Surah Al-Baqarah | সূরা আল-বাকারা
(আয়াত: ১-২৫)
পরম করুণাময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
1. الم
আয়াত-১: আলিফ̖-লাম-মীম।
2.ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
আয়াত-২: আল-কোরআন সেই কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, এতে রয়েছে মোত্তাকীদের জন্য পথের দিশা।
3. الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
আয়াত-৩: মোত্তাকী তারা, যারা গায়েবে ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রুযী দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।
4. وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ 4.يُوقِنُونَ
আয়াত-৪: আর যারা ঈমান রাখে আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে এবং আপনার পূর্ববতীদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে। আর তারা আখেরাতের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।
আয়াত-৫: তারাই রয়েছে হেদায়াতের উপর তাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এবং তারাই প্রকৃত সফলকাম।
6. إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
আয়াত-৬: নিশ্চয় যারা কাফের হয়েছে, তাদের আপনি ভয় দেখান বা না দেখান, উভয়ই তাদের জন্য সমান, তারা ঈমান আনবে না।
7. خَتَمَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ وَعَلَىٰ سَمْعِهِمْ ۖ وَعَلَىٰ أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
আয়াত – ৭: মোহর মেরে দিয়েছেন আল্লাহ তাদের অন্তরের উপর এবং তাদের কানের উপর, তাদের চোখের উপর রয়েছে পর্দা, আর তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি।
8. وَمِنَ النَّاسِ مَن يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُم بِمُؤْمِنِينَ
আয়াত-৮: আর মানুষের মধ্যে কিছু এমন লোকও আছে যারা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি’; কিন্তু আসলে তারা ঈমানদার নয়।
9. يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَمَا يَخْدَعُونَ إِلَّا أَنفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُونَ
আয়াত-৯: তারা ধোঁকা দিতে চায় আল্লাহ এবং ঈমানদারদের। অথচ তারা যে নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না তা তারা বুঝতে পারে না।
10. فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْذِبُونَ
আয়াত-১০: তাদের অন্তরে রয়েছে রোগ। তারপর আল্লাহ তাদের রোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কেননা তারা মিথ্যা বলত।
11. وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ
আয়াত-১১: আর যখন তাদের বলা হয় যে, দুনিয়ায় তোমরা ফাসাদ সৃষ্টি করনা, তখন তারা বলে, আমরা তো কেবল শান্তি স্থাপনকারী।
12. أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ وَلَـٰكِن لَّا يَشْعُرُونَ
আয়াত-১২: সাবধান তারাই ফাসাদ সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা বুঝতে পারে না।
13. وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ ۗ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَـٰكِن لَّا يَعْلَمُونَ
আয়াত-১৩: আর যখন তাদের বলা হয়, অন্যান্য লোকেরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন; তখন তারা বলে, ‘আমরা কি সেরূপ ঈমান আনব যেরূপ ঈমান এনেছে বোকারা?’ সাবধান! তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বুঝতে পারছে না।
14. وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا إِلَىٰ شَيَاطِينِهِمْ قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُونَ
আয়াত-১৪: আর যখন তারা ঈমানদারদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন তারা একান্তে তাদের শয়তানদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। আমরা তো শুধু ঈমানদারগণের সঙ্গে তামাশা করে থাকি।
15. اللَّهُ يَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
আয়াত-১৫: আল্লাহ̖ই তামাশা করছেন তাদের সাথে। আর তাদের তিনি অবকাশ দিয়েছেন, ফলে তারা নিজেদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
16. أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدَىٰ فَمَا رَبِحَت تِّجَارَتُهُمْ وَمَا كَانُوا مُهْتَدِينَ
আয়াত-১৬: এরাই সেসব লোক, যারা হেদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী ক্রয় করেছে। অতএব তাদের এ ব্যবসা লাভজনক হয়নি। আর তারা সঠিক পথেও পরিচালিত নয়।
17. مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ الَّذِي اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِي ظُلُمَاتٍ لَّا يُبْصِرُونَ
আয়াত-১৭: তাদের অবস্থা ঐ লোকের মত যে কোথাও আগুন জ্বালাল, পরে যখন আগুন তার চারদিকের সবকিছু আলোকিত করল, তখন আল্লাহ তাদের আলো নিয়ে গেলেন এবং তাদের ছেড়ে দিলেন ঘোর অন্ধকারে, ফলে তারা কিছুই দেখতে পায় না।
18. صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
আয়াত-১৮: তারা বধির, মূক ও অন্ধ। কাজেই তারা ফিরে আসবে না।
19. أَوْ كَصَيِّبٍ مِّنَ السَّمَاءِ فِيهِ ظُلُمَاتٌ وَرَعْدٌ وَبَرْقٌ يَجْعَلُونَ أَصَابِعَهُمْ فِي آذَانِهِم مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الْمَوْتِ ۚ وَاللَّهُ مُحِيطٌ بِالْكَافِرِينَ
আয়াত-১৯: অথবা তাদের অবস্থা সেসব পথিকের ন্যায়, যারা আকাশ থেকে মুষলধারে বর্ষিত বৃষ্টিতে পথ চলে, যাতে থাকে ঘোর অন্ধকার, বজধ্বনি ও বিদ্যু চমক। মৃত্যুর ভয়ে তারা বজগর্জনের সময় নিজেদের আঙ্গুল কানে গুজে দেয়। আর আল্লাহ পরিবেষ্টন করে রেখেছেন কাফেরদের।
20. يَكَادُ الْبَرْقُ يَخْطَفُ أَبْصَارَهُمْ ۖ كُلَّمَا أَضَاءَ لَهُم مَّشَوْا فِيهِ وَإِذَا أَظْلَمَ عَلَيْهِمْ قَامُوا ۚ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَذَهَبَ بِسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আয়াত-২০: বিদ্যুতের চমক এমন যে, মনে হয় যেন তাদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়ে যায়, যখনই বিদ্যু তাদের জন্য আলো বিচ্ছুরিত করে তখনই তারা সে আলোতে চলতে থাকে, আবার যখন অন্ধকার তাদের ঢেকে ফেলে তখন তারা থমকে দাড়ায়। আর যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেন, তাহলে ছিনিয়ে নিতেন তাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি। অবশ্যই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
21. يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
আয়াত-২১: হে মানুষ! তোমর ইবাদত কুর তোমাদের পালনকর্তার যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকেও। আশা করা যায় তোমরা মোত্তাকী হতে পারবে।
22. الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ فِرَاشًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَّكُمْ ۖ فَلَا تَجْعَلُوا لِلَّهِ أَندَادًا وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
আয়াত-২২: তিনি সেই পালনকর্তা যিনি তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদস্বরূপ করেছেন এবং আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তা দিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেন। অতএব, তোমরা জেনে-বুঝে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় কর না।
23. وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُوا شُهَدَاءَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
আয়াত-২৩: আর যদি তোমরা সন্দেহ পোষণ কর তাতে যা আমি নাযিল করেছি আমার বান্দার প্রতি, তাহলে তোমরা এর মত একটি সূরা নিয়ে এস। ডেকে নাও তোমাদের সাহায্যকারীদেরও এক আল্লাহ ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।
24. فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ ۖ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ
আয়াত-২৪: আর যদি তোমরা তা করতে না পার এবং কখনও তা করতে পারবে না, তাহলে সে আগুনকে ভয় কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে কাফেরদের জন্য।
25. وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِن ثَمَرَةٍ رِّزْقًا ۙ قَالُوا هَـٰذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِن قَبْلُ ۖ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا ۖ وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ ۖ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
আয়াত-২৫: শুভ সংবাদ দিন তাদের যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে যে, তাদের জন্য রয়েছে এমন বেহেশত̖ যার পাদদেশে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ। যখনই তাদের সেখানে কোন ফল খেতে দেয়া হবে তখনই তারা বলবে, এ তো অবিকল তা-ই যা ইতিপূর্বে আমাদের দেয়া হত। বস্তুত সাদৃশ্যপূর্ণ ফলই তাদের দেয়া হবে এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে পবিত্র সঙ্গিনী। তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে।