Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ১৭৬-২০০)
بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ نَزَّلَ ٱلْكِتَـٰبَ بِٱلْحَقِّ ۗ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ ٱخْتَلَفُوا۟ فِى ٱلْكِتَـٰبِ لَفِى شِقَاقٍۭ بَعِيدٍۢ ١٧٦
আয়াত-১৭৬: আর এটা এ কারণে যে, আল্লাহ সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছেন। আর যারা কিতাবে মতভেদ সৃষ্টি করেছে নিশ্চয় তারা সুদূরপ্রসারী মতবিরোধের মধ্যে নিপতিত রয়েছে।
لَّيْسَ ٱلْبِرَّ أَن تُوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ ٱلْمَشْرِقِ وَٱلْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ ٱلْبِرَّ مَنْ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلْيَوْمِ ٱلْـَٔاخِرِ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةِ وَٱلْكِتَـٰبِ وَٱلنَّبِيِّـۧنَ وَءَاتَى ٱلْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِۦ ذَوِى ٱلْقُرْبَىٰ وَٱلْيَتَـٰمَىٰ وَٱلْمَسَـٰكِينَ وَٱبْنَ ٱلسَّبِيلِ وَٱلسَّآئِلِينَ وَفِى ٱلرِّقَابِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَـٰهَدُوا۟ ۖ وَٱلصَّـٰبِرِينَ فِى ٱلْبَأْسَآءِ وَٱلضَّرَّآءِ وَحِينَ ٱلْبَأْسِ ۗ أُو۟لَـٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ صَدَقُوا۟ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُتَّقُونَ ١٧٧
আয়াত-১৭৭: কোন পুণ্য নেই পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে; কিন্তু পুণ্য আছে কেউ ঈমান আনলে আল্লাহর উপর, আখেরাতের উপর, ফেরেশতাগণের উপর, সকল কিতাবের উপর, আর সকল নবী-রাসূলগণের উপর, এবং অর্থ দান করলে আল্লাহুপ্রেমে আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকীন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী এবং দাস মুক্তির জন্য; সালাত কায়েম করলে, যাকাত দিলে, কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলে আর অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধ-বিভ্রাটে ধৈর্যধারণ করলে। এরাই হল প্রকৃত সত্যপরায়ণ, আর এরাই মোত্তাকী।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلْقِصَاصُ فِى ٱلْقَتْلَى ۖ ٱلْحُرُّ بِٱلْحُرِّ وَٱلْعَبْدُ بِٱلْعَبْدِ وَٱلْأُنثَىٰ بِٱلْأُنثَىٰ ۚ فَمَنْ عُفِىَ لَهُۥ مِنْ أَخِيهِ شَىْءٌۭ فَٱتِّبَاعٌۢ بِٱلْمَعْرُوفِ وَأَدَآءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَـٰنٍۢ ۗ ذَٰلِكَ تَخْفِيفٌۭ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌۭ ۗ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٌۭ ١٧٨
আয়াত–১৭৮: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের জন্য নিহতদের ব্যাপারে কিসাসের বিধান দেয়া হল, স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের তরফ থেকে কাউকে কিছু মাফ করে দেয়া হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করতে হবে এবং সততার সাথে তা তাকে প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে ভার লাঘব ও বিশেষ রহমত। এরপরও যে কেউ বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
وَلَكُمْ فِى ٱلْقِصَاصِ حَيَوٰةٌۭ يَـٰٓأُو۟لِى ٱلْأَلْبَـٰبِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ١٧٩
আয়াত–১৭৯: হে বুদ্ধিমানগণ! তোমাদের জন্য কিসাসের মধ্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।
كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلْمَوْتُ إِن تَرَكَ خَيْرًا ٱلْوَصِيَّةُ لِلْوَٰلِدَيْنِ وَٱلْأَقْرَبِينَ بِٱلْمَعْرُوفِ ۖ حَقًّا عَلَى ٱلْمُتَّقِينَ ١٨٠
আয়াত-১৮০: যখন তোমাদের কারো মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয় সে যদি কিছু ধন-সম্পত্তি রেখে যায়, তবে তার জন্য ইনসাফের সাথে পিতা-মাতা ও নিকট-আত্মীয়দের জন্য অসিয়ত করা বিধিবদ্ধ করা হল। মোত্তাকীদের জন্য এটি একটি কর্তব্য।
فَمَنۢ بَدَّلَهُۥ بَعْدَ مَا سَمِعَهُۥ فَإِنَّمَآ إِثْمُهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ يُبَدِّلُونَهُۥٓ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌۭ ١٨١
আয়াত-১৮১: যদি তা শোনার পর কেউ তাতে কোন রকম পরিবর্তন করে, তবে যারা পরিবর্তন করবে তাদের উপর এর পাপ বর্তাবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
فَمَنْ خَافَ مِن مُّوصٍۢ جَنَفًا أَوْ إِثْمًۭا فَأَصْلَحَ بَيْنَهُمْ فَلَآ إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٨٢
