Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ২৭৬-২২৮৬)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
يَمْحَقُ ٱللَّهُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَيُرْبِى ٱلصَّدَقَـٰتِ ۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ ٢٧٦
আয়াত-২৭৬: আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে পছন্দ করেন না।
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ٢٧٧
আয়াত-২৭৭: নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, নেক কাজ করেছে, নামজ কায়েম করেছে এবং যাকাত দিয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের নেই কোন ভয় এবং তারা দুঃখিতও হবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَذَرُوا۟ مَا بَقِىَ مِنَ ٱلرِّبَوٰٓا۟ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ٢٧٨
আয়াত-২৭৮: হে মু’মিনগণ! যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা কিছু বকেয়া রয়ে গেছে তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হয়ে থাক।
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍۢ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ ٢٧٩
আয়াত-২৭৯: তারপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তাহলে আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে তৈরি হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের জন্য তোমাদের মূলধন রয়ে যাবে। তোমরা কাউকে অত্যাচার করবে না আর না কেউ তোমাদের অত্যাচার করবে।
وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍۢ فَنَظِرَةٌ إِلَىٰ مَيْسَرَةٍۢ ۚ وَأَن تَصَدَّقُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ٢٨٠
আয়াত-২৮০: খাতক যদি অভাবগ্রস্ত হয় তবে তার স্বচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেয়া উচিত। আর যদি তোমরা ক্ষমা করে দাও, তা হবে তোমাদের জন্য অতি উত্তম কাজ, যদি তোমরা জানতে।
وَٱتَّقُوا۟ يَوْمًۭا تُرْجَعُونَ فِيهِ إِلَى ٱللَّهِ ۖ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍۢ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ ٢٨١
আয়াত-২৮১: আর সেদিনকে ভয় কর, যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। তারপর প্রত্যেককেই তার কর্মফল পুরোপুরি দেয়া হবে, আর তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবে না।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِذَا تَدَايَنتُم بِدَيْنٍ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى فَٱكْتُبُوهُ ۚ وَلْيَكْتُب بَّيْنَكُمْ كَاتِبٌۢ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَلَا يَأْبَ كَاتِبٌ أَن يَكْتُبَ كَمَا عَلَّمَهُ ٱللَّهُ ۚ فَلْيَكْتُبْ وَلْيُمْلِلِ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ وَلَا يَبْخَسْ مِنْهُ شَيْـًۭٔا ۚ فَإِن كَانَ ٱلَّذِى عَلَيْهِ ٱلْحَقُّ سَفِيهًا أَوْ ضَعِيفًا أَوْ لَا يَسْتَطِيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَلْيُمْلِلْ وَلِيُّهُۥ بِٱلْعَدْلِ ۚ وَٱسْتَشْهِدُوا۟ شَهِيدَيْنِ مِن رِّجَالِكُمْ ۖ فَإِن لَّمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌۭ وَٱمْرَأَتَانِ مِمَّن تَرْضَوْنَ مِنَ ٱلشُّهَدَآءِ أَن تَضِلَّ إِحْدَىٰهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَىٰهُمَا ٱلْأُخْرَىٰ ۚ وَلَا يَأْبَ ٱلشُّهَدَآءُ إِذَا مَا دُعُوا۟ ۚ وَلَا تَسْـَٔمُوٓا۟ أَن تَكْتُبُوهُ صَغِيرًا أَوْ كَبِيرًا إِلَىٰٓ أَجَلِهِۦ ۚ ذَٰلِكُمْ أَقْسَطُ عِندَ ٱللَّهِ وَأَقْوَمُ لِلشَّهَـٰدَةِ وَأَدْنَىٰٓ أَلَّا تَرْتَابُوٓا۟ ۖ إِلَّآ أَن تَكُونَ تِجَـٰرَةً حَاضِرَةًۭ تُدِيرُونَهَا بَيْنَكُمْ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَلَّا تَكْتُبُوهَا ۗ وَأَشْهِدُوٓا۟ إِذَا تَبَايَعْتُمْ ۚ وَلَا يُضَآرَّ كَاتِبٌۭ وَلَا شَهِيدٌۭ ۚ وَإِن تَفْعَلُوا۟ فَإِنَّهُۥ فُسُوقٌۢ بِكُمْ ۗ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ۖ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱللَّهُ ۗ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيمٌۭ ٢٨٢
