Surah Ali ‘Imran (76-100)

Surah Ali ‘Imran/ সূরা আলে-ইমরান

(আয়াত: ৭৬-১০০)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 

بَلَىٰ مَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِۦ وَٱتَّقَىٰ فَإِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُتَّقِينَ ٧٦

আয়াত-৭৬: হাঁ, অবশ্যই যে ব্যক্তি তার অঙ্গীকার পালন করে এবং আল্লাহকে ভয় করে চলে, তবে তো এরূপ মোত্তাকীদের আল্লাহ̖ ভালবাসেন।

إِنَّ ٱلَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ ٱللَّهِ وَأَيْمَـٰنِهِمْ ثَمَنًۭا قَلِيلًا أُو۟لَـٰٓئِكَ لَا خَلَـٰقَ لَهُمْ فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ ٱللَّهُ وَلَا يَنظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ٧٧

আয়াত-৭৭: নিশ্চয় যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদার পরিবর্তে এবং নিজেদের শপথের পরিবর্তে সামান্য বিনিময় গ্রহণ করে তাদের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই। আর কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে করুণার দৃষ্টিতে তাকাবেন না এবং তাদের পরিশুদ্ধও করবেন না; তাদের জন্য নির্ধারিত আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًۭا يَلْوُۥنَ أَلْسِنَتَهُم بِٱلْكِتَـٰبِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ ٱلْكِتَـٰبِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ ٧٨

আয়াত-৭৮: আর তাদের মধ্যে তো একদল লোক এমন আছে যারা নিজেদের জিহবা বাঁকা করে কিতাব পাঠ করে যাতে তোমরা মনে কর যে, তা কিতাবেরই অংশ, অথচ তা কিতাবের অংশ নয়। আর তারা বলেঃ “এসব আল্লাহর তরফ থেকে”, আসলে তা আল্লাহর তরফ থেকে নয়। তারা জেনে-শুনে আল্লাহ̖র প্রতি মিথ্যা আরোপ করে।

مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُؤْتِيَهُ ٱللَّهُ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْحُكْمَ وَٱلنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا۟ عِبَادًۭا لِّى مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَـٰكِن كُونُوا۟ رَبَّـٰنِيِّـۧنَ بِمَا كُنتُمْ تُعَلِّمُونَ ٱلْكِتَـٰبَ وَبِمَا كُنتُمْ تَدْرُسُونَ ٧٩

আয়াত-৭৯: কোন মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হেকমত ও নবুওত দান করবেন তারপর সে লোকদের বলবেঃ “তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে আমার বান্দা হয়ে যাও।” বরং সে বলবেঃ “তোমরা আল্লাহওয়ালা হয়ে যাও, এজন্য যে, তোমরা শেখাও কিতাব এবং নিজেরাও পাঠ কর।”

وَلَا يَأْمُرَكُمْ أَن تَتَّخِذُوا۟ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةَ وَٱلنَّبِيِّـۧنَ أَرْبَابًا ۗ أَيَأْمُرُكُم بِٱلْكُفْرِ بَعْدَ إِذْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ ٨٠

আয়াত-৮০: সে তোমাদের আদেশ দেবে না যে, তোমরা ফেরেশতাদের এবং নবীদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ কর। সে কি তোমাদের নির্দেশ দেবে কুফরীর, এ অবস্থায় যে, তোমরা মুসলিম?

وَإِذْ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَـٰقَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ لَمَآ ءَاتَيْتُكُم مِّن كِتَـٰبٍۢ وَحِكْمَةٍۢ ثُمَّ جَآءَكُمْ رَسُولٌۭ مُّصَدِّقٌۭ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِۦ وَلَتَنصُرُنَّهُۥ ۚ قَالَ ءَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَىٰ ذَٰلِكُمْ إِصْرِى ۖ قَالُوٓا۟ أَقْرَرْنَا ۚ قَالَ فَٱشْهَدُوا۟ وَأَنَا۠ مَعَكُم مِّنَ ٱلشَّـٰهِدِينَ ٨١

আয়াত-৮১: আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন নবীদের কাছ থেকে যে, যা কিছু আমি তোমাদের কিতাব ও হেকমত দিয়েছি এবং তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে যখন একজন রাসূল আসবে তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এ বিষয়ে আমার অঙ্গীকার কবুল করলে? তারা বললঃ আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা সাক্ষী থেক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষীদের অন্তর্ভুক্ত রইলাম।

فَمَن تَوَلَّىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْفَـٰسِقُونَ ٨٢

আয়াত-৮২: এরপর যারা মুখ ফিরিয়ে নেবে তারাই হবে নাফরমান।

أَفَغَيْرَ دِينِ ٱللَّهِ يَبْغُونَ وَلَهُۥٓ أَسْلَمَ مَن فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ طَوْعًۭا وَكَرْهًۭا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ ٨٣

আয়াত-৮৩: তবে কি তারা আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন অন্বেষণ করে? অথচ তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে স্বেচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় এবং তারই দিকে তারা সবাই প্রত্যাবর্তিত হবে।

قُلْ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَآ أُنزِلَ عَلَيْنَا وَمَآ أُنزِلَ عَلَىٰٓ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْمَـٰعِيلَ وَإِسْحَـٰقَ وَيَعْقُوبَ وَٱلْأَسْبَاطِ وَمَآ أُوتِىَ مُوسَىٰ وَعِيسَىٰ وَٱلنَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍۢ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُۥ مُسْلِمُونَ ٨٤

আয়াত-৮৪: বলুনঃ আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং আমাদের উপর যা কিছু নাযিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা কিছু নাযিল হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তার সন্তানদের উপর এবং যা কিছু প্রদান করা হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীদের তাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। আর আমরা তারই জন্য নিবেদিত আত্মসমর্পণকারী।

وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ ٱلْإِسْلَـٰمِ دِينًۭا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ مِنَ ٱلْخَـٰسِرِينَ ٨٥

আয়াত-৮৫: যে কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন অন্বেষণ করবে, কখনও তা তার থেকে কবুল করা হবে না; আর আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।

كَيْفَ يَهْدِى ٱللَّهُ قَوْمًۭا كَفَرُوا۟ بَعْدَ إِيمَـٰنِهِمْ وَشَهِدُوٓا۟ أَنَّ ٱلرَّسُولَ حَقٌّۭ وَجَآءَهُمُ ٱلْبَيِّنَـٰتُ ۚ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ ٨٦

আয়াত-৮৬: কিরূপে আল্লাহ এমন জাতিকে সৎপথে পরিচালিত করবেন যারা কুফরী করে তাদের ঈমান আনার পর এবং রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ার পর আর তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর? আল্লাহ জালিম কওমকে হেদায়াত দান করেন না।

أُو۟لَـٰٓئِكَ جَزَآؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ ٱللَّهِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةِ وَٱلنَّاسِ أَجْمَعِينَ ٨٧

আয়াত-৮৭: এরূপ লোকদের কৃতকর্মের প্রতিফল হল এই যে, নিশ্চয়ই তাদের প্রতি লা’নত আল্লাহর, ফেরেশতাদের এবং মানুষ সকলেরই।

خَـٰلِدِينَ فِيهَا لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ ٱلْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ ٨٨

আয়াত-৮৮: তারা অনন্তকাল এ লানতে থাকবে; তাদের আযাব হালকা করা হবে না এবং তাদের বিরামও দেয়া হবে না।

إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُوا۟ مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌ ٨٩

আয়াত-৮৯: তবে তাদের ব্যতিরেকে যারা এরপর তওবা করে নেয় এবং নিজেদের সংশোধন করে নেয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بَعْدَ إِيمَـٰنِهِمْ ثُمَّ ٱزْدَادُوا۟ كُفْرًۭا لَّن تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلضَّآلُّونَ ٩٠

আয়াত-৯০: অবশ্য যারা কুফরী করে তাদের ঈমান আনার পর এবং বৃদ্ধি পেতে থাকে তাদের কুফরী প্রবৃত্তি, কখনও কবুল করা হবে না তাদের তওবা। এরাই প্রকৃত গোমরাহ।

إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَمَاتُوا۟ وَهُمْ كُفَّارٌۭ فَلَن يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِم مِّلْءُ ٱلْأَرْضِ ذَهَبًۭا وَلَوِ ٱفْتَدَىٰ بِهِۦٓ ۗ أُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِينَ ٩١

আয়াত-৯১: নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায়ই যাদের মৃত্যু ঘটেছে, তাদের কারো কাছ থেকে পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণও কখনো কবুল করা হবে না, যদিও তারা তা কুফরীর বিনিময় দিতে চায়। এদেরই জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থাকবে না এদের জন্য কোন সাহায্যকারী।

لَن تَنَالُوا۟ ٱلْبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُوا۟ مِمَّا تُحِبُّونَ ۚ وَمَا تُنفِقُوا۟ مِن شَىْءٍۢ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٌۭ ٩٢

আয়াত-৯২: তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না যে পর্যন্ত না নিজেদের প্রিয়বস্তু থেকে ব্যয় করবে, আর যা কিছু তোমরা ব্যয় কর, আল্লাহ তো তা খুব জানেন।

 كُلُّ ٱلطَّعَامِ كَانَ حِلًّۭا لِّبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ إِلَّا مَا حَرَّمَ إِسْرَٰٓءِيلُ عَلَىٰ نَفْسِهِۦ مِن قَبْلِ أَن تُنَزَّلَ ٱلتَّوْرَىٰةُ ۗ قُلْ فَأْتُوا۟ بِٱلتَّوْرَىٰةِ فَٱتْلُوهَآ إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ ٩٣

আয়াত-৯৩: সব খাদ্যই বনী ইসরাঈলের জন্য হালাল ছিল তাছাড়া, যা ইয়াকুব নিজের জন্য হারাম করেছিল তাওরাত নাযিল হওয়ার পূর্বে। বলুন, তাওরাত নিয়ে এস এবং তা পাঠ কর যদি তোমরা সত্যবাদী হও।

فَمَنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ ٩٤

আয়াত-৯৪: সুতরাং এরপরও যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করবে তারাই প্রকৃত জালিম।

قُلْ صَدَقَ ٱللَّهُ ۗ فَٱتَّبِعُوا۟ مِلَّةَ إِبْرَٰهِيمَ حَنِيفًۭا وَمَا كَانَ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ ٩٥

আয়াত-৯৫: বলুন, আল্লাহ সত্য বলেছেন। অতএব তোমরা মিল্লাতে ইব্রাহীমের অনুসরণ কর, যাতে কোন বক্রতা নেই। ইব্রাহীম মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍۢ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِى بِبَكَّةَ مُبَارَكًۭا وَهُدًۭى لِّلْعَـٰلَمِينَ ٩٦

আয়াত-৯৬: নিশ্চয় সর্বপ্রথম যে ঘর মানুষের জন্য স্থাপিত হয়েছিল তা তো সে ঘর যা মক্কায় অবস্থিত যা বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়াত।

فِيهِ ءَايَـٰتٌۢ بَيِّنَـٰتٌۭ مَّقَامُ إِبْرَٰهِيمَ ۖ وَمَن دَخَلَهُۥ كَانَ ءَامِنًۭا ۗ وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلْبَيْتِ مَنِ ٱسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًۭا ۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِىٌّ عَنِ ٱلْعَـٰلَمِينَ ٩٧

আয়াত-৯৭: এতে রয়েছে অনেক প্রকাশ্য নিদর্শন, মাকামে ইব্রাহীম’ তার অন্যতম। যে কেউ এ ঘরে প্রবেশ করে সে নিরাপদ হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে তার উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্জ করা ফরয যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে। কিন্তু কেউ কুফরী করলে সে জেনে রাখুক নিশ্চয় আল্লাহ্ সারাজাহান থেকে বেনিয়াজ__অমুখাপেক্ষী।

قُلْ يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ لِمَ تَكْفُرُونَ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ وَٱللَّهُ شَهِيدٌ عَلَىٰ مَا تَعْمَلُونَ ٩٨

আয়াত-৯৮: বলুন, হে আহলে কিতাব! কেন তোমরা আল্লাহর এ আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান কর? তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তার সাক্ষী।

قُلْ يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ لِمَ تَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ مَنْ ءَامَنَ تَبْغُونَهَا عِوَجًۭا وَأَنتُمْ شُهَدَآءُ ۗ وَمَا ٱللَّهُ بِغَـٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ ٩٩

আয়াত-৯৯: বলুন, হে আহলে কিতাব! কেন তোমরা তাদের আল্লাহর পথে বাধা দাও, যারা ঈমান এনেছে, তাতে বক্রতা অনুপ্রবেশ করানোর পন্থা অন্বেষণ করে, অথচ তোমরা এর সত্যতার সাক্ষ্য বহনকারী। আর তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ বেখবর নন।

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِن تُطِيعُوا۟ فَرِيقًۭا مِّنَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ يَرُدُّوكُم بَعْدَ إِيمَـٰنِكُمْ كَـٰفِرِينَ ١٠٠

আয়াত-১০০: হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যদি আহলে কিতাবের কোন দলের কথা মান, তবে তারা তোমাদের ঈমান আনার পর আবার কাফেরে পরিণত করে দেবে।

Surah Ali ‘Imran (51-75)

Surah Ali ‘Imran/ সূরা আলে-ইমরান

(আয়াত: ৫১-৭৫)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 

إِنَّ ٱللَّهَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۗ هَـٰذَا صِرَٰطٌۭ مُّسْتَقِيمٌۭ ٥١

আয়াত-৫১: নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা এবং তোমাদেরও পালনকর্তা। সুতরাং তোমরা তারই ইবাদত কর। এটাই সরল-সঠিক পথ।

 فَلَمَّآ أَحَسَّ عِيسَىٰ مِنْهُمُ ٱلْكُفْرَ قَالَ مَنْ أَنصَارِىٓ إِلَى ٱللَّهِ ۖ قَالَ ٱلْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَٱشْهَدْ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ ٥٢

আয়াত-৫২: তারপর যখন ঈসা তাদের মধ্যে কুফরী উপলব্ধি করতে পারল তখন সে বললঃ কেউ কি আছে যে আল্লাহর পথে আমার সাহায্যকারী হবে? সঙ্গী-সাথীরা বললঃ আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। আমরা তো আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলিম-আত্মসমর্পণকারী।

رَبَّنَآ ءَامَنَّا بِمَآ أَنزَلْتَ وَٱتَّبَعْنَا ٱلرَّسُولَ فَٱكْتُبْنَا مَعَ ٱلشَّـٰهِدِينَ ٥٣

আয়াত-৫৩: হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি যা নাযিল করেছ আমরা তাতে ঈমান এনেছি এবং আনুগত্য করেছি রাসূলের। সুতরাং তুমি আমাদের সাক্ষ্য বহনকারীদের তালিকাভুক্ত করে নাও।

وَمَكَرُوا۟ وَمَكَرَ ٱللَّهُ ۖ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلْمَـٰكِرِينَ ٥٤

আয়াত-৫৪: আর তারা গোপন ষড়যন্ত্র করেছিল এবং আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করলেন। বস্তুত আল্লাহ হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।

إِذْ قَالَ ٱللَّهُ يَـٰعِيسَىٰٓ إِنِّى مُتَوَفِّيكَ وَرَافِعُكَ إِلَىَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَجَاعِلُ ٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوكَ فَوْقَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓا۟ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۖ ثُمَّ إِلَىَّ مَرْجِعُكُمْ فَأَحْكُمُ بَيْنَكُمْ فِيمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ ٥٥

আয়াত-৫৫: স্বরণ কর, যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা। অবশ্যই আমি তোমার কাল পূর্ণ করব, তোমাকে আমার দিকে তুলে নেব এবং যারা কুফর করেছে তাদের থেকে তোমাকে পবিত্র ও মুক্ত করব। আর যারা প্রকৃতভাবে তোমার অনুসরণ করবে কেয়ামত পর্যন্ত তাদের আমি কাফেরদের উপর স্থান দেব। অতঃপর আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে। তখন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করতে, আমি তোমাদের মধ্যে তার মীমাংসা করে দেব।

