩: আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না ফেতনার অবসান হয় এবং দ্বীন শুধু আল্লাহর জন্য হয়। তারপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তবে সীমালংঘনকারীদের ছাড়া কাউকে জবরদস্তি করা চলবে না।
ٱلشَّهْرُ ٱلْحَرَامُ بِٱلشَّهْرِ ٱلْحَرَامِ وَٱلْحُرُمَـٰتُ قِصَاصٌۭ ۚ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱعْتَدُوا۟ عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلْمُتَّقِينَ ١٩٤
আয়াত-১৯৪: পবিত্র মাসই হল পবিত্র মাসের বদলা আর যাবতীয় পবিত্র বিষয় যার অবমাননা করা নিষিদ্ধ তার জন্য কিসাস। কাজেই যে কেউ তোমাদের উপর জবরদস্তি করবে তোমরাও তাদের উপর জবরদস্তি করবে, যেমন জবরদস্তি তারা তোমাদের উপর করেছে। এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ: আল্লাহ তো মোত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
وَأَنفِقُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلَا تُلْقُوا۟ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى ٱلتَّهْلُكَةِ ۛ وَأَحْسِنُوٓا۟ ۛ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُحْسِنِينَ ١٩٥
আয়াত –১৯৫: আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে এবং নিজের হাতে নিজেদের তোমরা ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কর না। আর তোমরা সৎকাজ কর। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।
وَأَتِمُّوا۟ ٱلْحَجَّ وَٱلْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا ٱسْتَيْسَرَ مِنَ ٱلْهَدْىِ ۖ وَلَا تَحْلِقُوا۟ رُءُوسَكُمْ حَتَّىٰ يَبْلُغَ ٱلْهَدْىُ مَحِلَّهُۥ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ بِهِۦٓ أَذًۭى مِّن رَّأْسِهِۦ فَفِدْيَةٌۭ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍۢ ۚ فَإِذَآ أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِٱلْعُمْرَةِ إِلَى ٱلْحَجِّ فَمَا ٱسْتَيْسَرَ مِنَ ٱلْهَدْىِ ۚ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَـٰثَةِ أَيَّامٍۢ فِى ٱلْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ ۗ تِلْكَ عَشَرَةٌۭ كَامِلَةٌۭ ۗ ذَٰلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُۥ حَاضِرِى ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ١٩٦
আয়াত-১৯৬: আর তোমরা পূর্ণ কর হজ্জ ও উমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে। কিন্তু যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানির জন্য যা কিছু সহজলভ্য তা-ই কোরবানি কর। কোরবানির পশু যথাস্থানে না পৌছা পর্যন্ত তোমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা মাথায় কোন কষ্ট থাকে তবে রোজা কিংবা সাদকা অথবা কোরবানি দিয়ে তার ফিদ̖য়া দেবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন তোমাদের মধ্যে যে কেউ হজ্জ ও উমরা একত্রে পালন করতে চায়, সে যা কিছু সহজলভ্য তা দিয়ে কোরবানি করবে। তবে যদি কেউ তা না পায় তাহলে সে হজ্জের সময় তিনদিন এবং ঘরে ফিরে যাবার পর সাতদিন, মোট দশদিন রোজা রাখবে। এ নির্দেশ তাদের জন্য যাদের পরিজনবর্গ মাসজিদে হারামের আশেপাশে বসবাস করে না। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ̖র আযাব অত্যন্ত কঠোর।
ٱلْحَجُّ أَشْهُرٌۭ مَّعْلُومَـٰتٌۭ ۚ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ ٱلْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِى ٱلْحَجِّ ۗ وَمَا تَفْعَلُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ يَعْلَمْهُ ٱللَّهُ ۗ وَتَزَوَّدُوا۟ فَإِنَّ خَيْرَ ٱلزَّادِ ٱلتَّقْوَىٰ ۚ وَٱتَّقُونِ يَـٰٓأُو۟لِى ٱلْأَلْبَـٰبِ ١٩٧
আয়াত-১৯৭: হজ্জের আছে কয়েকটি সুবিদিত মাস। এসব মাসে যে কেউ হজ্জ করা স্থির করবে, তার জন্য হজ্জের সময়ে স্ত্রী সহবাস, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ করা বৈধ নয়। আর তোমরা যা কিছু উত্তম কাজ কর আল্লাহ তা জানেন। এবং তোমরা পাথেয় সাথে নিও। তবে সর্বোত্তম পাথেয় হল তাক̖ওয়া। হে জ্ঞানবানরা তোমরা আমাকেই ভয় কর।
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَبْتَغُوا۟ فَضْلًۭا مِّن رَّبِّكُمْ ۚ فَإِذَآ أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَـٰتٍۢ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ عِندَ ٱلْمَشْعَرِ ٱلْحَرَامِ ۖ وَٱذْكُرُوهُ كَمَا هَدَىٰكُمْ وَإِن كُنتُم مِّن قَبْلِهِۦ لَمِنَ ٱلضَّآلِّينَ ١٩٨
আয়াত-১৯৮: তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় তোমাদের কোন পাপ নেই। তারপর যখন তোমরা আরাফাত থেকে ফিরে আসবে তখন মাশআরুল হারামের কাছে পৌছে আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং তাঁকে ঠিক সেভাবে স্মরণ করবে যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও ইতিপূর্বে তোমরা বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।
ثُمَّ أَفِيضُوا۟ مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ ٱلنَّاسُ وَٱسْتَغْفِرُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٩٩
আয়াত-১৯৯: তারপর তোমরা দ্রুতগতিতে সেখান থেকে ফিরে এস যেখান থেকে সবাই ফিরে এবং আল্লাহরই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَـٰسِكَكُمْ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَذِكْرِكُمْ ءَابَآءَكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًۭا ۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِى ٱلدُّنْيَا وَمَا لَهُۥ فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ مِنْ خَلَـٰقٍۢ ٢٠٠
আয়াত-২০০: আর যখন তোমরা হজ্জের যাবতীয় অনুষ্ঠান সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন তোমাদের বাপ-দাদাদের স্মরণ করতে, বরং তার চেয়েও অধিক স্মরণ করবে। আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে বলেঃ হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেই আমাদের দাও। বস্তুত আখেরাতে তার জন্য কোন অংশ নেই।
Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ১৫১-১৭৫)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
كَمَآ أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًۭا مِّنكُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْكُمْ ءَايَـٰتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا۟ تَعْلَمُونَ ١٥١
আয়াত-১৫১: যেমন, আমি পাঠিয়েছি তোমাদেরই মধ্য থেকে তোমাদের জন্য একজন রাসূল, যিনি আমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে তোমাদের শুনান, তোমাদের পবিত্র করেন, কেতাব ও হেকমত তোমাদের শিক্ষা দেন এবং তোমাদের এমন বিষয় শিক্ষা দেন যা তোমরা কখনো জানতে না।
فَٱذْكُرُونِىٓ أَذْكُرْكُمْ وَٱشْكُرُوا۟ لِى وَلَا تَكْفُرُونِ ١٥٢
আয়াত-১৫২: সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদের স্মরণ করব। আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, অকৃতজ্ঞ হয়ে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱسْتَعِينُوا۟ بِٱلصَّبْرِ وَٱلصَّلَوٰةِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّـٰبِرِينَ ١٥٣
আয়াত-১৫৩: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে। নিশ্চয় আল্লাহ রয়েছেন ধৈর্যশীলদের সাথে।
وَلَا تَقُولُوا۟ لِمَن يُقْتَلُ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ أَمْوَٰتٌۢ ۚ بَلْ أَحْيَآءٌۭ وَلَـٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ ١٥٤
আয়াত-১৫৪: আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদের মৃত বল না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা বুঝতে পার না।
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَىْءٍۢ مِّنَ ٱلْخَوْفِ وَٱلْجُوعِ وَنَقْصٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْوَٰلِ وَٱلْأَنفُسِ وَٱلثَّمَرَٰتِ ۗ وَبَشِّرِ ٱلصَّـٰبِرِينَ ١٥٥
আয়াত-১৫৫: আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের,
ٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَـٰبَتْهُم مُّصِيبَةٌۭ قَالُوٓا۟ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيْهِ رَٰجِعُونَ ١٥٦
আয়াত-১৫৬: যারা তাদের উপর যখন কোন বিপদ আপতিত হয় তখন বলেঃ আমরা তো আল্লাহরই জন্য এবং আমরা সবাই অবশ্যই তারই কাছে ফিরে যাব।
أُو۟لَـٰٓئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَٰتٌۭ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌۭ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُهْتَدُونَ ١٥٧
আয়াত-১৫৭: এরাই তারা যাদের প্রতি রয়েছে তাদের পালনকর্তার তরফ থেকে অশেষ অনুগ্রহ ও করুণা আর এরাই হল হেদায়াতপ্রাপ্ত।
إِنَّ ٱلصَّفَا وَٱلْمَرْوَةَ مِن شَعَآئِرِ ٱللَّهِ ۖ فَمَنْ حَجَّ ٱلْبَيْتَ أَوِ ٱعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًۭا فَإِنَّ ٱللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ ١٥٨
আয়াত-১৫৮: নিশ্চয় সাফা ও মারওয়া হল আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে কেউ কা’বা ঘরের হজ্জ বা উমরা পালন করে তার পক্ষে এ দুটির মধ্যে প্রদক্ষিণ করাতে কোন পাপ নেই। আর কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন নেক কাজ করলে আল্লাহ তার পুরষ্কার দেবেন তিনি সর্বজ্ঞ।