আয়াত-২৮২: হে মু’মিনগণ যারা ঈমান এনেছ! তোমরা যখন নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের লেন-দেন কর তখন তা লিখে রেখ। তোমাদের মধ্যে কোন লোক যেন ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেয়। লেখক যেন লিখতে অস্বীকার না করে যেহেতু আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সুতরাং সে যেন লিখে দেয়। আর ঋণগ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয়। এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে ও এতে যেন বিন্দুমাত্র কম না করে। কিন্তু ঋণগ্রহীতা যদি নিবোধ হয় কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে তবে যেন তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয়। দু’জন সাক্ষী রাখবে তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে। দু’জন পুরুষ যদি না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা–ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা পছন্দ কর-তাদের একজন ভুল করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেবে। যখন সাক্ষীদের ডাকা হবে তখন যেন তারা অস্বীকার না করে। ঋণ ছোট হোক কিংবা বড় হোক, মেয়াদসহ তা লিখে রাখতে অলসতা করবে না। তোমাদের এ লিখে রাখার কাজ আল্লাহর কাছে ন্যায্যতর এবং সাক্ষ্যের জন্য দৃঢ়তর আর তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার ব্যাপারে নিকটতর। কিন্তু কারবার যদি নগদ হয়, পরস্পর হাতে হাতে আদান-প্রদান করা হয়, তবে তা যদি তোমরা না লিখে রাখ তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। যখন তোমরা বেচা-কেনা করবে তখন সাক্ষী রাখবে। কোন লেখক ও সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি তোমরা এরূপ কর তবে অবশ্যই তা হবে তোমাদের জন্য পাপের বিষয়। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তিনি তোমাদের শিক্ষা দেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
وَإِن كُنتُمْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ وَلَمْ تَجِدُوا۟ كَاتِبًۭا فَرِهَـٰنٌۭ مَّقْبُوضَةٌۭ ۖ فَإِنْ أَمِنَ بَعْضُكُم بَعْضًۭا فَلْيُؤَدِّ ٱلَّذِى ٱؤْتُمِنَ أَمَـٰنَتَهُۥ وَلْيَتَّقِ ٱللَّهَ رَبَّهُۥ ۗ وَلَا تَكْتُمُوا۟ ٱلشَّهَـٰدَةَ ۚ وَمَن يَكْتُمْهَا فَإِنَّهُۥٓ ءَاثِمٌۭ قَلْبُهُۥ ۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌۭ ٢٨٣
আয়াত-২৮৩: আর যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, তবে বন্ধকী বস্তু হস্তগত রাখা বিধেয়। যদি তোমাদের একে অপরকে বিশ্বাস করে, তবে যাকে বিশ্বাস করা হয়, সে যেন আমানত ফিরিয়ে দেয় এবং তার পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করবে না। যে কেউ তা গোপন করবে, অবশ্যই তার অন্তর হবে পাপপূৰ্ণ। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত।
لِّلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ ۗ وَإِن تُبْدُوا۟ مَا فِىٓ أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ ٱللَّهُ ۖ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ ۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ ٢٨٤
আয়াত-২৮৪: যা কিছু আছে আসমানে এবং যা কিছু আছে জমিনে সবকিছুই আল্লাহর। তোমাদের মনে যা আছে তা তোমরা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। তারপর যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَـٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍۢ مِّن رُّسُلِهِۦ ۚ وَقَالُوا۟ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ ٱلْمَصِيرُ ٢٨٥
আয়াত-২৮৫: রাসূল ঈমান এনেছেন ঐসব বিষয়ের উপর যা তাঁর প্রতি নাযিল করা হয়েছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে এবং মু’মিনরাও ঈমান এনেছে। তারা সবাই ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি এবং তার রাসূলদের প্রতি। তারা বলে; আমরা তার রাসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। তারা আরো বলে; আমরা শুনেছি এবং মান্য করেছি। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। আর প্রত্যাবর্তন তো তোমারই কাছে করতে হবে।
لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا ٱكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَآ إِن نَّسِينَآ أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَآ إِصْرًۭا كَمَا حَمَلْتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦ ۖ وَٱعْفُ عَنَّا وَٱغْفِرْ لَنَا وَٱرْحَمْنَآ ۚ أَنتَ مَوْلَىٰنَا فَٱنصُرْنَا عَلَى ٱلْقَوْمِ ٱلْكَـٰفِرِينَ ٢٨٦
আয়াত-২৮৬: আল্লাহ অৰ্পণ করেন না কারো উপর এমন কোন দায়িত্ব যা বহন করার সাধ্য তার নেই। যা কিছু ভাল সে কামাই করে তা তারই এবং যা কিছু মন্দ সে উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদের পাকড়াও কর না।
হে আমাদের পরওয়ারদেগার! আর অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন গুরুদায়িত্ব যেমন অর্পণ করেছিলে আমাদের পূর্ববতীদের উপর। হে আমাদের পরওয়ারদেগার! অর্পণ কর না আমাদের উপর এমন বোঝার ভার, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। তুমি আমাদের পাপমোচন করে দাও, আমাদের ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের বন্ধু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় তুমি আমাদের বিজয়ী কর।