فَأَمَّا ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فَأُعَذِّبُهُمْ عَذَابًۭا شَدِيدًۭا فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِينَ ٥٦

আয়াত-৫৬: অতএব যারা কুফরী করেছে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের কঠোর শাস্তি দেব, আর তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।

وَأَمَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ فَيُوَفِّيهِمْ أُجُورَهُمْ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ ٱلظَّـٰلِمِينَ ٥٧

আয়াত-৫৭: আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তিনি তাদের পুরোপুরি দেবেন তাদের প্রতিফল। আল্লাহ জালিমদের ভালবাসেন না।

ذَٰلِكَ نَتْلُوهُ عَلَيْكَ مِنَ ٱلْـَٔايَـٰتِ وَٱلذِّكْرِ ٱلْحَكِيمِ ٥٨

আয়াত-৫৮: এসব যা আমি তোমার কাছে পাঠ করি, তা নিদর্শন ও জ্ঞানগর্ভ।

إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَ ۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابٍۢ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٥٩

আয়াত-৫৯: নিশ্চয় আল্লাহর কাছে ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তের মত। তিনি আদমকে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন, তারপর তাকে বলেছিলেনঃ হয়ে যাও; তখনই সে হয়ে গেল।

ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْمُمْتَرِينَ ٦٠

আয়াত-৬০: এ সত্য তোমার পালনকর্তার তরফ থেকে, সুতরাং সন্দেহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে না।

فَمَنْ حَآجَّكَ فِيهِ مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ ٱلْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا۟ نَدْعُ أَبْنَآءَنَا وَأَبْنَآءَكُمْ وَنِسَآءَنَا وَنِسَآءَكُمْ وَأَنفُسَنَا وَأَنفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَل لَّعْنَتَ ٱللَّهِ عَلَى ٱلْكَـٰذِبِينَ ٦١

আয়াত-৬১: যে কেউ তোমার সাথে ঈসা সম্বন্ধে বিতর্ক করে তোমার কাছে জ্ঞান আসার পরেও, তাকে বলে দাও; এস আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের এবং আমাদের নিজেদের ও তোমাদের নিজেদের, তারপর সবাই মিলে বিনীতভাবে প্রার্থনা করি আর মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা’নত দেই।

إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلْقَصَصُ ٱلْحَقُّ ۚ وَمَا مِنْ إِلَـٰهٍ إِلَّا ٱللَّهُ ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ٦٢

আয়াত-৬২: নিশ্চয়ই এ বর্ণনা অতি সত্য বৃত্তান্ত একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ উপাস্য নেই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।

فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌۢ بِٱلْمُفْسِدِينَ ٦٣

আয়াত-৬৩: এরপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আল্লাহ তো ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে সম্যক অবহিত।

قُلْ يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ تَعَالَوْا۟ إِلَىٰ كَلِمَةٍۢ سَوَآءٍۭ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِۦ شَيْـًۭٔا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًۭا مِّن دُونِ ٱللَّهِ ۚ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَقُولُوا۟ ٱشْهَدُوا۟ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ ٦٤

আয়াত-৬৪: আপনি বলে দিন: হে আহলে কিতাব! এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক ও অভিন্ন। তা হল আমরা যেন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করি, কোন কিছুকেই যেন তার শরীক সাব্যস্ত না করি এবং আমাদের কেউ যেন কাউকে পালনকর্তারূপে গ্রহণ না করে আল্লাহকে ত্যাগ করে। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, “তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা তো মুসলিম।”

يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ لِمَ تُحَآجُّونَ فِىٓ إِبْرَٰهِيمَ وَمَآ أُنزِلَتِ ٱلتَّوْرَىٰةُ وَٱلْإِنجِيلُ إِلَّا مِنۢ بَعْدِهِۦٓ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ٦٥

আয়াত-৬৫: হে আহলে কিতাব! কেন তোমরা ইব্রাহীম সম্পর্কে তর্ক কর? অথচ তাওরাত ও ইনজীল তো তার অনেক পরে নাযিল করা হয়েছিল। তবুও কি তোমরা বুঝ না?

هَـٰٓأَنتُمْ هَـٰٓؤُلَآءِ حَـٰجَجْتُمْ فِيمَا لَكُم بِهِۦ عِلْمٌۭ فَلِمَ تُحَآجُّونَ فِيمَا لَيْسَ لَكُم بِهِۦ عِلْمٌۭ ۚ وَٱللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ ٦٦

আয়াত-৬৬: হাঁ, তোমরা তো ইতিপূর্বে তর্ক করেছ এমন বিষয়ে যাতে তোমাদের কিছুমাত্র জ্ঞান আছে, তবে যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কেন তর্ক করছ? আল্লাহ খুব জানেন, তোমরা জান না।

مَا كَانَ إِبْرَٰهِيمُ يَهُودِيًّۭا وَلَا نَصْرَانِيًّۭا وَلَـٰكِن كَانَ حَنِيفًۭا مُّسْلِمًۭا وَمَا كَانَ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ ٦٧

আয়াত-৬৭: ইব্রাহীম ইহুদীও ছিল না এবং নাসারাও ছিল না। সে ছিল একনিষ্ঠ সরলপন্থী মুসলিম। আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

إِنَّ أَوْلَى ٱلنَّاسِ بِإِبْرَٰهِيمَ لَلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُ وَهَـٰذَا ٱلنَّبِىُّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ۗ وَٱللَّهُ وَلِىُّ ٱلْمُؤْمِنِينَ ٦٨

আয়াত-৬৮: মানুষের মধ্যে ইব্রাহীমের ঘনিষ্ঠতম তারা যারা তার অনুসরণ করেছিল এবং এই নবী ও যারা তার প্রতি ঈমান এনেছে। আল্লাহ মু’মিনদের বন্ধু।

وَدَّت طَّآئِفَةٌۭ مِّنْ أَهْلِ ٱلْكِتَـٰبِ لَوْ يُضِلُّونَكُمْ وَمَا يُضِلُّونَ إِلَّآ أَنفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُونَ ٦٩

আয়াত-৬৯: আহলে কিতাবের এক দল মনে-প্রাণে চায় যেন তোমাদের বিপথগামী করতে পারে, কিন্তু তারা কাউকে বিপথগামী করতে পারে না নিজেদের ছাড়া, অথচ তারা তা উপলব্ধি করে না।

يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ لِمَ تَكْفُرُونَ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ وَأَنتُمْ تَشْهَدُونَ ٧٠

আয়াত-৭০: হে আহলে কিতাব। কেন তোমরা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করছ, অথচ তোমরাই তার সাক্ষ্য দিচ্ছ?

يَـٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَـٰبِ لِمَ تَلْبِسُونَ ٱلْحَقَّ بِٱلْبَـٰطِلِ وَتَكْتُمُونَ ٱلْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ ٧١

আয়াত-৭১: হে আহলে কিতাব! কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করছ এবং সত্য গোপন করছ, অথচ তোমরা জান?

وَقَالَت طَّآئِفَةٌۭ مِّنْ أَهْلِ ٱلْكِتَـٰبِ ءَامِنُوا۟ بِٱلَّذِىٓ أُنزِلَ عَلَى ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَجْهَ ٱلنَّهَارِ وَٱكْفُرُوٓا۟ ءَاخِرَهُۥ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ ٧٢

আয়াত-৭২: আহলে কিতাবের একদল বললঃ “মু’মিনদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তোমরা দিনের প্রথম ভাগে তাতে ঈমান আন এবং দিনের শেষে তা প্রত্যাখ্যান কর, হয়ত এতে তারা ইসলাম থেকে ফিরে যাবে।”

وَلَا تُؤْمِنُوٓا۟ إِلَّا لِمَن تَبِعَ دِينَكُمْ قُلْ إِنَّ ٱلْهُدَىٰ هُدَى ٱللَّهِ أَن يُؤْتَىٰٓ أَحَدٌۭ مِّثْلَ مَآ أُوتِيتُمْ أَوْ يُحَآجُّوكُمْ عِندَ رَبِّكُمْ ۗ قُلْ إِنَّ ٱلْفَضْلَ بِيَدِ ٱللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌۭ ٧٣

আয়াত-৭৩: “আর তোমরা বিশ্বাস করবে না স্বধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্য কাউকে।” আপনি বলে দিন; নিশ্চয় প্রকৃত হেদায়াত হল আল্লাহর হেদায়াত। আর এসব এজন্য যে, তোমরা যা পেয়েছিলে তা অন্য কেউ কেন পাবে? কিংবা তারা কেন তোমাদের পরাভূত করবে যুক্তিতে তোমাদের পালনকর্তার সামনে? বলুনঃ নিশ্চয়ই যাবতীয় অনুগ্রহ আল্লাহরই হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছে তা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।

يَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهِۦ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلْفَضْلِ ٱلْعَظِيمِ ٧٤

আয়াত-৭৪: তিনি যাকে ইচ্ছে স্বীয় অনুগ্রহের জন্য বিশেষ করে বেছে নেন। আর আল্লাহ হল মহা অনুগ্রহশীল।

 وَمِنْ أَهْلِ ٱلْكِتَـٰبِ مَنْ إِن تَأْمَنْهُ بِقِنطَارٍۢ يُؤَدِّهِۦٓ إِلَيْكَ وَمِنْهُم مَّنْ إِن تَأْمَنْهُ بِدِينَارٍۢ لَّا يُؤَدِّهِۦٓ إِلَيْكَ إِلَّا مَا دُمْتَ عَلَيْهِ قَآئِمًۭا ۗ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا۟ لَيْسَ عَلَيْنَا فِى ٱلْأُمِّيِّـۧنَ سَبِيلٌۭ وَيَقُولُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ ٧٥

আয়াত-৭৫: আর আহলে কিতাবের মধ্যে এমন লোকও আছে, যদি তুমি তার কাছে বিপুল পরিমাণ ধন-সম্পদ আমানত রাখ, তা সে তোমাকে ফেরত দেবে। তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, যদি তুমি তার কাছে একটিমাত্র দীনারও আমানত রাখ এবং তার পেছনে লেগে না থাক, তাহলে সে তা তোমাকে ফেরত দেবে না। এটা এজন্য যে, তারা বলে; আমাদের উপর নিরক্ষরদের ব্যাপারে কোন প্রকার বাধ্যবাধকতা নেই। আর তারা জেনে-শুনে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে।

Surah Ali ‘Imran (26-50)

Surah Ali ‘Imran/ সূরা আলে-ইমরান

(আয়াত: ২৬-৫০)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 

قُلِ ٱللَّهُمَّ مَـٰلِكَ ٱلْمُلْكِ تُؤْتِى ٱلْمُلْكَ مَن تَشَآءُ وَتَنزِعُ ٱلْمُلْكَ مِمَّن تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَن تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَن تَشَآءُ ۖ بِيَدِكَ ٱلْخَيْرُ ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌۭ ٢٦

আয়াত-২৬: বলুনঃ হে আল্লাহ! তুমিই মালিক সার্বভৌম শক্তির। তুমি যাকে ইচ্ছে রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছে রাজ্য কেড়ে নাও; যাকে ইচ্ছে তুমি সম্মানিত কর এবং যাকে ইচ্ছে অপমানিত কর। সকল কল্যাণ তোমারই হাতে। নিশ্চয় তুমি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

تُولِجُ ٱلَّيْلَ فِى ٱلنَّهَارِ وَتُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِى ٱلَّيْلِ ۖ وَتُخْرِجُ ٱلْحَىَّ مِنَ ٱلْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ ٱلْمَيِّتَ مِنَ ٱلْحَىِّ ۖ وَتَرْزُقُ مَن تَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍۢ ٢٧

আয়াত-২৭: তুমিই প্রবেশ করাও রাতকে দিনের ভেতরে এবং দিনকে রাতের ভেতরে। তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন, আবার মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। যাকে চাও তুমি অপরিমিত রিযিক দান কর।

لَّا يَتَّخِذِ ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلْكَـٰفِرِينَ أَوْلِيَآءَ مِن دُونِ ٱلْمُؤْمِنِينَ ۖ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَلَيْسَ مِنَ ٱللَّهِ فِى شَىْءٍ إِلَّآ أَن تَتَّقُوا۟ مِنْهُمْ تُقَىٰةًۭ ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفْسَهُۥ ۗ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلْمَصِيرُ ٢٨

আয়াত-২৮: মু’মিনরা যেন কাফেরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে মুমিনদের বন্ধুত্ব ছেড়ে। যে কেউ এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তাদের তরফ থেকে কোন অনিষ্টের আশংকা কর, তাহলে ব্যতিক্রম। আর আল্লাহ তার সত্তা সর্ম্পকে তোমাদের সতর্ক করেছেন। আল্লাহরই দিকে ফিরে যেতে হবে।

قُلْ إِن تُخْفُوا۟ مَا فِى صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ ٱللَّهُ ۗ وَيَعْلَمُ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌۭ ٢٩

আয়াত-২৯: বলে দিনঃ তোমাদের অন্তরে যা আছে, তোমরা যদি তা গোপন রাখ অথবা ব্যক্ত কর, আল্লাহ তা জানেন এবং যা কিছু আছে আসমানে ও যা কিছু আছে জমিনে তাও তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

يَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍۢ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَيْرٍۢ مُّحْضَرًۭا وَمَا عَمِلَتْ مِن سُوٓءٍۢ تَوَدُّ لَوْ أَنَّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُۥٓ أَمَدًۢا بَعِيدًۭا ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفْسَهُۥ ۗ وَٱللَّهُ رَءُوفٌۢ بِٱلْعِبَادِ ٣٠

আয়াত-৩০: যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের কৃত ভাল কাজসমূহ সামনে উপস্থিত পাবে এবং সে যে মন্দ কাজ করেছে তাও পাবে, সেদিন সে ব্যক্তি তার ও সেসব মন্দ কাজের মধ্যে দূর ব্যবধান কামনা করবে। আল্লাহ নিজের সত্তা সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করছেন। আর আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মমতাময়।

قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِى يُحْبِبْكُمُ ٱللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ٣١

আয়াত-৩১: আপনি বলে দিনঃ যদি তোমরা প্রকৃতই আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেবেন। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

قُلْ أَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ ۖ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٣٢

আয়াত-৩২: বলে দিনঃ তোমরা অনুসরণ কর আল্লাহর এবং রাসূলের। তবে যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে জেনে রেখ, আল্লাহ কাফেরদের ভালবাসেন না।

 إِنَّ ٱللَّهَ ٱصْطَفَىٰٓ ءَادَمَ وَنُوحًۭا وَءَالَ إِبْرَٰهِيمَ وَءَالَ عِمْرَٰنَ عَلَى ٱلْعَـٰلَمِينَ ٣٣

আয়াত-৩৩: নিশ্চয় আল্লাহ মনোনীত করেছেন আদমকে, নুহকে, ইবরাহীমের বংশধরকে এবং ইমরানের বংশধরকে বিশ্ববাসীর জন্য।

ذُرِّيَّةًۢ بَعْضُهَا مِنۢ بَعْضٍۢ ۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ٣٤

আয়াত-৩৪: তারা একে অন্যের সন্তান। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

إِذْ قَالَتِ ٱمْرَأَتُ عِمْرَٰنَ رَبِّ إِنِّى نَذَرْتُ لَكَ مَا فِى بَطْنِى مُحَرَّرًۭا فَتَقَبَّلْ مِنِّىٓ ۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ ٣٥

আয়াত-৩৫: স্মরণ কর, ইমরানের স্ত্রী যখন বলেছিলঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি মানত করলাম তোমার জন্য যা আছে আমার গর্ভে সবকিছু থেকে মুক্ত রেখে, সুতরাং আমার কাছ থেকে তা কবুল কর। তুমি তো সব শুন, সব জান।

فَلَمَّا وَضَعَتْهَا قَالَتْ رَبِّ إِنِّى وَضَعْتُهَآ أُنثَىٰ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا وَضَعَتْ وَلَيْسَ ٱلذَّكَرُ كَٱلْأُنثَىٰ ۖ وَإِنِّى سَمَّيْتُهَا مَرْيَمَ وَإِنِّىٓ أُعِيذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنَ ٱلشَّيْطَـٰنِ ٱلرَّجِيمِ ٣٦

আয়াত-৩৬: তারপর যখন সে তাকে প্রসব করল, তখন সে বললঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! আমি তো এক কন্যা প্রসব করেছি। আসলে সে কি প্রসব করেছে আল্লাহ তা খুব ভালই জানেন__যে ছেলে সে কামনা করেছিল, সে ছেলে এ কন্যার সমকক্ষ নয়। __আর আমি তার নাম রেখেছি মরিয়ম এবং তাকে ও তার সন্তানদের তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করছি অভিশপ্ত শয়তানের কবল থেকে বাচার জন্য।

فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنٍۢ وَأَنۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًۭا وَكَفَّلَهَا زَكَرِيَّا ۖ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا ٱلْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقًۭا ۖ قَالَ يَـٰمَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَا ۖ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ ٣٧

আয়াত-৩৭: অতঃপর তার পালনকর্তা মরিয়মকে উত্তমরূপে গ্রহণ করলেন এবং উত্তমরূপে তাকে লালন-পালন করার ব্যবস্থা করলেন আর তার অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তিনি যাকারিয়াকে দিলেন। যখনই যাকারিয়া মরিয়মের কক্ষে যেত তখনই তার কাছে কিছু পানাহারের বস্তু দেখতে পেত। সে জিজ্ঞেস করত: হে মরিয়ম এসব কোথা থেকে তোমার কাছে এল? সে বলত: এসব আল্লাহর কাছ থেকে আসে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন বেহিসেব রিযিক দান করেন।

هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهُۥ ۖ قَالَ رَبِّ هَبْ لِى مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةًۭ طَيِّبَةً ۖ إِنَّكَ سَمِيعُ ٱلدُّعَآءِ ٣٨

আয়াত-৩৮: সেখানেই যাকারিয়া তার পালনকর্তার কাছে প্রার্থনা করে বললঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! তুমি আমাকে তোমার কাছ থেকে পূত-পবিত্র সন্তান দান কর। তুমিই তো শ্রেষ্ঠ প্রার্থনা শ্রবণকারী।

فَنَادَتْهُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ وَهُوَ قَآئِمٌۭ يُصَلِّى فِى ٱلْمِحْرَابِ أَنَّ ٱللَّهَ يُبَشِّرُكَ بِيَحْيَىٰ مُصَدِّقًۢا بِكَلِمَةٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَسَيِّدًۭا وَحَصُورًۭا وَنَبِيًّۭا مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ ٣٩

আয়াত-৩৯: তারপর যখন সে মেহরাবে দাড়িয়ে নামায পড়ছিল, তখন ফেরেশতারা তাকে ডেকে বলল: আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহ̖ইয়ার; সে হবে আল্লাহর বাণীর সত্যায়নকারী, নেতা, জিতেন্দ্রিয় এবং নেককারদের মধ্য থেকে একজন নবী।

قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى غُلَـٰمٌۭ وَقَدْ بَلَغَنِىَ ٱلْكِبَرُ وَٱمْرَأَتِى عَاقِرٌۭ ۖ قَالَ كَذَٰلِكَ ٱللَّهُ يَفْعَلُ مَا يَشَآءُ ٤٠

আয়াত-৪০: যাকারিয়া বলল: হে আমার পরওয়ারদেগার কেমন করে আমার পুত্র হবে? আমার তো বাৰ্ধক্য এসে গেছে এবং আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা। আল্লাহ বললেন; এ অবস্থাতেই হবে। আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তা করে দেন।

قَالَ رَبِّ ٱجْعَل لِّىٓ ءَايَةًۭ ۖ قَالَ ءَايَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ ٱلنَّاسَ ثَلَـٰثَةَ أَيَّامٍ إِلَّا رَمْزًۭا ۗ وَٱذْكُر رَّبَّكَ كَثِيرًۭا وَسَبِّحْ بِٱلْعَشِىِّ وَٱلْإِبْكَـٰرِ ٤١

আয়াত-৪১: সে বললঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! আমার জন্য কিছু লক্ষণ দাও। আল্লাহ বললেন: তোমার লক্ষণ এই যে, তুমি তিন দিন পর্যন্ত লোকের সাথে কথা বলতে পারবে না, তবে ইশারা-ইংগিতে পারবে। আর তোমার পালনকর্তাকে বেশি করে স্মরণ করবে এবং সন্ধ্যায় ও সকালে তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করবে।

وَإِذْ قَالَتِ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ يَـٰمَرْيَمُ إِنَّ ٱللَّهَ ٱصْطَفَىٰكِ وَطَهَّرَكِ وَٱصْطَفَىٰكِ عَلَىٰ نِسَآءِ ٱلْعَـٰلَمِينَ ٤٢

আয়াত-৪২: আর স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বললঃ হে মরিয়ম আল্লাহ তোমাকে বেছে নিয়েছেন, পবিত্র করেছেন এবং তোমাকে বিশ্বনারী সমাজের উর্ধ্বে মনোনীত করেছেন।

يَـٰمَرْيَمُ ٱقْنُتِى لِرَبِّكِ وَٱسْجُدِى وَٱرْكَعِى مَعَ ٱلرَّٰكِعِينَ ٤٣

আয়াত-৪৩: হে মরিয়ম! তুমি আনুগত্য কর তোমার পালনকর্তার এবং সিজদা কর আর রুকূ’কারীদের সাথে রুকূ কর।

ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَ ۚ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يُلْقُونَ أَقْلَـٰمَهُمْ أَيُّهُمْ يَكْفُلُ مَرْيَمَ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ يَخْتَصِمُونَ ٤٤

আয়াত-৪৪: এসব হলো গায়েবী সংবাদ যা আমি আপনাকে ঐশী বাণী দিয়ে জানাই। আর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন না যখন তারা নিজ নিজ কলম নিক্ষেপ করছিল এ উদ্দেশ্যে যে, তাদের মধ্য থেকে মরিয়মের অভিভাবক কে হবে তা নির্ধারণ করতে। তারা যখন নিজেরা বাদানুবাদ করছিল তখনও আপনি তাদের কাছে ছিলেন না।

إِذْ قَالَتِ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ يَـٰمَرْيَمُ إِنَّ ٱللَّهَ يُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةٍۢ مِّنْهُ ٱسْمُهُ ٱلْمَسِيحُ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ وَجِيهًۭا فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ وَمِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ ٤٥

আয়াত-৪৫: স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বললঃ হে মরিয়ম! নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর তরফ থেকে তোমাকে একটি কলেমার সুসংবাদ দিচ্ছেন, তার নাম মসীহ ঈসা ইবন মরিয়ম, সে সম্মানিত দুনিয়া ও আখেরাতে এবং সে আল্লাহর ঘনিষ্ঠদের অন্যতম।

وَيُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِى ٱلْمَهْدِ وَكَهْلًۭا وَمِنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ ٤٦

আয়াত-৪৬: সে মানুষের সাথে কথা বলবে দোলনায় থাকা অবস্থায় এবং প্রাপ্তবয়সেও এবং সে হবে নেককারদের অন্যতম।

قَالَتْ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِى وَلَدٌۭ وَلَمْ يَمْسَسْنِى بَشَرٌۭ ۖ قَالَ كَذَٰلِكِ ٱللَّهُ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ ۚ إِذَا قَضَىٰٓ أَمْرًۭا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٤٧

আয়াত-৪৭: মরিয়ম বললঃ হে আমাদের পরওয়ারদেগার! কেমন করে আমার সন্তান হবে, অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি। আল্লাহ বললেনঃ এভাবেই হবে। আল্লাহ সৃষ্টি করেন যা ইচ্ছে করেন। যখন তিনি কোন কাজ করতে মনস্থ করেন তখন তাকে শুধু বলেন “হও”, অমনি তা হয়ে যায়।

وَيُعَلِّمُهُ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَٱلتَّوْرَىٰةَ وَٱلْإِنجِيلَ ٤٨

