Surah Al-Maidah / সূরা মায়িদাহ

(আয়াত: ৫১-১০০)

بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

 

আয়াত-৫১ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্য থেকে যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে সে তাদেরই একজন হবে। নিশ্চয় আল্লাহ̖ সৎপথে পরিচালিত করেন না সীমালংঘনকারী লোকদের।

আয়াত–৫২ঃ আর আপনি তাদের দেখবেন যাদের অন্তরে রোগ রয়েছে যে, তারা দৌড়ে গিয়ে ওদেরই মধ্যে প্রবেশ করে এই বলে যে, আমরা আশংকা করছি পাছে আমাদের উপর না কোন বিপদ আপতিত হয়। অচিরেই আল্লাহ̖ বিজয় দেবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে। এমন কিছু দেবেন ফলে তারা যা অন্তরে গোপন রেখেছিল সেজন্য অনুতপ্ত হবে।

আয়াত-৫৩ঃ আর যারা ঈমান এনেছে তারা বলবেঃ এরাই কি সেসব লোক যারা আল্লাহ̖র নামে দৃঢ়ভাবে শপথ করেছিল যে, “তারা তো তোমাদেরই সাথে আছে?” তাদের কৃতকর্মসমূহ নিস্ফল হয়েছে। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আয়াত-৫৪ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ দ্বীন থেকে ফিরে গেলে অচিরেই আল্লাহ̖ এমন এক কওম নিয়ে আসবেন যাদের তিনি ভালবাসবেন এবং যারা তাকে ভালবাসবে; তারা মু’মিনদের প্রতি কোমল হবে আর কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহ̖র পথে জেহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করবে না। এটা আল্লাহ̖র অনুগ্রহ, যাকে তিনি ইচ্ছে করেন তা দান করেন। আল্লাহ̖ প্রাচুর্যদানকারী, সর্বজ্ঞ।

আয়াত-৫৫ঃ তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ̖, তার রাসূল এবং যারা ঈমান এনেছে তারা যারা নামায কায়েম করে, যাকাত দেয়, এ অবস্থায় যে, তারা বিনত বিনম্র।

আয়াত-৫৬ঃ আর যারা আল্লাহ̖, তার রাসূল এবং মুমিনদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারাই আল্লাহ̖র দল, তারাই বিজয়ী হবে।

আয়াত-৫৭ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না আহলে কিতাবের মধ্যে যারা তোমাদের দ্বীনকে হাসি-তামাশা ও খেলার বস্তু মনে করে তাদের এবং অন্যান্য কাফেরদের। তোমরা আল্লাহ̖কে ভয় কর যদি মু’মিন হও।

আয়াত–৫৮ঃ আর যখন তোমরা নামাযের জন্য আহবান কর, তখন তারা একে হাসি-তামাশা ও খেলা বলে মনে করে। কারণ তারা এমন লোক যাদের বোধশক্তি নেই।

আয়াত-৫৯ঃ বলুন – হে আহলে কিতাব! তোমরা কি শুধু এ কারণেই আমাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ কর যে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ̖র প্রতি, আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তার উপর এবং পূর্বে যা নাযিল হয়েছে তার উপরও? তোমাদের অধিকাংশই ফাসেক।

আয়াত-৬০ঃ আপনি বলুন: আমি কি তোমাদের বলে দেব, এর চেয়ে নিকৃষ্ট পরিণাম কার রয়েছে, আল্লাহ̖র কাছে? যাকে আল্লাহ̖ লা’নত করেছেন, যার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন, যাদের কতককে তিনি বানর ও কতককে শূকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন এবং যারা তাগূতের উপাসনা করে, তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্ট এবং সঠিক পথ থেকেও বহু দূরে বিচ্যুত।

আয়াত-৬১ঃ আর তারা যখন তোমাদের কাছে আসে তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি, অথচ তারা এসেছিল কুফর নিয়ে এবং তারা বেরিয়েও গেছে তা নিয়েই। তারা যা গোপন করে, আল্লাহ̖ তা খুব ভাল জানেন।

আয়াত-৬২ঃ আর আপনি তাদের অনেককেই দেখবেন পাপে, সীমালংঘনে এবং হারাম ভক্ষণে অতি তৎপর। কতই না নিকৃষ্ট তারা যা করছে!