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَآ أَنزَلْنَا مِنَ ٱلْبَيِّنَـٰتِ وَٱلْهُدَىٰ مِنۢ بَعْدِ مَا بَيَّنَّـٰهُ لِلنَّاسِ فِى ٱلْكِتَـٰبِ ۙ أُو۟لَـٰٓئِكَ يَلْعَنُهُمُ ٱللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ ٱللَّـٰعِنُونَ ١٥٩
আয়াত-১৫৯: আমি যেসব স্পষ্ট নিদর্শন এবং হেদায়াত মানুষের জন্য নাযিল করেছি, কিতাবে তা বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও যারা তা গোপন করে, তাদের আল্লাহ অভিসম্পাত দেন এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীরাও তাদের অভিসম্পাত দেন।
إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُوا۟ وَأَصْلَحُوا۟ وَبَيَّنُوا۟ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۚ وَأَنَا ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ ١٦٠
আয়াত-১৬০: কিন্তু যারা তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে আর সুস্পষ্টভাবে যা গোপন করেছিল তা ব্যক্ত করে, এদেরই তওবা আমি কবুল করি, আর আমি তো পরম তওবা কবুলকারী, পুরম দয়ালু।
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَمَاتُوا۟ وَهُمْ كُفَّارٌ أُو۟لَـٰٓئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ ٱللَّهِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةِ وَٱلنَّاسِ أَجْمَعِينَ ١٦١
আয়াত-১৬১: নিশ্চয় যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সকল মানুষের অভিসম্পাত।
خَـٰلِدِينَ فِيهَا ۖ لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ ٱلْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ ١٦٢
আয়াত-১৬২: চিরকাল তারা অভিসম্পাতের মধ্যে থাকবে। তাদের শাস্তি কখনও হালকা করা হবে না। আর তাদের কোন বিরামও দেয়া হবে না।
وَإِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌۭ وَٰحِدٌۭ ۖ لَّآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلرَّحْمَـٰنُ ٱلرَّحِيمُ ١٦٣
আয়াত-১৬৩: আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ; তিনি ছাড়া কোন ইলাহা নেই; তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়ালু।
إِنَّ فِى خَلْقِ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَٱخْتِلَـٰفِ ٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ وَٱلْفُلْكِ ٱلَّتِى تَجْرِى فِى ٱلْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ ٱلنَّاسَ وَمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن مَّآءٍۢ فَأَحْيَا بِهِ ٱلْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٍۢ وَتَصْرِيفِ ٱلرِّيَـٰحِ وَٱلسَّحَابِ ٱلْمُسَخَّرِ بَيْنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ لَـَٔايَـٰتٍۢ لِّقَوْمٍۢ يَعْقِلُونَ ١٦٤
আয়াত-১৬৪: নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, মানুষের জন্য কল্যাণ সাধনকারী সমুদ্রে বিচরণশীল নৈাযানসমূহে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তা দিয়ে জমিনকে তার মৃত্যুর পর যে পুনরুজ্জীবিত করেন তাতে, সব ধরনের জীবজন্তু সেথায় বিস্তার করেন, বায়ুর দিক পরিবর্তনে এবং আসমান ও জমিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানবান লোকদের জন্য।
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادًۭا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ ٱللَّهِ ۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَشَدُّ حُبًّۭا لِّلَّهِ ۗ وَلَوْ يَرَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓا۟ إِذْ يَرَوْنَ ٱلْعَذَابَ أَنَّ ٱلْقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًۭا وَأَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعَذَابِ ١٦٥
আয়াত-১৬৫: মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে আল্লাহ ছাড়া অন্যকে তাঁর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে যেরূপ ভালবাসতে হয় সেরূপ তাদের ভালবাসে। কিন্তু যারা প্রকৃত ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসা দৃঢ়তম। শাস্তি প্রত্যক্ষ করার পর জালিমরা যেমন বুঝবে এখন যদি তারা তেমন বুঝত! নিশ্চয় সব শক্তি শুধু আল্লাহরই এবং আল্লাহ শাস্তি দানে অত্যন্ত কঠোর।
إِذْ تَبَرَّأَ ٱلَّذِينَ ٱتُّبِعُوا۟ مِنَ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوا۟ وَرَأَوُا۟ ٱلْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ ٱلْأَسْبَابُ ١٦٦
আয়াত-১৬৬: যাদের অনুসরণ করা হয়েছিল তারা যখন তাদের অনুসরণকারীদের সম্বন্ধে দায়িত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকার করবে এবং তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে ও তাদের মধ্যকার যাবতীয় সম্পর্ক বিছিন্ন হয়ে যাবে,