আয়াত-৪৮: আর তিনি সে সন্তানকে শিখিয়ে দেবেন কিতাব, হেকমত, তাওরাত ও ইন্‌জীল।

وَرَسُولًا إِلَىٰ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ أَنِّى قَدْ جِئْتُكُم بِـَٔايَةٍۢ مِّن رَّبِّكُمْ ۖ أَنِّىٓ أَخْلُقُ لَكُم مِّنَ ٱلطِّينِ كَهَيْـَٔةِ ٱلطَّيْرِ فَأَنفُخُ فِيهِ فَيَكُونُ طَيْرًۢا بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۖ وَأُبْرِئُ ٱلْأَكْمَهَ وَٱلْأَبْرَصَ وَأُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰ بِإِذْنِ ٱللَّهِ ۖ وَأُنَبِّئُكُم بِمَا تَأْكُلُونَ وَمَا تَدَّخِرُونَ فِى بُيُوتِكُمْ ۚ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةًۭ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ٤٩

আয়াত-৪৯: এবং তাকে বনী ইসরাঈলের জন্য রাসূল হিসেবে মনোনীত করবেন। সে বলবেঃ আমি তো তোমাদের কাছে এসেছি তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে নিদর্শন নিয়ে। তা এই যে, তোমাদের জন্য আমি কাদামাটি দিয়ে পাখির আকৃতির ন্যায় আকার গঠন করব, তারপর তাতে ফুৎকার দেব, ফলে তা আল্লাহর হুকুমে উড়ন্ত পাখিতে পরিণত হবে। আর আমি আরোগ্য করব জন্মান্ধকে ও শ্বেতকুষ্ঠ রোগীকে এবং জীবিত করব মৃতকে আল্লাহর হুকুমে। আর আমি তোমাদের বলে দেব যা তোমরা খাও এবং যা তোমরা তোমাদের ঘরে মওজুদ কর। নিশ্চয় এতে রয়েছে যথেষ্ট প্রমাণ তোমাদের জন্য যদি তোমরা মুমিন হও!

وَمُصَدِّقًۭا لِّمَا بَيْنَ يَدَىَّ مِنَ ٱلتَّوْرَىٰةِ وَلِأُحِلَّ لَكُم بَعْضَ ٱلَّذِى حُرِّمَ عَلَيْكُمْ ۚ وَجِئْتُكُم بِـَٔايَةٍۢ مِّن رَّبِّكُمْ فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ ٥٠

আয়াত-৫০: আর আমি এসেছি আমার সামনে তাওরাতে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তোমাদের জন্য কতিপয় বস্তু হালাল করার জন্য যা তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছিল। আর আমি তোমাদের কাছে এসেছি নিদর্শন নিয়ে তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে। সুতরাং তোমরা ভয় কর আল্লাহকে এবং অনুসরণ কর আমাকে।

Surah Ali ‘Imran (01-25)

Surah Ali ‘Imran/ সূরা আলে-ইমরান

(আয়াত: ০১-২৫)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

الٓمٓ ١

আয়াত-১: আলিফ-লাম-মীম।

ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُ ٢

আয়াত-২: নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ছাড়া, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক।

نَزَّلَ عَلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ مُصَدِّقًۭا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَنزَلَ ٱلتَّوْرَىٰةَ وَٱلْإِنجِيلَ ٣

আয়াত-৩: তিনি আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছেন যা তার পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যয়ন করে। আর তিনি নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইন̖জীল__

مِن قَبْلُ هُدًۭى لِّلنَّاسِ وَأَنزَلَ ٱلْفُرْقَانَ ۗ إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌۭ شَدِيدٌۭ ۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌۭ ذُو ٱنتِقَامٍ ٤

আয়াত-৪: ইতিপূর্বে, মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং তিনি সত্য-মিথ্যা পার্থক্যকারী কোরআনও নাযিল করেছেন। নিশ্চয় যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আল্লাহ পরাক্রমশালী, দণ্ডদাতা।

إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَخْفَىٰ عَلَيْهِ شَىْءٌۭ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فِى ٱلسَّمَآءِ ٥

আয়াত-৫: নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন যে, আসমান ও জমিনের কোন কিছুই তার কাছে গোপন নেই।

هُوَ ٱلَّذِى يُصَوِّرُكُمْ فِى ٱلْأَرْحَامِ كَيْفَ يَشَآءُ ۚ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ٦

আয়াত-৬: তিনিই সেই সত্তা, যিনি মাতৃগর্ভে তোমাদের আকৃতি গঠন করেন, যেভাবে তিনি ইচ্ছে করেন। নেই কোন উপাস্য তিনি ছাড়া। তিনি পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।

هُوَ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ عَلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبَ مِنْهُ ءَايَـٰتٌۭ مُّحْكَمَـٰتٌ هُنَّ أُمُّ ٱلْكِتَـٰبِ وَأُخَرُ مُتَشَـٰبِهَـٰتٌۭ ۖ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِمْ زَيْغٌۭ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَـٰبَهَ مِنْهُ ٱبْتِغَآءَ ٱلْفِتْنَةِ وَٱبْتِغَآءَ تَأْوِيلِهِۦ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُۥٓ إِلَّا ٱللَّهُ ۗ وَٱلرَّٰسِخُونَ فِى ٱلْعِلْمِ يَقُولُونَ ءَامَنَّا بِهِۦ كُلٌّۭ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُو۟لُوا۟ ٱلْأَلْبَـٰبِ ٧

আয়াত-৭: তিনিই আপনার প্রতি এ কিতাব নাযিল করেছেন। এতে আছে কতক দ্ব্যর্থহীন সুস্পষ্ট আয়াত, সেগুলো হল গ্রন্থের আসল অংশ। আর অন্যগুলো হল রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা-কুটিলতা রয়েছে কেবল তারাই ফিতনা সৃষ্টি ও অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রূপক তার অনুসরণ করে। আর তার ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলেঃ আমরা এতে ঈমান এনেছি, এসবই আমাদের প্রভুর তরফ থেকে এসেছে। জ্ঞানবানরা ছাড়া কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।

رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً ۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْوَهَّابُ ٨

আয়াত-৮: হে আমাদের পরওয়ারদেগার! সরল-সঠিক পথ আমাদের প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে আবার সত্য লংঘনে প্রবৃত্ত কর না। আর আমাদের দাও তোমার অপার করুণা। তুমি তো মহাদাতা।

رَبَّنَآ إِنَّكَ جَامِعُ ٱلنَّاسِ لِيَوْمٍۢ لَّا رَيْبَ فِيهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُخْلِفُ ٱلْمِيعَادَ ٩

আয়াত-৯: হে আমাদের পরওয়ারদেগার! তুমি তো মানব জাতিকে একদিন অবশ্যই একত্র করবে, এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তার ওয়াদার ব্যতিক্রম করেন না।

إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَن تُغْنِىَ عَنْهُمْ أَمْوَٰلُهُمْ وَلَآ أَوْلَـٰدُهُم مِّنَ ٱللَّهِ شَيْـًۭٔا ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمْ وَقُودُ ٱلنَّارِ ١٠

আয়াত-১০: যারা কুফরী করে, তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর কাছে কোন কাজে আসবে না। আর এরাই হচ্ছে দোযখের ইন্ধন।

كَدَأْبِ ءَالِ فِرْعَوْنَ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَذَّبُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَا فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ ۗ وَٱللَّهُ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ١١

আয়াত-১১: ফেরাউনের সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববতীদের ধারা অনুযায়ী তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল, ফলে তাদের পাপের জন্য আল্লাহ তাদের পাকড়াও করেন। আর আল্লাহ দণ্ডদানে অতিশয় কঠোর।

قُل لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ سَتُغْلَبُونَ وَتُحْشَرُونَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ ۚ وَبِئْسَ ٱلْمِهَادُ ١٢

আয়াত-১২: বলে দিন তাদের যারা কুফরী করে: শিগগীরই তোমরা পরাভূত হবে এবং জাহান্নামে তোমাদের একত্র করা হবে। আর তা কতই না নিকৃষ্ট আবাসস্থল।

قَدْ كَانَ لَكُمْ ءَايَةٌۭ فِى فِئَتَيْنِ ٱلْتَقَتَا ۖ فِئَةٌۭ تُقَـٰتِلُ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَأُخْرَىٰ كَافِرَةٌۭ يَرَوْنَهُم مِّثْلَيْهِمْ رَأْىَ ٱلْعَيْنِ ۚ وَٱللَّهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهِۦ مَن يَشَآءُ ۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَعِبْرَةًۭ لِّأُو۟لِى ٱلْأَبْصَـٰرِ ١٣