আয়াত-৬৩ঃ কেন তাদের নিষেধ করছে না রাববানী ও পণ্ডিতরা পাপ কথা উচ্চারণ করতে ও হারাম ভক্ষণ করতে? অবশ্যই তারা গর্হিত কাজ করছে।

আয়াত-৬৪ঃ আর ইহুদীরা বলে, ‘আল্লাহ̖র হাত বন্ধ হয়ে গেছে’। তাদেরই হাত বন্ধ হয়েছে। তারা যা বলে সে কথার জন্য তাদের উপর অভিসম্পাত। বরং আল্লাহ̖র উভয় তরফ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা তাদের মধ্যের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফর বৃদ্ধি করবেই। আমি তাদের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত সত্রুতা ও হিংসা সঞ্চারিত করে দিয়েছি। যখনই ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়। আর আল্লাহ̖ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।

আয়াত-৬৫ঃ আর যদি আহলে কিতাব ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন তাদের দাখিল করতাম।

আয়াত-৬৬ঃ আর তারা যদি পুরোপুরি পালন করত তাওরাত, ইন̖জিল ও তাদের রবের তরফ থেকে তাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তা, তাহলে তারা তাদের উপর থেকে এবং তাদের পায়ের নিচ থেকে আহার্য লাভ করত। তাদের মধ্যের একদল সরল পথের পথিক, কিন্তু তাদের অধিকাংশই নিকৃষ্ট কাজ করে যাচ্ছে।

আয়াত-৬৭ঃ হে রাসূল! আপনি পৌছে দিন যা আপনার প্রতি আপনার রবের তরফ থেকে নাযিল করা হয়েছে তা, আর যদি তা না করেন তবে তো তার পয়গাম পৌছালেন না। আল্লাহ̖ আপনাকে মানুষের থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ̖ কাফের কওমকে হেদায়েত দান করেন না।

আয়াত-৬৮ঃ আপনি বলে দিনঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা কোন কিছুর উপরই প্রতিষ্ঠিত নও, যতক্ষণ পর্যন্ত না পুরোপুরি পালন করবে তাওরাত, ইন̖জিল ও তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের তরফ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা। আপনার প্রতি আপনার রবের তরফ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বৃদ্ধি করবেই। সুতরাং আপনি এ কাফের কওমের জন্য দুঃখ করবেন না।

আয়াত-৬৯ঃ নিশ্চয় যারা মু’মিন, যারা ইহুদী, সাবেয়ী বা নাসারা, তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ̖র প্রতি, আখেরাতের প্রতি এবং নেক কাজ করেছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃক্ষিতও হবে না।

আয়াত–৭০ঃ আমি তো অঙ্গীকার নিয়েছিলাম বনী ইসরাঈলের কাছ থেকে এবং তাদের কাছে অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম। যখনই তাদের কাছে কোন রাসূল এমন কিছু নিয়ে আসত যা তাদের মনঃপূত নয় তখনই তারা কতককে মিথ্যাবাদী বলত এবং কতককে হত্যা করত।

আয়াত-৭১ঃ আর তারা ধারণা করেছিল যে, তাদের কোন অনিষ্ট হবে না। ফলে তারা আরও অন্ধ ও বধির হয়ে গেল। তারপর আল্লাহ̖ তাদের তওবা কবুল করলেন। এরপরও তাদের অনেকেই অন্ধ ও বধির হয়ে রইল। তারা যা করে আল্লাহ̖ তার সম্যক দ্রষ্টা।

আয়াত-৭২ঃ নিঃসন্দেহে তারা কাফের যারা বলে, মসীহ ইবন মরিয়মই আল্লাহ̖, অথচ মসীহ বলেছিলঃ হে বনী ইসরাঈল! তোমরা ইবাদত কর আল্লাহ̖র যিনি আমার রব এবং তোমাদেরও রব। নিশ্চয় যে কেউ আল্লাহ̖র শরীক সাব্যস্ত করে আল্লাহ̖ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার আবাসস্থল হয় দোযখ। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।

আয়াত-৭৩ঃ অবশ্যই তারা কাফের, যারা বলেঃ “আল্লাহ̖ তো তিনের মধ্যে একজন ” অথচ এক ইলাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ̖ নেই। আর যদি তারা নিবৃত্ত না হয় যা তারা বলে তা থেকে, তাহলে তাদের মধ্যে যারা কুফর করেছে তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আপতিত হবেই।

আয়াত-৭৪ঃ তবে কি তারা আল্লাহ̖র কাছে তওবা করবে না এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? আল্লাহ̖ তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

আয়াত–৭৫ঃ মসীহ ইবন মরিয়াম একজন রাসূল ছাড়া আর কিছু নয়। তার পূর্বে অনেক রাসূল গত হয়েছে এবং তার মা একজন সত্যনিষ্ঠ মহিলা ছিল। তারা উভয়ে খাদ্য ভক্ষণ করত। দেখ, তাদের জন্য কিরূপ যুক্তি-প্রমাণ বিশদভাবে বর্ণনা করি, আরও দেখ তারা উল্টা কোন দিকে যাচ্ছে।

আয়াত-৭৬ঃ বলুনঃ তোমরা কি আল্লাহ̖ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদত কর যার কোন ক্ষমতা নেই তোমাদের অপকার বা উপকার করার? আল্লাহ্ সব শুনেন, সব জানেন।

আয়াত–৭৭ঃ বলুনঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা নিজেদের দ্বীন সম্বন্ধে অন্যায় বাড়াবাড়ি কর না। আর যে সম্প্রদায় পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর না।

আয়াত-৭৮ঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল, দাউদ ও ঈসা ইবন মারইয়ামের মুখে তাদের লা’নত করা হয়েছিল। এটা এ কারণে যে, তারা নাফরমানি করেছিল এবং সীমালংঘনও করত।

আয়াত-৭৯ঃ তারা যেসব অন্যায় কাজ করত তা থেকে পরম্পরকে তারা বারণ করত না। কতই না নিকৃষ্ট ছিল তা যা তারা করত।

আয়াত-৮০ঃ আপনি তাদের অনেককে কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখতে পাবেন। সে কাজ খুবই মন্দ যা তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য করেছে, যে কারণে আল্লাহ̖ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তারা চিরকাল আযাবের মধ্যে থাকবে।

আয়াত-৮১ঃ যদি তারা ঈমান আনত আল্লাহ̖র প্রতি এবং নবীর প্রতি আর তার প্রতি যা নাযিল করা রয়েছে তাতে, তাহলে তারা কাফেরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করত না। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই ফাসেক।

আয়াত-৮২ঃ আপনি সকল মানুষের মধ্যে মু’মিনদের প্রতি অধিক সত্রুতা পোষণকারী পাবেন ইহুদী ও মুশরিকদের আর মানুষের মধ্যে মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্বে অধিক নিকটবর্তী আপনি তাদের পাবেন যারা বলে? “আমরা তো নাসারা”। কারণ তাদের মধ্যে আছে অনেক আলেম ও সংসার-বিরাগী দরবেশ। আর তারা অহংকারও করে না।

আয়াত-৮৩ঃ আর তারা যখন শোনে রাসূলের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তা, তখন আপনি তাদের চোখ অশ্রুবিগলিত দেখতে পাবেন, কারণ তারা সত্যকে চিনে নিয়েছে। তারা বলেঃ হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি; সুতরাং আপনি আমাদের সত্যকে স্বীকারকারীদের তালিকাভুক্ত করে নিন।

আয়াত-৮৪ঃ আর আমাদের কি ওজর থাকতে পারে যে, আমরা ঈমান আনব না আল্লাহ̖র প্রতি এবং সে সত্যের প্রতি যা আমাদের কাছে এসেছে, অথচ আমরা আশা করি যে, আমাদের রব নেককার লোকদের সাথে আমাদের শামিল করবেন?