আয়াত – ১৮২: হাঁ, কেউ যদি আসিয়তকারীর পক্ষ থেকে কোন রকমের পক্ষপাতিত্বের কিংবা কোন অপরাধমূলক সিদ্ধান্তের আশংকা করে এবং তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তবে তার উপর কোন পাপ বর্তাবে না। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ١٨٣
আয়াত –১৮৩: হে ঈমানদারগণ, যারা ঈমান এনেছ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হল যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববতী লোকদের উপর, যেন তোমরা মোত্তাকী হতে পার__
أَيَّامًۭا مَّعْدُودَٰتٍۢ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ فَعِدَّةٌۭ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدْيَةٌۭ طَعَامُ مِسْكِينٍۢ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًۭا فَهُوَ خَيْرٌۭ لَّهُۥ ۚ وَأَن تَصُومُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ١٨٤
আয়াত-১৮৪: নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে রোজার সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর রোজা যাদের জন্য অতিশয় কষ্টদায়ক, তারা এর পরিবর্তে ফিদয়া দেবে একজন মিসকীনকে খাদ্যদান করে। কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। যদি তোমরা রোজা রাখ; তবে তা হবে তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর, যদি তোমরা তা বুঝতে।
شَهْرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلْقُرْءَانُ هُدًۭى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَـٰتٍۢ مِّنَ ٱلْهُدَىٰ وَٱلْفُرْقَانِ ۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ فَعِدَّةٌۭ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا۟ ٱلْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا۟ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ١٨٥
আয়াত-১৮৫: রমজান মাস, এ মাসেই কোরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হেদায়াত, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোজা রাখে। তবে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে রোজার সংখ্যা পূরণ করে দেবে। আল্লাহ চান তোমাদের জন্য সহজ করতে, তিনি এমন কিছু চান না যা তোমাদের জন্য কষ্টকর। যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার দরুন আল্লাহর মহিমা বর্ণনা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِى عَنِّى فَإِنِّى قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ ٱلدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا۟ لِى وَلْيُؤْمِنُوا۟ بِى لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ ١٨٦
আয়াত-১৮৬: আর আমার বান্দারা যখন আমার ব্যাপারে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি তো আছি নিকটেই। আমি সাড়া দেই প্রার্থনাকারীর ডাকে যখন সে আমার কাছে প্রার্থনা করে। সুতরাং তারাও আমার হুকুম মান্য করুক এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌۭ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌۭ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَٱلْـَٔـٰنَ بَـٰشِرُوهُنَّ وَٱبْتَغُوا۟ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلْخَيْطُ ٱلْأَبْيَضُ مِنَ ٱلْخَيْطِ ٱلْأَسْوَدِ مِنَ ٱلْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا۟ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَـٰشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَـٰكِفُونَ فِى ٱلْمَسَـٰجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ ءَايَـٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ ١٨٧
আয়াত–১৮৭: তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সাথে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদের ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। তারপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর তোমরা যখন মসজিদে ইতিকাফ করবে তখন স্ত্রীদের সাথে সহবাস করবে না। এগুলো আল্লাহর বেঁধে দেয়া সীমারেখা। সুতরাং এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে আল্লাহ তার নিদর্শনাবলী মানুষের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে।
وَلَا تَأْكُلُوٓا۟ أَمْوَٰلَكُم بَيْنَكُم بِٱلْبَـٰطِلِ وَتُدْلُوا۟ بِهَآ إِلَى ٱلْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا۟ فَرِيقًۭا مِّنْ أَمْوَٰلِ ٱلنَّاسِ بِٱلْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ ١٨٨
আয়াত –১৮৮: তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের অর্থ-সম্পদ গ্রাস কর না এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পথে গ্রাস করার জন্য বিচারকদের কাছে পেশ কর না।
يَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْأَهِلَّةِ ۖ قُلْ هِىَ مَوَٰقِيتُ لِلنَّاسِ وَٱلْحَجِّ ۗ وَلَيْسَ ٱلْبِرُّ بِأَن تَأْتُوا۟ ٱلْبُيُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَـٰكِنَّ ٱلْبِرَّ مَنِ ٱتَّقَىٰ ۗ وَأْتُوا۟ ٱلْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَٰبِهَا ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ١٨٩
আয়াত-১৮৯: তারা তোমার কাছে নতুন চাঁদের বিষয়ে জানতে চায়। বলে দাও; এটি মানুষের জন্য এবং হজ্জের জন্য সময় নির্ধারণ করার মাধ্যম। আর পেছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করাতে কোন পুণ্য নেই, অবশ্য পুণ্য আছে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করলে। সুতরাং তোমরা দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা কৃতকার্য হতে পার।
وَقَـٰتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يُقَـٰتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوٓا۟ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْمُعْتَدِينَ ١٩٠
আয়াত-১৯০: আর তোমরা যুদ্ধ কর আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে; অবশ্য বাড়াবাড়ি কর না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারীদের ভালবাসেন না।
وَٱقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ ۚ وَٱلْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ ٱلْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَـٰتِلُوهُمْ عِندَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَـٰتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِن قَـٰتَلُوكُمْ فَٱقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَآءُ ٱلْكَـٰفِرِينَ ١٩١
আয়াত-১৯১: আর যেখানে তাদের পাবে হত্যা করবে এবং যেখান থেকে তারা তোমাদের বের করেছে, তোমরা তাদের সেখান থেকে বের করবে। ফিত্না-ফাসাদ হল হত্যার চেয়েও গুরুতর। আর তোমরা তাদের সাথে মাসজিদুল হারামের কাছে যুদ্ধ করবে না যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে যুদ্ধ করে। তবে তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরা তাদের হত্যা করবে। এ হল কাফেরদের পরিণাম।
فَإِنِ ٱنتَهَوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٩٢
আয়াত-১৯২: আর তারা যদি বিরত থাকে, তবে আল্লাহ তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَقَـٰتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌۭ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ لِلَّهِ ۖ فَإِنِ ٱنتَهَوْا۟ فَلَا عُدْوَٰنَ إِلَّا عَلَى ٱلظَّـٰلِمِينَ ١٩٣
আয়াত-১৯৩: আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না ফেতনার অবসান হয় এবং দ্বীন শুধু আল্লাহর জন্য হয়। তারপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় তবে সীমালংঘনকারীদের ছাড়া কাউকে জবরদস্তি করা চলবে না।
ٱلشَّهْرُ ٱلْحَرَامُ بِٱلشَّهْرِ ٱلْحَرَامِ وَٱلْحُرُمَـٰتُ قِصَاصٌۭ ۚ فَمَنِ ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ فَٱعْتَدُوا۟ عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا ٱعْتَدَىٰ عَلَيْكُمْ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلْمُتَّقِينَ ١٩٤
আয়াত-১৯৪: পবিত্র মাসই হল পবিত্র মাসের বদলা আর যাবতীয় পবিত্র বিষয় যার অবমাননা করা নিষিদ্ধ তার জন্য কিসাস। কাজেই যে কেউ তোমাদের উপর জবরদস্তি করবে তোমরাও তাদের উপর জবরদস্তি করবে, যেমন জবরদস্তি তারা তোমাদের উপর করেছে। এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ: আল্লাহ তো মোত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।
وَأَنفِقُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلَا تُلْقُوا۟ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى ٱلتَّهْلُكَةِ ۛ وَأَحْسِنُوٓا۟ ۛ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُحْسِنِينَ ١٩٥
আয়াত –১৯৫: আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে এবং নিজের হাতে নিজেদের তোমরা ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কর না। আর তোমরা সৎকাজ কর। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।