আয়াত-১৩: অবশ্যই তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিল দুটো দলের পরস্পরের মোকাবেলার মধ্যে-একটি দল আল্লাহর পথে যুদ্ধ করছিল আর অন্য দলটি ছিল কাফেরদের-তারা মুসলিমদের স্বচক্ষে দ্বিগুণ দেখছিল। আর আল্লাহ যাকে চান নিজ সাহায্যে শক্তি দান করেন। নিশ্চয় এতে রয়েছে অন্তদৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়।

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ ٱلشَّهَوَٰتِ مِنَ ٱلنِّسَآءِ وَٱلْبَنِينَ وَٱلْقَنَـٰطِيرِ ٱلْمُقَنطَرَةِ مِنَ ٱلذَّهَبِ وَٱلْفِضَّةِ وَٱلْخَيْلِ ٱلْمُسَوَّمَةِ وَٱلْأَنْعَـٰمِ وَٱلْحَرْثِ ۗ ذَٰلِكَ مَتَـٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ۖ وَٱللَّهُ عِندَهُۥ حُسْنُ ٱلْمَـَٔابِ ١٤

আয়াত-১৪: মানুষের কাছে মনোরম করা হয়েছে আকর্ষণীয় কাম্য বস্তুসমূহের মহব্বত-যেমন নারীর, সন্তান-সন্ততির, স্তূপীকৃত স্বর্ণ-রৌপ্যের, চিহ্নিত অশ্বরাজির, গবাদি-পশুরাজির এবং ক্ষেত-খামারের। এ সবই হল পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু। আর আল্লাহর কাছেই রয়েছে উত্তম আশ্রয়স্থল।

 قُلْ أَؤُنَبِّئُكُم بِخَيْرٍۢ مِّن ذَٰلِكُمْ ۚ لِلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّـٰتٌۭ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ خَـٰلِدِينَ فِيهَا وَأَزْوَٰجٌۭ مُّطَهَّرَةٌۭ وَرِضْوَٰنٌۭ مِّنَ ٱللَّهِ ۗ وَٱللَّهُ بَصِيرٌۢ بِٱلْعِبَادِ ١٥

আয়াত-১৫: আপনি বলে দিনঃ আমি কি তোমাদের এসব বস্তুর চেয়ে উত্তম কোন বস্তুর সংবাদ দেব? যারা মোত্তাকী তাদের জন্য রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে এমন বেহেশত যার পাদদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহর-তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে-আরও আছে তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী ও আল্লাহর তরফ থেকে সন্তুষ্টি। আল্লাহ বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা।

ٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَآ إِنَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٦

আয়াত-১৬: মোত্তাকি তারা যারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং আপনি আমাদের পাপসমূহ মাফ করে দিন এবং দোযখের আযাব থেকে আমাদের রক্ষা করুন|

ٱلصَّـٰبِرِينَ وَٱلصَّـٰدِقِينَ وَٱلْقَـٰنِتِينَ وَٱلْمُنفِقِينَ وَٱلْمُسْتَغْفِرِينَ بِٱلْأَسْحَارِ ١٧

আয়াত-১৭: তারা ধৈর্যধারণকারী, সত্যপরায়ণ, বিনয়ী, নেক কাজে ব্যয়কারী আর শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।

شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ وَأُو۟لُوا۟ ٱلْعِلْمِ قَآئِمًۢا بِٱلْقِسْطِ ۚ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ ١٨

আয়াত-১৮: আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, ফেরেশতা ও জ্ঞানীবর্গও; আল্লাহ ন্যায়নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তিনি পরাক্রমশালী, মহাবিজ্ঞ।

إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلْإِسْلَـٰمُ ۗ وَمَا ٱخْتَلَفَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ ١٩

আয়াত-১৯: নিঃসন্দেহে ইসলামই হল আল্লাহর কাছে একমাত্র দ্বীন। যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের কাছে প্রকৃত জ্ঞান আসার পর শুধু পরস্পর বিদ্বেষবশত তারা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছিল। আর কেউ আল্লাহর আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করলে, (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসেব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।

فَإِنْ حَآجُّوكَ فَقُلْ أَسْلَمْتُ وَجْهِىَ لِلَّهِ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِ ۗ وَقُل لِّلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْأُمِّيِّـۧنَ ءَأَسْلَمْتُمْ ۚ فَإِنْ أَسْلَمُوا۟ فَقَدِ ٱهْتَدَوا۟ ۖ وَّإِن تَوَلَّوْا۟ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ ٱلْبَلَـٰغُ ۗ وَٱللَّهُ بَصِيرٌۢ بِٱلْعِبَادِ ٢٠

আয়াত-২০: যদি তারা আপনার সাথে বিতর্ক করে তবে আপনি বলে দিনঃ আমি তো আত্মসমর্পণ করেছি আল্লাহর কাছে এবং আমাকে যারা অনুসরণ করে তারাও। আর যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের এবং নিরক্ষরদের বলুনঃ তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছ? যদি তারা আত্মসমর্পণ করে তবে অবশ্যই তারাও সরল-সঠিক পথ পাবে। কিন্তু যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনার দায়িত্ব তো শুধু পৌছে দেয়া। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।

إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِـَٔايَـٰتِ ٱللَّهِ وَيَقْتُلُونَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ بِغَيْرِ حَقٍّۢ وَيَقْتُلُونَ ٱلَّذِينَ يَأْمُرُونَ بِٱلْقِسْطِ مِنَ ٱلنَّاسِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ ٢١

আয়াত-২১: নিশ্চয় যারা অস্বীকার করে আল্লাহর আয়াতসমূহকে এবং নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে, আর যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরও হত্যা করে, তাদের শুনিয়ে দিন এক মহাযন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ।

أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ حَبِطَتْ أَعْمَـٰلُهُمْ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْـَٔاخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّـٰصِرِينَ ٢٢

আয়াত-২২: এরাই সেসব লোক যাদের কার্যাবলী দুনিয়া ও আখেরাতে নিষ্ফল হয়ে গেছে, আর তাদের জন্য কোন সাহায্যকারীও নেই।

أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ نَصِيبًۭا مِّنَ ٱلْكِتَـٰبِ يُدْعَوْنَ إِلَىٰ كِتَـٰبِ ٱللَّهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌۭ مِّنْهُمْ وَهُم مُّعْرِضُونَ ٢٣

আয়াত-২৩: আপনি কি তাদের দেখেননি যাদের কিতাবের কিছু অংশ দেয়া হয়েছিল? তাদের আহবান করা হয়েছিল আল্লাহর কিতাবের দিকে যাতে এ কিতাব তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, এরপরও তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর তারাই অমান্যকারী।

ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا۟ لَن تَمَسَّنَا ٱلنَّارُ إِلَّآ أَيَّامًۭا مَّعْدُودَٰتٍۢ ۖ وَغَرَّهُمْ فِى دِينِهِم مَّا كَانُوا۟ يَفْتَرُونَ ٢٤

আয়াত-২৪: এ অমান্য এজন্য যে, তারা বলে থাকেঃ দোযখের আগুন কখনও আমাদের স্পর্শ করবে না, তবে হাতেগোনা সামান্য কয়েক দিন ছাড়া। তাদের মিথ্যা মনগড়া উদ্ভাবন দ্বীনের ব্যাপারে তাদের ধোঁকায় ফেলে রেখেছে।

فَكَيْفَ إِذَا جَمَعْنَـٰهُمْ لِيَوْمٍۢ لَّا رَيْبَ فِيهِ وَوُفِّيَتْ كُلُّ نَفْسٍۢ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ ٢٥

আয়াত-২৫: কিন্তু কি অবস্থা হবে তাদের, যখন আমি তাদের সবাইকে একত্র করব সেদিন যেদিনের আগমনে কোন সন্দেহ নেই এবং যেদিন প্রত্যেককে তার কর্মের প্রতিদান পুরোপুরি প্রদান করা হবে, আর তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না?

Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা (276-286)

Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২৭৬-২২৮৬)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 

يَمْحَقُ ٱللَّهُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَيُرْبِى ٱلصَّدَقَـٰتِ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ ٢٧٦

আয়াত-২৭৬: আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে পছন্দ করেন না।

إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ٢٧٧

আয়াত-২৭৭: নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, নেক কাজ করেছে, নামজ কায়েম করেছে এবং যাকাত দিয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের নেই কোন ভয় এবং তারা দুঃখিতও হবে না।

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَذَرُوا۟ مَا بَقِىَ مِنَ ٱلرِّبَوٰٓا۟ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ٢٧٨

আয়াত-২৭৮: হে মু’মিনগণ! যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা কিছু বকেয়া রয়ে গেছে তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হয়ে থাক।

فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ ٢٧٩

আয়াত-২৭৯: তারপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তাহলে আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে তৈরি হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের জন্য তোমাদের মূলধন রয়ে যাবে। তোমরা কাউকে অত্যাচার করবে না আর না কেউ তোমাদের অত্যাচার করবে।

وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍۢ فَنَظِرَةٌ إِلَىٰ مَيْسَرَةٍۢ ۚ وَأَن تَصَدَّقُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ٢٨٠

আয়াত-২৮০: খাতক যদি অভাবগ্রস্ত হয় তবে তার স্বচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেয়া উচিত। আর যদি তোমরা ক্ষমা করে দাও, তা হবে তোমাদের জন্য অতি উত্তম কাজ, যদি তোমরা জানতে।

وَٱتَّقُوا۟ يَوْمًۭا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى ٱللَّهِ ۖ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍۢ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ ٢٨١

আয়াত-২৮১: আর সেদিনকে ভয় কর, যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। তারপর প্রত্যেককেই তার কর্মফল পুরোপুরি দেয়া হবে, আর তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না।

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِذَا تَدَايَنتُم بِدَيْنٍ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى فَٱكْتُبُوهُ ۚ وَلْيَكْتُب بَّيْنَكُمْ كَاتِبٌۢ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَلَا يَأْبَ كَاتِبٌ أَن يَكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ ٱللَّهُ ۚ فَلْيَكْتُبْ وَلْيُمْلِلِ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ وَلَا يَبْخَسْ مِنْهُ شَيْـًۭٔا ۚ فَإِن كَانَ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ سَفِيهًا أَوْ ضَعِيفًا أَوْ لَا يَسْتَطِيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَلْيُمْلِلْ وَلِيُّهُۥ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَٱسْتَشْهِدُوا۟ شَهِيدَيْنِ مِن رِّجَالِكُمْ ۖ فَإِن لَّمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌۭ وَٱمْرَأَتَانِ مِمَّن تَرْضَوْنَ مِنَ ٱلشُّهَدَآءِ أَن تَضِلَّ إِحْدَىٰهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَىٰهُمَا ٱلْأُخْرَىٰ ۚ وَلَا يَأْبَ ٱلشُّهَدَآءُ إِذَا مَا دُعُوا۟ ۚ وَلَا تَسْـَٔمُوٓا۟ أَن تَكْتُبُوهُ صَغِيرًا أَوْ كَبِيرًا إِلَىٰٓ أَجَلِهِۦ ۚ ذَٰلِكُمْ أَقْسَطُ عِندَ ٱللَّهِ وَأَقْوَمُ لِلشَّهَـٰدَةِ وَأَدْنَىٰٓ أَلَّا تَرْتَابُوٓا۟ ۖ إِلَّآ أَن تَكُونَ تِجَـٰرَةً حَاضِرَةًۭ تُدِيرُونَهَا بَيْنَكُمْ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَلَّا تَكْتُبُوهَا ۗ وَأَشْهِدُوٓا۟ إِذَا تَبَايَعْتُمْ ۚ وَلَا يُضَآرَّ كَاتِبٌۭ وَلَا شَهِيدٌۭ ۚ وَإِن تَفْعَلُوا۟ فَإِنَّهُۥ فُسُوقٌۢ بِكُمْ ۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۖ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱللَّهُ ۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ٢٨٢

আয়াত-২৮২: হে মু’মিনগণ যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের লেন-দেন কর তখন তা লিখে রেখ। তোমাদের মধ্যে কোন লোক যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেয়। লেখক যেন লিখতে অস্বীকার না করে যেহেতু আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সুতরাং সে যেন লিখে দেয়। আর ঋণগ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয়। এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে ও এতে যেন বিন্দুমাত্র কম না করে। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি নিবোধ হয় কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে তবে যেন তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয়। দু’জন সাক্ষী রাখবে তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে। দু’জন পুরুষ যদি না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা–ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা পছন্দ কর-তাদের একজন ভুল করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেবে। যখন সাক্ষীদের ডাকা হবে তখন যেন তারা অস্বীকার না করে। ঋণ ছোট হোক কিংবা বড় হোক, মেয়াদসহ তা লিখে রাখতে অলসতা করবে না। তোমাদের এ লিখে রাখার কাজ আল্লাহর কাছে ন্যায্যতর এবং সাক্ষ্যের জন্য দৃঢ়তর আর তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার ব্যাপারে নিকটতর। কিন্তু কারবার যদি নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান করা হয়, তবে তা যদি তোমরা না লিখে রাখ তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। যখন তোমরা বেচা-কেনা করবে তখন সাক্ষী রাখবে। কোন লেখক ও সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি তোমরা এরূপ কর তবে অবশ্যই তা হবে তোমাদের জন্য পাপের বিষয়। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।

 وَإِن كُنتُمْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ وَلَمْ تَجِدُوا۟ كَاتِبًۭا فَرِهَـٰنٌۭ مَّقْبُوضَةٌۭ ۖ فَإِنْ أَمِنَ بَعْضُكُم بَعْضًۭا فَلْيُؤَدِّ ٱلَّذِى ٱؤْتُمِنَ أَمَـٰنَتَهُۥ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ ۗ وَلَا تَكْتُمُوا۟ ٱلشَّهَـٰدَةَ ۚ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُۥٓ ءَاثِمٌۭ قَلْبُهُۥ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌۭ ٢٨٣

আয়াত-২৮৩: আর যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধকী বস্তু হস্তগত রাখা বিধেয়। যদি তোমাদের একে অপরকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, সে যেন আমানত ফিরিয়ে দেয় এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করবে না। যে কেউ তা গোপন করবে, অবশ্যই তার অন্তর হবে পাপপূৰ্ণ। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।

لِّلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ وَإِن تُبْدُوا۟ مَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ ٱللَّهُ ۖ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ٢٨٤

আয়াত-২৮৪: যা কিছু আছে আসমানে এবং যা কিছু আছে জমিনে সবকিছুই আল্লাহর। তোমাদের মনে যা আছে তা তোমরা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍۢ مِّن رُّسُلِهِۦ ۚ وَقَالُوا۟ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ ٱلْمَصِيرُ ٢٨٥

আয়াত-২৮৫: রাসূল ঈমান এনেছেন ঐসব বিষয়ের উপর যা তাঁর প্রতি নাযিল করা হয়েছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে এবং মু’মিনরাও ঈমান এনেছে। তারা সবাই ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি এবং তার রাসূলদের প্রতি। তারা বলে; আমরা তার রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। তারা আরো বলে; আমরা শুনেছি এবং মান্য করেছি। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। আর প্রত্যাবর্তন তো তোমারই কাছে করতে হবে।

لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا ٱكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَآ إِن نَّسِينَآ أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَآ إِصْرًۭا كَمَا حَمَلْتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦ ۖ وَٱعْفُ عَنَّا وَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَآ ۚ أَنتَ مَوْلَىٰنَا فَٱنصُرْنَا عَلَى ٱلْقَوْمِ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٢٨٦

আয়াত-২৮৬: আল্লাহ অৰ্পণ করেন না কারো উপর এমন কোন দায়িত্ব যা বহন করার সাধ্য তার নেই। যা কিছু ভাল সে কামাই করে তা তারই এবং যা কিছু মন্দ সে উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদের পাকড়াও কর না।

হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আর অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন গুরুদায়িত্ব যেমন অর্পণ করেছিলে আমাদের পূর্ববতীদের উপর। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন বোঝার ভার, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। তুমি আমাদের পাপমোচন করে দাও, আমাদের ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের বন্ধু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় তুমি আমাদের বিজয়ী কর।