আয়াত-৮৫ঃ ফলে তাদের এ উক্তির জন্য আল্লাহ তাদের পুরস্কার দেবেন জান্নাত যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয়। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এটাই নেককারদের প্রতিদান।

আয়াত-৮৬ঃ আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে তারাই দোযখবাসী।

আয়াত-৮৭ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা হারাম কর না সেসব উৎকৃষ্ট বস্তু যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করেছেন এবং সীমালংঘন কর না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালবাসেন না।

আয়াত-৮৮ঃ আর আল্লাহ তোমাদের যেসব বস্তু দিয়েছেন তার মধ্যে যা হালাল ও উৎকৃষ্ট তা খাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা ঈমান রাখ।

আয়াত-৮৯ঃ আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য, কিন্তু তিনি তোমাদের পাকড়াও করবেন সেসব শপথের জন্য যা তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে করা আর এর কাফফারা হল দশজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা, মধ্যম ধরনের খাদ্য যা তোমরা সাধারণত তোমাদের পরিবারের লোকদের খেতে দাও; অথবা তাদের পরিধেয় বস্ত্র প্রদান করা; অথবা একজন ক্রীতদাস/দাসী মুক্ত করা; কিন্তু যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না তার জন্য তিন দিন রোজা রাখা। এ হল তোমাদের শপথের কাফফারা, যখন তোমরা শপথ করবে। তোমরা তোমাদের শপথসমূহ রক্ষা কর। এভাবে আল্লাহ̖ তোমাদের জন্য তার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর।

আয়াত-৯০ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ণায়ক শর-এসব নোংরা-অপবিত্র, শয়তানের কাজ ছাড়া আর কিছু নয়। সুতরাং তোমরা এসব থেকে বেঁচে থাক যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

আয়াত-৯১ঃ শয়তান তো চায় তোমাদের মধ্যে সত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করতে মদ ও জুয়ার মাধ্যমে এবং আল্লাহ̖র স্মরণ ও নামায থেকেও সে তোমাদের বিরত রাখতে চায়। তবে কি তোমরা এখনও নিবৃত্ত হবে না?

আয়াত-৯২ঃ তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ̖র ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং সতর্ক হও; কিন্তু যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রেখ, আমার রাসূলের দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্ট প্রচার করা।

আয়াত-৯৩ঃ যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের কোন গুনাহ নেই পূর্বে তারা যা খেয়েছে সেজন্য, যখন তারা সাবধান হয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে। তারপর সাবধান হয় ও ঈমানে দৃঢ় থাকে। তারপর সাবধান হয় ও নেক কাজ করে। আর আল্লাহ নেককারদের ভালবাসেন।

আয়াত-৯৪ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! অবশ্যই আল্লাহ̖ তোমাদের পরীক্ষা করবেন এমন কিছু শিকারের মাধ্যমে যা তোমাদের হাত ও বর্শা সহজেই শিকার করতে পারে, যাতে আল্লাহ̖ বুঝতে পারেন কে তাকে না দেখেও ভয় করে। অতএব যে কেউ এরপরও সীমালংঘন করবে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

আয়াত-৯৫ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা ইহরামে থাকা অবস্থায় শিকারকে হত্যা কর না। তোমাদের মধ্যে কেউ ইচ্ছে করে শিকার হত্যা করলে তার উপর বিনিময় বর্তাবে, যা সমান হবে হত্যাকৃত জন্তুর, তোমাদের মধ্যের দু’জন ন্যায়বান লোক এর ফয়সালা করবে; সে জন্তুটি হাদিয়া হিসেবে কা’বায় পৌছাতে হবে। অথবা তার উপর কাফফারা বর্তাবে-কয়েকজন মিসকীনকে খাওয়ানো; অথবা তার সমপরিমাণ রোজা রাখবে যেন সে আস্বাদন করে তার কৃতকর্মের প্রতিফল। যা গত হয়েছে আল্লাহ̖ তা মাফ করেছেন। তবে কেউ তা পুনরায় করলে আল্লাহ̖ তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেবেন। আল্লাহ̖ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণে সক্ষম।

আয়াত-৯৬ঃ তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সমুদ্রের শিকার ধরা এবং তা খাওয়া, তোমাদের ও মুসাফিরদের ভোগের জন্য। আর তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে স্থলের শিকার ধরা, যতক্ষণ তোমরা ইহরাম অবস্থায় থাকবে। ভয় কর আল্লাহ̖কে যার কাছে তোমাদের একত্র করা হবে।

আয়াত-৯৭ঃ আল্লাহ̖ মানুষের কল্যাণের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন মহাসম্মানিত ঘর কাবাকে, সম্মানিত মাসকে, কোরবানীর জন্য কা’বায় প্রেরিত পশুকে এবং গলায় মালা পরিহিত পশুকে। এর কারণ এই যে, তোমরা যেন জানতে পার যে, অবশ্যই আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আসমানে এবং যা কিছু আছে জমিনে, আর আল্লাহ তো সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।