وَأَتِمُّوا۟ ٱلْحَجَّ وَٱلْعُمْرَةَ لِلَّهِ ۚ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا ٱسْتَيْسَرَ مِنَ ٱلْهَدْىِ ۖ وَلَا تَحْلِقُوا۟ رُءُوسَكُمْ حَتَّىٰ يَبْلُغَ ٱلْهَدْىُ مَحِلَّهُۥ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ بِهِۦٓ أَذًۭى مِّن رَّأْسِهِۦ فَفِدْيَةٌۭ مِّن صِيَامٍ أَوْ صَدَقَةٍ أَوْ نُسُكٍۢ ۚ فَإِذَآ أَمِنتُمْ فَمَن تَمَتَّعَ بِٱلْعُمْرَةِ إِلَى ٱلْحَجِّ فَمَا ٱسْتَيْسَرَ مِنَ ٱلْهَدْىِ ۚ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلَـٰثَةِ أَيَّامٍۢ فِى ٱلْحَجِّ وَسَبْعَةٍ إِذَا رَجَعْتُمْ ۗ تِلْكَ عَشَرَةٌۭ كَامِلَةٌۭ ۗ ذَٰلِكَ لِمَن لَّمْ يَكُنْ أَهْلُهُۥ حَاضِرِى ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ ۚ وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلْعِقَابِ ١٩٦
আয়াত-১৯৬: আর তোমরা পূর্ণ কর হজ্জ ও উমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে। কিন্তু যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহলে কোরবানির জন্য যা কিছু সহজলভ্য তা-ই কোরবানি কর। কোরবানির পশু যথাস্থানে না পৌছা পর্যন্ত তোমরা মাথা মুণ্ডন করবে না। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা মাথায় কোন কষ্ট থাকে তবে রোজা কিংবা সাদকা অথবা কোরবানি দিয়ে তার ফিদ̖য়া দেবে। যখন তোমরা নিরাপদ হবে, তখন তোমাদের মধ্যে যে কেউ হজ্জ ও উমরা একত্রে পালন করতে চায়, সে যা কিছু সহজলভ্য তা দিয়ে কোরবানি করবে। তবে যদি কেউ তা না পায় তাহলে সে হজ্জের সময় তিনদিন এবং ঘরে ফিরে যাবার পর সাতদিন, মোট দশদিন রোজা রাখবে। এ নির্দেশ তাদের জন্য যাদের পরিজনবর্গ মাসজিদে হারামের আশেপাশে বসবাস করে না। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ̖র আযাব অত্যন্ত কঠোর।
ٱلْحَجُّ أَشْهُرٌۭ مَّعْلُومَـٰتٌۭ ۚ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ ٱلْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِى ٱلْحَجِّ ۗ وَمَا تَفْعَلُوا۟ مِنْ خَيْرٍۢ يَعْلَمْهُ ٱللَّهُ ۗ وَتَزَوَّدُوا۟ فَإِنَّ خَيْرَ ٱلزَّادِ ٱلتَّقْوَىٰ ۚ وَٱتَّقُونِ يَـٰٓأُو۟لِى ٱلْأَلْبَـٰبِ ١٩٧
আয়াত-১৯৭: হজ্জের আছে কয়েকটি সুবিদিত মাস। এসব মাসে যে কেউ হজ্জ করা স্থির করবে, তার জন্য হজ্জের সময়ে স্ত্রী সহবাস, অন্যায় আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদ করা বৈধ নয়। আর তোমরা যা কিছু উত্তম কাজ কর আল্লাহ তা জানেন। এবং তোমরা পাথেয় সাথে নিও। তবে সর্বোত্তম পাথেয় হল তাক̖ওয়া। হে জ্ঞানবানরা তোমরা আমাকেই ভয় কর।
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَبْتَغُوا۟ فَضْلًۭا مِّن رَّبِّكُمْ ۚ فَإِذَآ أَفَضْتُم مِّنْ عَرَفَـٰتٍۢ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ عِندَ ٱلْمَشْعَرِ ٱلْحَرَامِ ۖ وَٱذْكُرُوهُ كَمَا هَدَىٰكُمْ وَإِن كُنتُم مِّن قَبْلِهِۦ لَمِنَ ٱلضَّآلِّينَ ١٩٨
আয়াত-১৯৮: তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় তোমাদের কোন পাপ নেই। তারপর যখন তোমরা আরাফাত থেকে ফিরে আসবে তখন মাশআরুল হারামের কাছে পৌছে আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং তাঁকে ঠিক সেভাবে স্মরণ করবে যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও ইতিপূর্বে তোমরা বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।
ثُمَّ أَفِيضُوا۟ مِنْ حَيْثُ أَفَاضَ ٱلنَّاسُ وَٱسْتَغْفِرُوا۟ ٱللَّهَ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٌۭ رَّحِيمٌۭ ١٩٩
আয়াত-১৯৯: তারপর তোমরা দ্রুতগতিতে সেখান থেকে ফিরে এস যেখান থেকে সবাই ফিরে এবং আল্লাহরই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
فَإِذَا قَضَيْتُم مَّنَـٰسِكَكُمْ فَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَذِكْرِكُمْ ءَابَآءَكُمْ أَوْ أَشَدَّ ذِكْرًۭا ۗ فَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِى ٱلدُّنْيَا وَمَا لَهُۥ فِى ٱلْـَٔاخِرَةِ مِنْ خَلَـٰقٍۢ ٢٠٠
আয়াত-২০০: আর যখন তোমরা হজ্জের যাবতীয় অনুষ্ঠান সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন তোমাদের বাপ-দাদাদের স্মরণ করতে, বরং তার চেয়েও অধিক স্মরণ করবে। আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যে বলেঃ হে আমাদের প্রভু! এ দুনিয়াতেই আমাদের দাও। বস্তুত আখেরাতে তার জন্য কোন অংশ নেই।