وَقَالَ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوا۟ لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةًۭ فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُوا۟ مِنَّا ۗ كَذَٰلِكَ يُرِيهِمُ ٱللَّهُ أَعْمَـٰلَهُمْ حَسَرَٰتٍ عَلَيْهِمْ ۖ وَمَا هُم بِخَـٰرِجِينَ مِنَ ٱلنَّارِ ١٦٧
আয়াত-১৬৭: এবং যারা অনুসরণ করেছিল তারা বলবেঃ হায়! যদি একবার আমাদের ফিরে যাবার সুযোগ দেয়া হত, তাহলে আমরাও তাদের অস্বীকার করে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমন তারা আমাদের সাথে করেছে। এভাবেই আল্লাহ তাদের কৃতকর্ম পরিতাপরূপে তাদের দেখাবেন; কিন্তু তারা কখনও আগুন থেকে বের হতে পারবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ كُلُوا۟ مِمَّا فِى ٱلْأَرْضِ حَلَـٰلًۭا طَيِّبًۭا وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَـٰنِ ۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّۭ مُّبِينٌ ١٦٨
আয়াত-১৬৮: হে মানুষ! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র বস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার কর আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
إِنَّمَا يَأْمُرُكُم بِٱلسُّوٓءِ وَٱلْفَحْشَآءِ وَأَن تَقُولُوا۟ عَلَى ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ ١٦٩
আয়াত-১৬৯: সে তো তোমাদের নির্দেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলতে বলে যা তোমরা জান না।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ٱتَّبِعُوا۟ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ قَالُوا۟ بَلْ نَتَّبِعُ مَآ أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ ءَابَآءَنَآ ۗ أَوَلَوْ كَانَ ءَابَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْـًۭٔا وَلَا يَهْتَدُونَ ١٧٠
আয়াত-১৭০: আর যখন তাদের বলা হয় তোমরা তা অনুসরণ কর যা আল্লাহ নাযিল করেছেন। তখন তারা বলে না, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের যাতে পেয়েছি তার অনুসরণ করব। এমনকি, যদিও তাদের বাপ-দাদারা কোন জ্ঞানই রাখত না এবং হেদায়াতপ্রাপ্তও ছিল না।
وَمَثَلُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ كَمَثَلِ ٱلَّذِى يَنْعِقُ بِمَا لَا يَسْمَعُ إِلَّا دُعَآءًۭ وَنِدَآءًۭ ۚ صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْىٌۭ فَهُمْ لَا يَعْقِلُونَ ١٧١
আয়াত-১৭১: যারা কুফরী করে তাদের উদাহরণ এমন, যেন কোন ব্যক্তি এমন কিছুকে ডাকে যা কোন কিছুই শোনে না হাক-ডাক আর চিকার ছাড়া বধির, মূক, অন্ধ। সুতরাং তারা কিছুই বুঝবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُلُوا۟ مِن طَيِّبَـٰتِ مَا رَزَقْنَـٰكُمْ وَٱشْكُرُوا۟ لِلَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ ١٧٢
আয়াত-১৭২: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আহার কর পবিত্র বস্তু থেকে যা আমি তোমাদের দান করেছি এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর যদি শুধু তারই বন্দেগী করে থাক।
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ ٱلْمَيْتَةَ وَٱلدَّمَ وَلَحْمَ ٱلْخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ بِهِۦ لِغَيْرِ ٱللَّهِ ۖ فَمَنِ ٱضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍۢ وَلَا عَادٍۢ فَلَآ إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌ ١٧٣
আয়াত-১৭৩: নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের মাংস এবং তা যার উপর জবাইর সময় আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে। কিন্তু যে ব্যক্তি অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমান ও সীমালংঘনকারী না হয়, তার কোন পাপ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَيَشْتَرُونَ بِهِۦ ثَمَنًۭا قَلِيلًا ۙ أُو۟لَـٰٓئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِى بُطُونِهِمْ إِلَّا ٱلنَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ١٧٤
আয়াত-১৭৪: নিশ্চয় যারা গোপন করে সেসব বিষয় যা আল্লাহ কিতাবে নাযিল করেছেন এবং বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা আগুন ছাড়া নিজেদের পেটে আর কিছুই পূর্ণ করছে না। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।
أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱشْتَرَوُا۟ ٱلضَّلَـٰلَةَ بِٱلْهُدَىٰ وَٱلْعَذَابَ بِٱلْمَغْفِرَةِ ۚ فَمَآ أَصْبَرَهُمْ عَلَى ٱلنَّارِ ١٧٥
আয়াত- ১৭৫: এরাই হল সে সকল লোক যারা হেদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী এবং ক্ষমার পরিবর্তে আযাব খরিদ করেছে। হায়! কতইনা ধৈর্যশীল তারা আগুনের উপর!