আয়াত–৯৮ঃ তোমরা জেনে নাও, নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা এবং অবশ্যই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

আয়াত-৯৯ঃ রাসূলের দায়িত্ব তো শুধু প্রচার করা। আল্লাহ জানেন তোমরা যা প্রকাশ কর এবং যা গোপন কর।

আয়াত-১০০ঃ বলে দিনঃ সমান নয় অপবিত্র ও পবিত্র, যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে। সুতরাং ভয় কর আল্লাহ̖কে, হে জ্ঞানবানরা! যেন তোমরা সফলকাম হও।

Surah Al-Maidah 1-50

Surah Al-Maidah / সূরা মায়িদাহ (আয়াত: ১-৫০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত-১ঃ ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ করবে। তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে চতুষ্পদ জন্তু, সেগুলো ছাড়া যা তোমাদের কাছে...

Surah An-Nisa 151-176

Surah An-Nisa / সূরা আন্ নিসা (আয়াত: ১৫১-১৭৬) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত-১৫১ঃ এরাই প্রকৃতপক্ষে কাফের। আর আমি কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। আয়াত-১৫২ঃ যারা ঈমান আনে আল্লাহর...

Surah An-Nisa 101-150

Surah An-Nisa / সূরা আন্ নিসা (আয়াত: ১০১-১৫০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত-১০১ঃ আর যখন তোমরা পৃথিবীতে সফর করবে, তখন তোমাদের কোন গুনাহ হবে না যদি তোমরা নামায সংক্ষিপ্ত কর, এ আশংকায় যে, কাফেররা তোমাদের...

An-Nisa (51-100)

Surah An-Nisa / সূরা আন্ নিসা (আয়াত: ৫১-১০০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত-৫১ঃ তুমি কি তাদের দেখনি যাদের দেয়া হয়েছিল কিতাবের এক অংশ, তারা ঈমান রাখে জিবত ও তাগূতে এবং তারা কাফেরদের সন্মন্ধে বলেঃ এরাই...

An-Nisa (1-50)

Surah An-Nisa / সূরা আন নিসা (আয়াত: ১-৫০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত–১ঃ হে মানব! তোমরা ভয় কর তোমাদের রবকে, যিনি পয়দা করেছেন তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে এবং যিনি পয়দা করেছেন তার থেকে তার জোড়া, আর...

Surah Ali ‘Imran (151-200)

Surah Ali 'Imran/ সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: ১৫১-২০০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি আয়াত-১৫১ঃ অতি সত্ত্বর আমি কাফেরদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার করব, কেননা তারা আল্লাহর এমন শরীক সাব্যস্ত করেছে যার সপক্ষে আল্লাহ কোন...

Surah Ali ‘Imran (126-150)

Surah Ali 'Imran/ সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: ১২৬-১৫০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি   وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشْرَىٰ لَكُمْ وَلِتَطْمَئِنَّ قُلُوبُكُم بِهِۦ ۗ وَمَا ٱلنَّصْرُ إِلَّا مِنْ عِندِ ٱللَّهِ...

Surah Ali ‘Imran (101-125)

Surah Ali 'Imran/ সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: ১০১-১২৫) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি   وَكَيْفَ تَكْفُرُونَ وَأَنتُمْ تُتْلَىٰ عَلَيْكُمْ ءَايَـٰتُ ٱللَّهِ وَفِيكُمْ رَسُولُهُۥ ۗ وَمَن يَعْتَصِم بِٱللَّهِ...

Surah Ali ‘Imran (76-100)

Surah Ali 'Imran/ সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: ৭৬-১০০) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি   بَلَىٰ مَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِۦ وَٱتَّقَىٰ فَإِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُتَّقِينَ ٧٦ আয়াত-৭৬: হাঁ, অবশ্যই যে ব্যক্তি তার...

Surah Ali ‘Imran (51-75)

Surah Ali 'Imran/ সূরা আলে-ইমরান (আয়াত: ৫১-৭৫) بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি   إِنَّ ٱللَّهَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۗ هَـٰذَا صِرَٰطٌۭ مُّسْتَقِيمٌۭ ٥١ আয়াত-৫১: নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা এবং...